বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ইতিহাস ‘বিকৃত’ ও ‘তথ্য সন্ত্রাস’ চালাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। এর মাধ্যমে তারেক রহমান মুক্তিযুদ্ধকে ধর্ষণ করছে বলেও মন্তব্য করেন কামরুল।
গত ১৫ ডিসেম্বর লন্ডনে এক অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘রাজাকার’ আখ্যায়িত করে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন তারেক রহমান। সেখানে তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান যদি ৭ মার্চ সেনাবাহিনীর বাঙালি অফিসারদের নিয়ে যুদ্ধ শুরু করতেন, তাহলে যে ‘সামান্যসংখ্যক’ পাকিস্তানি সৈন্য তখন ছিল তাদের সহজেই পরাজিত করা যেত, প্রাণহানি ও অর্থনৈতিক ক্ষতি ‘অনেক কমানো’ যেত।”
তারেক রহমানের এই কথার পরিপ্রেক্ষিতেই খাদ্যমন্ত্রী বলেন, “একাত্তরের পাক-হানাদার ও ঘতক দালালেরা যেভাবে আমাদের মা-বোনদের ইজ্জত লুট-ধর্ষণ করেছিল। ঠিক তেমনিভাবে স্বাধীনতার ৪৩ বছর পর এসে মুক্তিযুদ্ধকে ধর্ষণ করছে তিনি (তারেক জিয়া)। ইতিহাস বিকৃত ও তথ্য সন্ত্রাস চালাচ্ছেন ‘তারেক’।”
ইতিমধ্যে ওই বক্তব্যের কারণে দায়ের করা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি হয়েছে।
রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলানায়তনে বাংলাদেশ কৃষক লীগ আয়োজিত বিজয় দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে খাদ্যমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
এসময় বিএনপির আন্দোলনের সমালোচনা করে কামরুল বলেন, “তারা লাদেন মার্কা, ভিডিও-অডিও মার্কা আন্দোলন করছে, তাদের এই আন্দোলনে জনগণ সাড়া দেবে না।”
এজন্য বিএনপিকে হুঁশিয়ার করে কামরুল বলেন, “এই আন্দোলনে বাংলার জনগণ সাড়া দেবে না। তবে ২০১৩ সালের মতো দেশে সন্ত্রাস চালিয়ে মানুষ মারার আন্দোলন করলে পরিণতি হবে ভয়াবহ।”
রাজাকার আল-বদরদের সংমিশ্রণে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমামান বিএনপিকে জন্ম দিয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন কামরুল। “তিনি বলেন, একাত্তরের ঘাতকদের মন্ত্রী বানিয়ে বাংলাদেশের পতাকাকে কলুষিত করেছেন। তার (জিয়া) মর্মান্তিক মৃত্যুর পর, ঠিক একই পথেই হাঁটছে তার স্ত্রী খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক। তাদের উৎস একই। তারা (জিয়া ও তার স্ত্রী-ছেলে) মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ।”
এসময় প্রধানমন্ত্রীকে বিরুদ্ধে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বিভিন্ন কথার সমালোচনা করেন সরকারের এই মন্ত্রী। তিনি বলেন, “খালেদা জিয়ার চলাফেরায় যে রকম শালীনতা নেই ঠিক তেমনিভাবেই তার কথাবার্তায়ও শালীনতা নেই। সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে তার ‘অশালীন’ কথা বার্তা রাজনৈতিক শিষ্টাচার বিবর্জিত।”
৫ জানুয়ারি নির্বাচন প্রসঙ্গে কামরুল বলেন, “এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে মুক্তিযোদ্ধের স্ব-পক্ষের শক্তির বিজয় হয়েছে। ব্যালট বিপ্লব হয়েছে।”
পরবর্তী নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে আনার আর কোনো সুযোগ নেই। যে ব্যবস্থা বাতিল হয়েছে তা আর ফিরে আসবে না এবং দেশে আর কোনো মধ্যবর্তী নির্বাচন হবে না।”
তবে বিএনপিকে আগামী ২০১৯ সালের নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতেও বলেন খাদ্যমন্ত্রী।
আর নির্বাচনের জন্য বিএনপির সঙ্গে সংলাপ প্রসঙ্গে তিনি অনীহা প্রকাশ করেন। কামরুল বলেন, “যেহেতু বিএনপি সংসদে প্রতিনিধিত্ব করে না তাই তাদের সঙ্গে আলোচনার কোনো প্রশ্নই আসে না।”
সভায় বাংলাদেশ কৃষক লীগ ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি মাকসুদুল ইসলামের সভাপতিত্বে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মোতাহের হোসেন মোল্লা, সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুর রহমান বক্তব্য দেন।