ভারতের আসাম রাজ্যে সৃষ্টি হয়েছে এক অনন্য নজির। সেখানে কারফিউর মধ্যেই সম্প্রীতির দারুণ উদাহরণ গড়েছেন মুসলিম তরুণ মকবুল হুসেন। পেশায় অটোচালক এই তরুণ নন্দিতা দাস নামের এক নারীকে কারফিউ চলাকালীন অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে গেছেন।
সম্প্রতি আসামের একটি মসজিদে মুসল্লিরা নামাজ পড়ার সময় পাথর ছোড়া হয়। এ ঘটনায় উত্তাল আসামে একজন নিহত হয়েছে। এতে আহত হয়েছে ১৫ জন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কারফিউ জারি করেছে প্রশাসন।
এ অবস্থাতেই রবিবার প্রসব বেদনা ওঠে নন্দিতা দাস নামের এক নারীর। কারফিউ থাকায় কোনো যানবাহন বা অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস ছিল না। সাহায্যের জন্য ফোন করা হয়, তবে কেউ সাহস করে এগিয়ে আসেননি।
এদিকে, প্রসব যন্ত্রণায় কাতর নন্দিতা দু:শ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। অন্যদিতে তার স্বামী রুবন চেষ্টা করেও কারোর কাছে সাহায্য পাননি। গ্রাম থেকে শহরের হাসপাতালটির দূরত্ব প্রায় ১২ কিমি। তাই সকলেই সমস্যাটি এড়িয়ে গেছেন। এ অবস্থায় দেবদূতের মতো পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন প্রতিবেশী মকবুল হুসেন। একটি অটো রিক্সা ডেকে দম্পতিকে নিয়ে হাসপাতালের দিকে রওনা হন তিনি।
মকবুল বলেছেন, সে সময় ফাঁকা রাস্তা ছিল। অটোচালককে যতটা সম্ভব দ্রুত যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলাম। আমার ভয় হচ্ছিল, হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেরি না হয়ে যায়। তবে এই পরিস্থিতিতে তাদের চিন্তা করতে বারণ করেছিলাম।
জানা গেছে, হাসপাতালে একটি সুস্থ পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছেন নন্দিতা। শিশুটির নাম রাখা হয়েছে শান্তি।
এদিকে, জেলার ডেপুটি কমিশনার কেথি জাল্লি মকবুলের ওই কাজকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, এমন কাজ সবসময়ই অনুপ্রেরণার। হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতির এমন অনন্য নজির আরও দরকার।