উইঘুর মুসলিম নির্যাতন : চীন সরকারের গোপন নথি ফাঁস

SHARE

চীন সরকারের বিপুল পরিমাণ গোপন নথি ফাঁস হয়েছে। দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় জিনজিয়াং প্রদেশের উইঘুর সম্প্রদায়ের মুসলিমদের দমনে প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংয়ের নির্দেশনাসহ কর্মকর্তাদের আচরণের বিভিন্ন তথ্য রয়েছে তাতে। নথিতে আছে প্রেসিডেন্টশি চিনপিংয়ের অপ্রকাশিত বক্তব্য, বিভিন্ন নির্দেশনা, উইঘুরদের ওপর নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণমূলক আচরণের বিবরণ।

বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা এবং বিশেষজ্ঞদের হিসেবে উইঘুর এবং অন্য সম্প্রদায় মিলে চীনের পশ্চিমাঞ্চলের ক্যাম্পগুলো প্রায় ১০ লাখ মুসলমান রয়েছেন। তাদের ওপর দেশটির সরকারের মনোভাব কেমন, নিরাপত্তা বাহিনীকে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে-সেটি বেরিয়ে এসেছে সদ্য ফাঁস হওয়া গোপন নথি থেকে। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক টাইমস এই নিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। টাইমস বলছে, দেশটির একজন রাজনৈতিক সদস্য এইসব নথি ফাঁস করেছেন। তার আশা এর ফলে মুসলমানদের অবরুদ্ধ করে রাখার জন্য শি চিনপিংসহ চীনের নেতৃবৃন্দ নিন্দা থেকে আর রেহাই পাবে না।

নথি অনুযায়ী, ২০১৪ সালে কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দেওয়া এক বক্তৃতায় শি চিনপিং ‘সন্ত্রাসী, অনুপ্রবেশকারী ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের’ স্বৈরতান্ত্রিক সব উপায়ে দমনের নির্দেশ দেন। বলেন তাদের প্রতি কোনো ধরনের ক্ষমা যাতে প্রদর্শন করা না হয়। দক্ষিণ পশ্চিম চীনের একটি রেল স্টেশনে উইঘুরদের হামলায় ৩১ জনের মৃত্যুর পর এই বক্তব্য দিয়েছিলেন শি। ২০১৬ সালে জিনজিয়াং প্রদেশের দলীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পান চেন কুয়ানগুয়ো। তিনি শির নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেন। তার সময়ই বাড়তে থাকে মুসলিম বন্দি ক্যাম্পের সংখ্যা।

নথি অনুযায়ী, পরিবারের নিখোঁজ সদস্যদের খুঁজতে আসলে ছাত্রদের কী বলতে হবে তার একটি নির্দেশনাও ছিলে। তাদের বলা হতো নিখোঁজ ব্যক্তি উগ্রবাদী চিন্তার ভাইরাসে আক্রান্ত। ছোট এই রোগ ভয়াবহ আকার নেওয়ার আগেই তার চিকিৎসা করা প্রয়োজন। কোনো কর্মকর্তা নির্দেশ অমান্য করলে তাকে পড়তে হয় শাস্তির মুখে। তেমনই একজন ওয়াং ইয়ংসি। জিনজিয়াংয়ের বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে তিনি সাত হাজার বন্দিকে নিজ উদ্যোগে মুক্ত করে দেন। ২০১৭ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলে।

তবে এই নথির বিষয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। চীনে উইঘুরদের ওপর চালানো নির্যাতনের অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে দেশটির সরকার। উইঘুরদের আটকে রাখা নয়, ক্যাম্পগুলোতে বৃত্তিমূলক শিক্ষা দেওয়া হয় বলে দাবি তাদের।

সূত্র: ডয়েচে ভেলে।