‘মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়তে চেয়েছিলাম, কিন্তু দল মানল না’

SHARE

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ফল বৃহস্পতিবার ঘোষণা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরই টুইট করে তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জি জানিয়েছিলেন পূর্ণাঙ্গ পর্যালোচনা করার পর যা বলার সেটা বলবেন।

কিছুক্ষণ আগেই শেষ হয়েছে সেই পর্যালোচনা বৈঠক। নিজের কালীঘাটের বাড়িতেই ডাকা হয়েছিল সব জেলার দলীয় সভাপতি এবং পর্যবেক্ষকদের। সেখানে ছিলেন জোড়াফুলে জেতা ২২ সাংসদের পাশাপাশি পরাজিত প্রার্থীরাও।

বিজেপির কাছে তৃণমূলকে কেন এত বেশি আসন খোয়াতে হলো, কোথায় কী ত্রুটি হয়েছিল এবং এই ক্ষয় মেরামত হবে কীভাবে, সেগুলো নিয়েই এই বৈঠকে করা হয় বলে দলীয় সূত্রে খবর পাওয়া গেছে।

ফলপ্রকাশের ২৪ ঘণ্টা পর শুক্রবার আরেক টুই তিনি লেখেন, সাম্প্রদায়িকতার রঙ আমি বিশ্বাস করি না। …যারা বিশ্বাস করেন সহনশীলতায়/ আসুন জাগরিত করুন একসাথে আসুন সবাই।

তার পর আবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন তিনি। মমতা বলেন, মানুষের কাজ একটু বেশি করে ফেলেছিলাম মনে হচ্ছে। সবাই দু’টাকা করে চাল পেয়েছে, চিকিৎসায় টাকা দিতে হচ্ছে না। লোডশেডিং নেই। চাষের পানি তোলা যাচ্ছে। সরকারি কাজ আমি বেশি করে ফেলেছি। এখন থেকে দলকে বেশি সময় দেব। রেলমন্ত্রীর পদ ছাড়তে আমার এক মিনিট লেগেছিল। চেয়ার আমার কাছে কিচ্ছু নয়। আমার চেয়ারকে প্রয়োজন নেই। চেয়ারের আমাকে প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সেই বৈঠকে সরকারি কর্মচারি ইউনিয়নের দায়িত্ব দেওয়া হয় শুভেন্দু অধিকারীকে। ইউনাইটেড ইন্ডিয়া নিয়ে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে উদ্যোগের অভাব ছিল। আমি তো তাদের সাহায্যই করতে চেয়েছিলাম বলে মন্তব্য করেন মমতা।

তিনি আরো বলেন, যাকে দিয়ে অন্যায়ের তদন্ত করাবো, তাকেই সরিয়ে নিজের লোক বসিয়ে দিয়েছিল। আমরা আসার আগে রাজনৈতিক হিংসায় এক নম্বরে ছিল পশ্চিমবঙ্গ। এখন তা নয়। অথচ আমাদের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা চালানো হচ্ছে। তৃণমূলের যারা বিজেপির থেকে টাকা নিয়ে বিজেপির হয়ে কাজ করেছে, তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিয়েছি।

তিনি প্রশ্ন তোলেন, প্রশাসনের দখল নিতে এত ক্ষুধার্ত কেন বিজেপি? সংবাদ মাধ্যমও বিজেপির হয়ে কাজ করেছে। আমি এখনো বিশ্বাস করি, ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াইতে নেতৃত্ব দেবে পশ্চিমবঙ্গ। মানুষ তাদের বিশ্বাস করবে না। আমি ভবিষ্যৎবাণী করছি না। কিন্তু মানুষের তাদের আসলটা বুঝতে একটু সময় লাগবে।

তিনি আরো বলেন, নির্বাচন কমিশনই এই নির্বাচনের ‘ম্যান অব দ্য ম্যাচ’। ‘ওপেন গেম’ খেলেছে তারা। গণতন্ত্র টাকার কাছে বিকিয়ে গেলে সেই গণতন্ত্র বিপর্যস্ত হয়ে যায়। এ রকম আগে কখনো হয়নি।

তিনি আরো বলেন, আমি ইফতারে যাচ্ছি। একশো বার যাব। যে গরু দুধ দেয়, তার লাথি খাওয়া ভালো। তৃণমূলের দু’শ পার্টি অফিস দখল করে নেওয়া হয়েছে। ধরে ধরে মুসলিমদের মারা হয়েছে। সব পার্টি অফিস ফেরত নিতে টার্গেট দিয়ে দিয়েছি।

মমতা আরো বলেন, আজকের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী পদ ছাড়তে চেয়েছিলাম। শুধু দলের প্রধান হিসেবে কাজ চালাব বলেছিলাম, কিন্তু দল মানল না।