বিদেশি পর্যটককে গণধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার প্যারিসের ছয় ‘নটরডেম নায়ক’

SHARE

ফ্রান্সের নটরডেম ক্যাথেড্রালের আগুন নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় ‘বীর’ উপাধি পাওয়া ছয়জনের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ অভিযোগে তাদেরকে গ্রেপ্তার করেছে সেদেশের পুলিশ।

গত শুক্রবার ২০ বছর বয়সী এক স্ক্যান্ডিনেভিয়ান তরুণীকে গণধর্ষণের অভিযোগে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ওই তরুণীকে প্রথমে যৌনকর্মে রাজি করান ফায়ার ব্রিগেডের এক কর্মকর্তা। কিন্তু এরপর তাঁর ওপর যৌন নিপীড়ন চালান অভিযুক্ত ছয়জন।

ঘটনার শিকার তরুণীকে ঘটনাস্থল থেকে বিধ্বস্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এর পরপরই গ্রেপ্তার করা হয় অভিযুক্ত ছয়জনকে।

গত ১৫ এপ্রিল প্যারিসের নটরডেম ক্যাথেড্রালে যে আগুন লাগে, তা নিয়ন্ত্রণে আনতে ভূমিকার জন্য ‘বীর’ উপাধি পেয়েছিলেন অভিযুক্তরা। প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ উদ্ধার অভিযানে অংশগ্রহণকারী ৫০০ জনকে এলিসি প্রাসাদে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তিনি তাদেরকে সোনার পদক দেওয়ারও ঘোষণা দিয়েছিলেন।

ঘটনার তদন্ত সূত্র জানায়, শুক্রবার ফায়ার ব্রিগেডের কয়েকজন কর্মী ওই তরুণীর ওপর নিপীড়ন চালান। সূত্র আরো জানায়, ‘একটি বারে ওই তরুণীর পরিচয় হয় একজন ফায়ার ব্রিগেড কর্মকর্তার সঙ্গে। একপর্যায়ে ওই তরুণী রাজি হন তার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করার।

সূত্রের খবর অনুয়ায়ী, ওই কর্মকর্তা সন্দেহভাজন নন। কিন্তু তিনি তরুণীটিকে ফায়ার স্টেশনে নিয়ে গেলে, সেখানেই তার ওপর নিপীড়ন চালান অভিযুক্তরা। নটরডেম থেকে ফায়ার স্টেশনটির দূরত্ব তিন মাইলেরও কম।

ঘটনার পর ফরেনসিক পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।

গ্রেপ্তার ছয় অভিযুক্তের নাম জানা যায়নি। ওই তরুণীর ওপর নিপীড়ন চালানোর সময় তারা সবাই মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন বলে সূত্র জানায়। গতকাল সোমবার প্যারিসের আদালতে হাজির করা হয় গ্রেপ্তারদের। তবে সেখানে অভিযোগ অস্বীকার করেন আসামিরা।

ফ্রান্সে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি ১৫ বছরের কারাদণ্ড। তবে ঘটনা নিয়ে জনসাধারণের মধ্যে বিক্ষোভ বা সংঘর্ষের মতো উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে কারাদণ্ডের মেয়াদ বেড়ে ২০ বছর পর্যন্ত হতে পারে।

প্যারিস ফায়ার ব্রিগেডের একজন মুখপাত্র গ্যাব্রিয়েল প্লাস বলেন, সব সন্দেহভাজনকে দায়িত্ব থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, এ ঘটনায় অভিযোগ মানেই প্যারিসের অগ্নিনির্বাপকদের মূল্যবোধের বিরুদ্ধে অভিযোগ।

এর আগে গত জানুয়ারিতে, ধর্ষণের ঘটনায় প্যারিসের দুই পুলিশ সদস্যকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। দণ্ডপ্রাপ্তরা কানাডার পর্যটককে তাদের সদরদপ্তরের একটি কক্ষে আটকে ধর্ষণ করেন। তাদের সদরদপ্তর নটরডেম ক্যাথেড্রালের পাশেই অবস্থিত।

প্যারিসের অগ্নিনির্বাপন কর্মীরা সবাই সামরিক বাহিনীর অন্তর্ভুক্ত। তারা সবাই ব্যারাক স্টাইলের কোয়ার্টারে থাকেন। সেখানে তাদের পৃথক বেডরুমের পাশাপাশি ডরমিটিরিও রয়েছে।