অবাক কাণ্ড! বাবা তিন-তিনবার ব্যালন ডি’ওর জিতলেন৷ অথচ ছেলের মনে রাজত্ব করছেন অন্য কেউ! কে তিনি? কে-ইবা মনের দখল নিলেন? প্রথমজন, লিও মেসি৷ দ্বিতীয়, জুনিয়র রোনাল্ডো৷
দুজনের দেখা হয়েছিল জুরিখে৷ পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে৷ ছেলেকে নিয়ে মঞ্চে উঠেছিলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো৷ কিন্তু বাবা যতই সেরা হোক, জুনিয়র রোনাল্ডো মঞ্চে উঠে প্রথম ‘হ্যালো’ বলেছে মেসিকেই৷ পাল্টা হ্যালো বলেন মেসিও৷ সেই সঙ্গে জানতে চান, ‘কেমন আছো?’
কিন্তু জুরিখের সেই আলো ঝলমল রাতে ছেলেকে নিয়ে মেসির সঙ্গে আরও কিছুক্ষণ গল্প করার ফুরসুৎ পাননি রোনাল্ডো৷ কারণ, কয়েক হাজার প্রশ্ন অপেক্ষায় ছিল তার৷
সেই সব প্রশ্নের ভিড়েই যেমন জানতে চাওয়া হলো, প্রথমবার যখন ব্যালন ডি’ওর আসরে এসেছিলেন, কেমন লেগেছিল? ভেবেছিলেন কি এত ঘনঘন এই পুরস্কারের দাবিদার হবেন?
রোনাল্ডোর জবাব, ‘না, একেবারেই নয়৷ বড্ড দ্রুত ঘটছে সব কিছু৷ নিজের জায়গা, মান ধরে রাখাটাই সবচেয়ে কঠিন কাজ৷ টানা আট বছর বিশ্ব একাদশে আছি, প্রথম তিনে বারবার জায়গা করে নিচ্ছি– এগুলো গর্বের ব্যাপার৷ সবাই এটা পারে না৷ মেসি আর আমি সেটা পেরেছি৷ কঠোর পরিশ্রম করে চলেছি, এতগুলো বছর ধরে৷ এই ধরনের স্বীকৃতি বলে দেয়, ঠিক পথে এগোচ্ছি৷ কেরিয়ারের প্রতিটা মুহূর্ত উপভোগ করছি৷’
বয়স কম, তাও এতটা সফল৷ এই মুহূর্তে খেলা ছেড়ে দিলেও, ফুটবল ইতিহাসে নাম লেখা থাকবে৷ কেমন লাগে এসব ভাবতে? রোনাল্ডোর কথায়, ‘কথাটা একদম সত্যি৷ তবে আমি এসব নিয়ে ভাবি না৷ আমার বয়স ২৯৷ কিন্তু মনে মনে ভাবি ২৫৷ মনে হয়, আরও ছয়, সাত বছর সর্বোচ্চ পর্যায়ে খেলব৷’
গত বছর কোনো কিছু নিয়ে আক্ষেপ আছে? রোনাল্ডো বলেন, ‘না, আক্ষেপ নেই৷ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতার পরই চোটটা লেগেছিল৷ দু’সপ্তাহ ট্রেনিং করতে পারিনি৷ যন্ত্রণায়৷ চাইলেই, কোচকে বলতে পারতাম, আমি ওয়ার্ল্ড কাপে খেলব না৷ ওই সময়টা ছুটি কাটাতে পারতাম৷ তা হলে, আমাকে নিয়ে এত সমালোচনা হত না৷ কিন্তু অজুহাত দিতে চাইনি৷ তবে এটাও সত্যি যে, আমি একশো শতাংশ সুস্হ ছিলাম না৷ তবু চেষ্টায় ক্রুটি রাখিনি৷ পরিশ্রম করে গিয়েছি৷ আর সেটা করেছি বলেই, আমি গত বছরের সেরা ফুটবলার৷’
কথা ফুরিয়ে আসার আগে, আবার এলো প্রশ্ন৷ ছেলেকে নিয়ে৷ জুনিয়র রোনাল্ডো কি বুঝতে পারে, তার বাবা কি করে দেখাচ্ছে? সি আর সেভেন জানান, ‘না, না এখন বোঝে না৷ ও এখন ছোটই৷ সাধারণ বিষয়ে কথা বলে৷ অন্য দল, অন্য দলের প্লেয়ারদের পছন্দ করে৷ তবে ও ফুটবল খেলতে শুরু করেছে৷ বুঝতে পারি, ও ফুটবল ভালোবাসে৷ প্রথমে ওর গাড়ির নেশা ছিল৷ এখন সেটা ফুটবল৷ আর এটা দেখে, দারুণ লাগে৷’