বিয়ের জন্য হবু বরকে নিয়ে তুরস্কে নুসরাত

SHARE

১৯ জুন তুরস্কের বোদরুম শহরে পাম অ্যাভিনিউর ইডেন ইম্পেরিয়ালে হবে নুসরাত জাহান আর নিখিল জৈনের বিয়ে। শোনা যাচ্ছে, তার আগে গতকাল শনিবার রাতে হবু বর নিখিল জৈনকে সঙ্গে নিয়ে নাকি ইস্তাম্বুলে উড়ে গেছেন নুসরাত জাহান। জানা গেছে, তাঁদের দুজনের পরিবার, বন্ধু, সহকর্মী আর মেকআপ টিমের মোট ৩০ জন যাচ্ছেন সেখানে।
ভারতের বাংলা ছবির জনপ্রিয় তারকা ও পশ্চিমবঙ্গ থেকে লোকসভার নবনির্বাচিত সদস্য নুসরাত জাহানের বিয়ের তারিখ এরই মধ্যে জানা গেছে। ১৯ জুন সন্ধ্যায় হবে বিয়ের মূল অনুষ্ঠান। আর এর আগে ১৭ জুন ইয়ট পার্টি ও ১৮ জুন হবে মেহেদি ও সংগীতের অনুষ্ঠান। বিয়ের দিন সকালে হবে গায়েহলুদের অনুষ্ঠান। ২০ জুন রাতে থাকছে ‘হোয়াইট ওয়েডিং’ পার্টি। কলকাতায় ফিরে আসার পর আইন অনুযায়ী বিয়ে হবে তাঁদের। তখন তাঁদের বিয়ে রেজিস্ট্রি করা হবে।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নুসরাত জাহানের পাম অ্যাভিনিউয়ের বাসায় এক পার্টির আয়োজন করা হয়। সেই অনুষ্ঠানে যাঁদের আমন্ত্রণ জানানো হয়, সবাই ভেবেছিলেন সেদিন হয়তো হবু কনের গায়েহলুদের অনুষ্ঠান হবে। কিন্তু নুসরাত জাহানের বাবা মহম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘সেদিন ছিল নুসরাত আর নিখিলের প্রাক-বিবাহ অনুষ্ঠান। আত্মীয়স্বজন আর বন্ধুদের সবাইকে যেহেতু বোদরুমে নিয়ে যাওয়া সম্ভব না, তাই বিয়ের আগে হবু দম্পতিকে আশীর্বাদের জন্য সবাই এসেছিলেন।’
গতকাল ইস্তাম্বুলে যাওয়ার আগে নুসরাত জাহান ইনস্টাগ্রামে বাবার সঙ্গে গায়েহলুদের একটি ছবি পোস্ট করেন। ‘ফাদারস ডে’ উপলক্ষে ছবিটি তিনি পোস্ট করেছেন। তাতে দেখা গেছে, গায়েহলুদের আসরে বাবাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেললেন নুসরাত জাহান। ছবির ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, ‘তুমি আমাকে মানবিকতা শিখিয়েছ…আমার খুশির জন্য সবকিছু করেছ…আমি কখনো তোমাকে এবং তোমার আদর্শকে ছোট করব না…তোমাকে খুব ভালোবাসি বাবা…সব মেয়ে যেন তোমার মতো বাবা পায়… হ্যাপি ফাদার্স ডে…!’
