জোট সরকারের ছক কষছে কংগ্রেস

SHARE

সাত দফার লোকসভা নির্বাচনের তিন দফার ভোট হয়ে যাওয়ার পর কংগ্রেস নেতারা উপলব্ধি করতে পেরেছেন যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সরিয়ে এককভাবে ক্ষমতায় যাওয়া তাঁদের পক্ষে কার্যত অসম্ভব। এই উপলব্ধি প্রকাশ্যে না হলেও দলের ভেতরে ভেতরে বেশ স্পষ্টই দেখা যাচ্ছে।

আপাতত কংগ্রেসের ভেতরে যে আলোচনা চলছে, তাতে দলটির প্রধান লক্ষ্য হলো, মোদির নেতৃত্বাধীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) যেন কোনোভাবেই ২০০টির বেশি আসন না পায়।

লোকসভার আসনসংখ্যা ৫৫৩। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ২৭২। কংগ্রেস আশা করছে, বিজেপির আসনসংখ্যা এবার ২০০টির বেশি হবে না। আর ২০১৪ সালে কংগ্রেসের আসনসংখ্যা ছিল ৪৪, এবার তা বেড়ে হতে পারে ১০০ থেকে ১৪৫।

এ অবস্থায় রাষ্ট্রপতি একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল বিজেপিকে ডাকলেও তাদের পক্ষে ২৭২টি আসন দেখানো কঠিন হবে। কারণ হলো, শরিক দল হিসেবে এখন যারা আছে, তাদের মোট সংখ্যা ৭০ থেকে ৭২ হবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। সে ক্ষেত্রে বিজেপি না পারলে কংগ্রেস তো আঞ্চলিক দলগুলোকে নিয়ে একটি নতুন সরকার গঠন করতে পারে। কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব মনে করছে, ১০০টি আসন পেলে তারাই হবে দ্বিতীয় বড় দল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মোট আসনসংখ্যা পশ্চিমবঙ্গে ৪২। মমতা যতই ভালো করুন না কেন, ৪২টির বেশি আসন তাঁর দল পাবে না। তাই বিজেপির পর কংগ্রেস রাষ্ট্রপতির কাছে গিয়ে সরকার গঠনের দাবি জানিয়ে আঞ্চলিক দলগুলোর সমর্থন চাইবে।

কংগ্রেসের নেতৃত্ব মনে করছে, মমতা ও মায়াবতীর সমর্থন ছাড়া মোদির পক্ষে সরকার গড়া সম্ভব নয়। সম্প্রতি মমতার প্রশংসা করে মোদি যে বলেছেন তাঁর সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভালো, এটার পেছনেও নাকি আছে ভোটের হিসাব-নিকাশ। মোদি যদি মমতার সমর্থন না পান, তাহলে কংগ্রেসের সরকার গড়ার একটা সুযোগ আসবে। সে ক্ষেত্রে রাহুল গান্ধী নিজে প্রার্থী না হয়ে সুশীল সিন্ধে বা মালিকার্জুন খাড়গের মতো অবিতর্কিত প্রবীণ তফসিলি নেতার নাম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পেশ করতে পারেন। অবশ্য তৃণমূল সূত্র বলছে, মমতা কখনোই মোদিকে সমর্থন করতে পারেন না।

আবার বিজেপি সূত্র বলছে, মোদিকে সরিয়ে নিতিন গড়করির মতো নেতাকে প্রধানমন্ত্রী করতে আরএসএস চাইলেও সেটা সম্ভব হবে না। কারণ বিজেপি দলটি যখন মোদি-অমিত শাহর নিয়ন্ত্রণে, সেখানে আরএসএস কোনো ভূমিকা নিতে পারবে না। তবে বিজেপি ও কংগ্রেস দুই পক্ষই মানতে নারাজ যে আবার ত্রিশঙ্কু সরকার হতে পারে। বিজেপির বিশ্বাস, মোদি একাই বিপুল ভোটে জিতবেন।