প্রেমিকার ওড়নায় ফাঁস দিয়ে তরুণের মৃত্যু ঘিরে রহস্য

SHARE

প্রেমিকার ওড়নায় ফাঁস দিয়ে মারা গেছেন এক তরুণ। গতকাল রবিবার প্রেমিকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। এ ঘটনা আত্মহত্যা নাকি পরিকল্পিত হত্যা তার তদন্ত চলছে। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে।

ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রবিবার সকাল থেকেই উত্তেজনা ছড়ায় গোটা এলাকায়। পরিকল্পিতভাবে প্রেমিককে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন করা হয়েছে। এই দাবিতেই প্রেমিকাকে বাড়ি থেকে তুলে প্রেমিকের পাড়ায় এনে হেনস্তা করা হয়। পরে থানার পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে। তরুণীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।

জানা গেছে, সিউড়ি শহরের দত্তপুকুর পাড়ার রাজমিস্ত্রী বিশ্বজিৎ কাহারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল পাশের গ্রাম কুলেড়া গ্রামের নীলম মুখোপাধ্যায়ের। সেই গ্রামে কাজ করতে গিয়েই দুজনের আলাপ ও সম্পর্ক গড়ে উঠে। কিন্তু ছেলের প্রেমিকাকে পছন্দ করতেন না মা সবিতা কাহার। তাই শনিবার বকাঝকা করেছিলেন নীলমকে।

রবিবার বাড়ির কাছে গোঁসাইতলায় বিশ্বজিতের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করল পরিবার। তাঁর কাছ থেকে প্রেমিকার সাইকেল, ওড়না এবং বেশকয়েক জোড়া চটি ও একটি গোলাপি রঙের নারীদের ব্যবহৃত হাতব্যাগ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

বিশ্বজিতের পরিবার থেকে প্রতিবেশী- প্রত্যেকেরই দাবি, নীলমের পরিবার ভাড়াটে খুনি দিয়ে তাঁদের ছেলেকে খুন করিয়েছে। প্রতিবাদে তাঁরা নীলমকে বাড়ি থেকে তুলে এনে গণপ্রহার দেয়। পরে সিউড়ি থানার পুলিশ এসে নীলমকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

এদিকে, বিশ্বজিতের মা সবিতা কাহার জানান, শনিবার তিনি নীলমকে ফোনে গালাগালি করেন। সকালে ছেলে বাড়ি এসেছিল। তাঁর সঙ্গেও দু-চার কথাও হয়। কিন্তু রাতে আর ছেলে বাড়ি ফেরেননি। শুধু ফোনে মায়ের কাছে জানতে চান, কেন তিনি নীলমকে বকাঝকা করেছেন। সেই সঙ্গে মা’কে বলেন, আর এমনটা করলে আমার মরা মুখ দেখবে। পরের দিনই সেই হুমকিই সত্যি হলো।

সবিতাদেবীর দাবি, তাঁর ছেলেকে খুন করা হয়েছে। নীলম অবশ্য জানান, শনিবার রাতে তাঁর সাইকেল নিয়ে তাঁদের বাড়ি থেকে চলে যান বিশ্বজিৎ। তারপর নীলম আর কিছু জানেন না।

নীলমের বাবা-মা, স্বপন ও আশা মুখোপাধ্যায় জানান, তাঁদের মেয়ের সঙ্গে বিশ্বজিতের প্রেমের সম্পর্ক তারা জানতেন না। তবে আজ সকালে মেয়েকে ঘুম থেকে তুলে টানতে টানতে নিয়ে যায় অনেকে।

তাঁরা বলছেন,পুলিশ তো তদন্ত করছে। মেয়ে যদি অপরাধী হয়, তবে ওর যেন শাস্তি হয়।

এটাকে অস্বাভাবিক মৃত্যু ধরেই তদন্ত শুরু করেছে থানা। তবে বিশ্বজিতের মৃতদেহের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া কয়েক জোড়া চটির মধ্যে একটি নারীদের। সেটাই ভাবাচ্ছে পুলিশকে।

থানা সূত্র বলছে, বিশ্বজিৎ আত্মহত্যা করেছেন না কি তাঁকে খুন করা হয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্টের ভিত্তিতেই তা খতিয়ে দেখা হবে।