করোনাভাইরাস : মহা সঙ্কটে দক্ষিণ কোরিয়া-ইতালি-ইরান

SHARE

করোনাভাইরাসের আতঙ্কে রয়েছে চীনসহ পুরো বিশ্ব। দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৬৩ জনে। দেশটিতে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত সাতজনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। গত দুই দিনে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ৩২৭ জনেরও বেশি মানুষ। এদিকে, করোনা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে ইতালি। করোনাভাইরাসে ইতালিতে রবিবার পর্যন্ত তিনজনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। আক্রান্ত হয়েছেন ১৫৭ জন। অন্যদিকে, ইরানে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৩ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মারা গেছেন ৮ জন।

করোনাভাইরাস (সিওভিআইডি-নাইনটিন) এ মাত্র কয়েকদিনের ভেতরে চীনের বাইরে দক্ষিণ কোরিয়ার দেগু, ইরানের কোম এবং ইতালির মিলান ও ভেনিস সংলগ্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ একটা আন্তর্জাতিক চেহারা নিচ্ছে। আর এ কারণে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা। সংস্থাটি বলছে, চীনের সাথে কোন স্পষ্ট যোগাযোগ নেই এমন সব জায়গায় কিভাবে করোনাভাইরাস ছড়াচ্ছে-তা নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন।

ইতালির মিলান এবং ভেনিস শহরের কাছে দুটি উত্তরাঞ্চলীয় এলাকাকে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হটস্পট বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। ভেনেতো এবং লোম্বার্ডি অঞ্চলের একাধিক শহরে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, আগামী দু’সপ্তাহ কর্তৃপক্ষের বিশেষ অনুমতি ছাড়া কেউ সেখানে ঢুকতে বা বেরুতে পারবে না। এর আওতায় পড়বে অন্তত ৫০ হাজার লোক।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের জন্য এই প্রথম একটি ইউরোপীয় দেশে গোটা শহর অবরুদ্ধ করার ঘটনা ঘটল।

ইতালির প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, চলাচলের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা অন্তত ১৪ দিন বহাল থাকবে এবং তা কার্যকর করতে পুলিশ এবং প্রয়োজনে সেনাবাহিনীকেও ব্যবহার করা হবে।

বন্ধ করে দেয়া এলাকার বাইরেও বহু স্কুল ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে, শীর্ষস্থানীয় ফুটবল লিগ সিরি-আ’র কয়েকটি ম্যাচসহ বেশ কিছু খেলা বাতিল করা হয়েছে। মিলান শহরের দক্ষিণ-পশ্চিমে একটি অঞ্চলে ভাইরাস সংক্রমণের কারণে লোকজনকে ঘরে থাকতে বলা হয়েছে।

করোনাভাইরাস সবচেয়ে দ্রুত সংক্রমিত হচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। দেশটির কর্তৃপক্ষ বলছে, শনিবার পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে যারা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের অধিকাংশই শিনচিওঞ্জি নামে একটি খ্রিষ্টান গোষ্ঠীর সদস্য। বলা হচ্ছে দেগু এবং চোংডোতে এই ধর্মীয় গোষ্ঠীর কয়েকশ সদস্য ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গের কথা জানানোর পরই তাদের অনেকের শরীরেই প্রথম করোনাভাইরাস পাওয়া যায়।

জানা গেছে, চোংডোতে দিন পনের আগে শিনচিওঞ্জি সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতার ভাইয়ের মৃত্যুর শেষকৃত্যে কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেন। তারপরই ওই সম্প্রদায়ের পাঁচশরও বেশি অনুসারী ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার নানা উপসর্গের কথা জানায়। সরকার এই গোষ্ঠীর নয় হাজারেরও বেশি সদস্যকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ঘরের মধ্যে থাকার নির্দেশ দিয়েছে।