বিশ্বকাপের শুরুটা কী দুর্দান্ত হলো। এরপর টানা তিন ম্যাচ জয়হীন বাংলাদেশ। মাশরাফি বলছেন, একটি জয় বদলে দিতে পারে সবকিছু
পেশায় ক্রিকেটার। মাঝে মাঝে তাঁদের ‘অভিনয়’ও করতে হয়। দলের স্বার্থেই অনেক সত্য চেপে যেতে হয়। কাল টন্টনে মুশফিকুর রহিম যখন হাতে ব্যথা পেলেন, টিম ম্যানেজমেন্ট চেষ্টা করেছে বিষয়টি নিয়ে বেশি কথা না বলতে। ব্রিস্টলে সাকিব আল হাসানের চোট নিয়েও একই কাজ করতে হয়েছে টিম ম্যানেজমেন্টকে।
নিজেদের আত্মবিশ্বাসে যাতে ধাক্কা না লাগে কিংবা প্রতিপক্ষ মানসিকভাবে চাঙা না হয়ে যায়—দলের স্বার্থেই চোটাঘাতের খবর অনেক সময় চেপে যেতে হয় ম্যানেজমেন্টকে। শুধু চোট কেন, দলের ভেতরে কত নেতিবাচক ঘটনা ঘটে যায়, খেলোয়াড়দের তবুও হাসিমুখে থাকতে হয়। কেউ যেন বুঝতে না পারে দলে কিছু একটা হয়েছে। কিংবা অধিনায়ককে সংবাদমাধ্যমকে এমন অনেক কিছু বলতে হয়, যেটি তাঁর মনের কথা নয়। অধিনায়ক টস জিতে নিতে চেয়েছেন ব্যাটিং। কিন্তু কোচ বলে দিয়েছেন বোলিং আগে করব। পরে দেখা গেল টস জিতে ফিল্ডিং করাটা ছিল চরম ভুল—অধিনায়ক কী বলবেন ম্যাচ শেষে? কোচকে তো আর কাঠগড়ায় তুলতে পারেন না। বাধ্য হয়ে বলতে হবে ভিন্ন কথা।
মাশরাফি বিন মুর্তজা আজ এই অভিনয়ের কথাটাই বললেন। এবং অবশ্যই ইতিবাচক অর্থে। টানা তিন ম্যাচ জয়হীন বাংলাদেশ জয়ের দেখা পেতে শারীরিক ও মনস্তাত্ত্বিকভাবে কতটা আত্মবিশ্বাসী বোঝাতে মাশরাফি এক চরম বাস্তবতাই তুলে ধরলেন, ‘শারীরিকভাবে সবাই ফিট আছে। ছোট খাট সমস্যা তো থাকবেই। তবে আশা করছি এ ম্যাচের জন্য সবাই ঠিকঠাকই আছে। আর মানসিক ব্যাপারটা একেক জনের একক রকম। অনেক সময় খারাপ থাকলেও অভিনয় করতে হয়। ক্রিকেটটা এ রকমই। দলের ভালোর জন্যই অভিনয়টা করতে হয়।’
অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফি চেষ্টার ত্রুটি রাখছেন না। দলের সবাইকে উজ্জীবিত করতে সর্বোচ্চটাই করছেন। মাশরাফি মনে করেন, একটা জয় দৃশ্যটা বদলে দেবে, ‘বিশ্বকাপে ভালো করতে হলে সেটা একজন-দুজনের পক্ষে সম্ভব নয়। এটা শুধু একজন-দুজনের দায়িত্বও নয়। আবার যার খারাপ যাচ্ছে তারও এটা চিন্তা করা উচিত নয় যে বিশ্বকাপে তাকে একাই দলকে ভালো জায়গায় নিয়ে যেতে হবে। বিশ্বকাপজয়ী দলেও দেখবেন সবাই এক রকম খেলতে পারে না। তবে যত দূর সম্ভব দলের কীসে ভালো হবে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। একজন অধিনায়ক হিসেবে আমি সেটা চেষ্টা করেছি। দলের সবাই ঠিক আছে। একটা জয় হয়তো দলকে আরও অনুপ্রাণিত করবে।’
সেই জয়টা টন্টনেই কি পাবে বাংলাদেশ?