১৬ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ: লোকমান ও সেলিমের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

SHARE

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ঢাকা মোহামেডান ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক লোকমান হোসেন ভূঁইয়া ও অনলাইন ক্যাসিনো ব্যবসায়ী সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদকের সহকারী পরিচালক সাইফুল ইসলাম লোকমানের বিরুদ্ধে এবং উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে মামলা করেন। লোকমানের বিরুদ্ধে ৪ কোটি ৩৪ লাখ ১৯ হাজার ৬৪৮ টাকা এবং সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে ১২ কোটি ২৭ লাখ ৯৫ হাজার ৭৫৪ টাকা অবৈধভাবে অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

লোকমানের বিরুদ্ধে করা মামলার এজাহারে বলা হয়, ৬৪ লাখ ২০ হাজার টাকার স্থাবর সম্পত্তির হিসাব আয়কর নথিতে দেখালেও অনুসন্ধানে তার ‘সুনির্দিষ্ট কোনো বৈধ আয়ের উৎস’ পাওয়া যায়নি।

এতে বলা হয়, আসামি লোকমান হোসেন ভূঁইয়া তার আয়কর নথিতে ৭৩ লাখ ৭০ হাজার ৬৬৪ টাকার অস্থাবর সম্পদ ছাড়াও নিজ নামে ও তার স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে যৌথভাবে আরও ২ কোটি ৯৬ লাখ ২৮ হাজার ৯৮৪ টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। কিন্তু তা তাদের আয়কর নথিতে প্রদর্শন করেননি।

সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে করা মামলার এজাহারে বলা হয়, বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসা ও অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে ১২ কোটি ২৭ লাখ ৯৫ হাজার ৭৫৪ টাকার অস্থাবর ও স্থাবর সম্পদ জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণভাবে অর্জন করেছেন, যা দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

অনুসন্ধানকালে বিভিন্ন গোপন সূত্র থেকে জানা গেছে, সেলিম প্রধান তার অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থ দ্বারা দেশের বিভিন্ন স্থানে নামে-বেনামে একাধিক প্লট, বাড়ি ও ফ্ল্যাট অর্জন করাসহ দেশে-বিদেশে নামে-বেনামে শত কোটি টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন।

১৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বিভিন্ন ক্লাবে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হয়। এর ধারাবাহিকতায় মতিঝিল এলাকায় মোহামেডান ক্লাবে অভিযান চালায় র‌্যাব।

২৬ সেপ্টেম্বর তেজগাঁওয়ের মনিপুরীপাড়ার বাসা থেকে লোকমানকে কয়েক বোতল মদসহ গ্রেফতার করে র‌্যাব। তার বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে লোকমান জানিয়েছিলেন, এইচএসবিসি ব্যাংকে লোকমানের এক কোটি টাকার এফডিআর আছে।

অস্ট্রেলিয়ার এএনজেড ও কমনওয়েলথ ব্যাংক ছাড়াও দেশের কয়েকটি ব্যাংকে তার গচ্ছিত টাকার পরিমাণ প্রায় ৪১ কোটি টাকা। তবে প্রাথমিক অনুসন্ধানে তার ৪ কোটি ৩৪ লাখ ১৯ হাজার ৬৪৮ টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য পায় দুদক। তবে তদন্তে এই অংশ কয়েক কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে জানান দুদকের কর্মকর্তারা।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর দুপুরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সেলিম প্রধানকে আটক করে র‌্যাব-১। এরপর তার গুলশান, বনানীর বাসা ও অফিসে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ২৯ লাখ টাকা, বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ ও বিভিন্ন দেশের মুদ্রা জব্দ করা হয়।

হরিণের চামড়া উদ্ধারের ঘটনায় ওইদিনই সেলিম প্রধানকে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। পরদিন গুলশান থানায় তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ও মুদ্রাপাচার প্রতিরোধ আইনে দুটি মামলা করে র‌্যাব।

সেলিম প্রধান ‘প্রধান গ্রুপ’ নামে একটি ব্যবসায়ী গ্রুপের চেয়ারম্যান। এই গ্রুপের অধীনে পি২৪ গেমিং নামের একটি কোম্পানি আছে, যারা রীতিমতো ওয়েবসাইটে ঘোষণা দিয়ে ক্যাসিনো ও অনলাইন ক্যাসিনোর কারবার চালিয়ে আসছিল।