নুসরাত জাহানের বাসার সেই অনুষ্ঠানে টলিউডের সহকর্মীদের মধ্যে শুধু ভারতের বাংলা ছবির অন্যতম জনপ্রিয় নায়িকা ও পশ্চিমবঙ্গ থেকে লোকসভার নবনির্বাচিত সদস্য মিমি চক্রবর্তীকে দেখা গেছে। তিনি সেই অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন হলুদ শাড়ি পরে। এদিকে গত বুধবার দুপুরে মিমির কসবার ফ্ল্যাটে নুসরাত জাহানের আইবুড়ো ভাতের আয়োজন করা হয়। একেবারেই ঘরোয়া অনুষ্ঠান। খাবারের তালিকায় ছিল লুচি, ছোলার ডাল, নানা রকম ভাজা, বাসন্তী পোলাও, চিংড়ি, ইলিশ, চিকেন এবং আমের কাস্টার্ড। এই সবই নাকি নুসরাতের পছন্দের খাবার। আর খাবারগুলো মিমি নিজেই রান্না করেছেন। শুধু চিকেনের আইটেম রান্না করেছেন তাঁর মা। প্রিয় বন্ধুর বিয়েতে অংশ নেওয়ার জন্য আজ রোববার রাতে ইস্তাম্বুলে যাচ্ছেন মিমি।
আজ রোববার সকালে নুসরাত জাহান ও নিখিল জৈনের বিবাহোত্তর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্রের ছবি প্রকাশ্যে এসেছে। এই আমন্ত্রণপত্র ডিজাইন করেছেন মুম্বাইয়ের একজন শিল্পী। গোল আকৃতির সেলাই করা উডেন ফ্রেম। তার মাঝে হবু দম্পতির নাম দিয়ে লেখা আমন্ত্রণ বার্তা। ভিন্ন রঙের সুতা দিয়ে সেলাই করা ফুলের মাঝে নিখিল ও নুসরাতের ছবি। তাতে লেখা আছে, তাঁদের বিবাহোত্তর সংবর্ধনা অনুষ্ঠান হবে ৪ জুলাই। সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা। স্থান কলকাতায় আইটিসি রয়্যাল বেঙ্গল।
আগেই জানা গেছে, কলকাতার তরুণ সফল ব্যবসায়ী নিখিল জৈনকে বিয়ে করছেন নুসরাত জাহান। নিখিল জৈন কলকাতার ছেলে। ব্যবসায়ী, তবে চলচ্চিত্রের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই। এমপি বিড়লা ফাউন্ডেশনে পড়াশোনার পর যুক্তরাজ্যের ওয়ারউইক বিশ্ববিদ্যালয়ে ম্যানেজমেন্টের ওপর পড়াশোনা করেছেন। গত বছর পূজার আগে ব্যবসায়ী নিখিল জৈনের শাড়ির ব্র্যান্ডের বিজ্ঞাপনের মুখ হয়েছিলেন নুসরাত জাহান। এই কাজের সূত্রেই তাঁদের পরিচয়। অল্প দিনেই সম্পর্ক গাঢ় হয়। এরপর তাঁরা দুজনে মিলেই বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন।
নুসরাত জাহানের বিয়ের মেকআপের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সায়ন্তন আর হেয়ার স্টাইলের জন্য শর্মিষ্ঠাকে। নুসরাত জাহানের বন্ধু স্টাইলিস্ট স্যান্ডিকে সবকিছু দেখাশোনা করবেন। বিয়েতে সব্যসাচীর ডিজাইন করা লেহেঙ্গা পরবেন নুসরাত জাহান। নিখিল জৈনের পোশাকও ডিজাইন করেছেন সব্যসাচী। বিয়ের অনুষ্ঠানে নুসরাত জাহানের গায়ে থাকবে কিছু পুরোনো পারিবারিক গয়না। বোহিমিয়ান থিমে সাজানো হবে মেহেদি অনুষ্ঠান। সংগীতের জন্য তিনি ইন্দো-ওয়েস্টার্ন পোশাক বেছে নিয়েছেন আর গায়েহলুদে উজ্জ্বল হলুদ রঙের পোশাক পরবেন। হোয়াইট ওয়েডিংয়ের জন্য নুসরাত বেছে নিয়েছেন মিন্ট গ্রিন এবং সাদার মিশেলে পোশাক। অনুষ্ঠানের খাবারের মেন্যুতে থাকবে ভারতীয়, কন্টিনেন্টাল আর তুরস্কের আঞ্চলিক খাবার।
শোনা যাচ্ছে, বিয়ের পর ইউরোপের কোনো জায়গায় মধুচন্দ্রিমায় যাবেন নবদম্পতি। নুসরাত জাহান ও নিখিল জৈন দম্পতি কলকাতায় ফিরবেন ২৫ জুনের আগেই। কারণ ২৫ জুন দিল্লিতে সাংসদ হিসেবে লোকসভার প্রথম অধিবেশনে যোগ দেবেন তিনি।