শান্তিতে ভোট দেওয়া নিয়ে শঙ্কায় ভারতের শিক্ষার্থীরা

SHARE

ভারতের বেশির ভাগ ভোটারই বয়সে তরুণ। তাদের অনেকেই এবার প্রথম ভোট দেবেন। রাজনীতি নিয়ে কী ভাবছে তরুণ প্রজন্ম? ভোট নিয়েই বা কতটা সচেতন তারা? দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ভাঙড় মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কথা বলেছেন সে ব্যাপারে।

সেই মহাবিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র আকাশ ঘোষ বলেন, পড়াশোনা করে যে চাকরি পাব, তার নিশ্চয়তা কোথায়? আমরা দেখতে পাচ্ছি, পরীক্ষায় পাস করেও ছেলেমেয়েরা চাকরি পাচ্ছে না। চাকরির জন্য তাদের ধর্নায় বসতে হচ্ছে।

তাকে সমর্থন দিয়ে ইতিহাসের শিক্ষার্থী নার্গিস পারভিন বলেন, আমাদের প্রলোভন দেখানো হচ্ছে। ভোট এলেই লোক-দেখানো কাজ শুরু হয়ে যায়। যেন এসব দেখে আমরা ভুলে যাব। এসএসসি পাস করেও লোকজন চাকরি পাচ্ছে না। তাদের তো বয়স চলে যাচ্ছে। প্রত্যেকটা মানুষের একটা স্বপ্ন থাকে! রাজ্য সরকার কন্যাশ্রী, রূপশ্রী চালু করেছে। দেখা যায়, টাকাটা উচ্চশিক্ষার জন্য ব্যবহার না করে মেয়েদের বিয়ের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। সরকার যদি কর্মসংস্থানের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করে, সেটাই এই সব প্রকল্পের চেয়ে ভালো হবে।

দর্শনের খাদিজা খাতুন বলেন, আমি এবার প্রথম ভোট দেব। জানি না ভোট দিতে পারব কি না? আমি চাই মানুষ শান্তিতে নিজের ভোট নিজে দিক।

ইতিহাসের পল্লবী মণ্ডল বলেন, কন্যাশ্রীতে মেয়েরা উপকৃত হচ্ছে। ২৫ হাজার টাকা পাওয়ার পর পরিবারকে তারা বলতে পারেন, এখনই বিয়ে করব না, আরো পড়াশোনা করব।

নার্গিস আবার বলে ওঠেন, শুধু মেয়েদের জন্যই কেন প্রকল্প ঘোষণা করা হবে? অনেক গরিব ছেলে আছে, তারাও টাকার অভাবে পড়াশোনা করতে পারে না। তাদের জন্য সরকার কিছু ভাবুক। তাছাড়া, সকলে কন্যাশ্রীর উপকারিতার কথা বলছ, এক দিকে সরকার কন্যাশ্রীর টাকা দিয়ে মেয়েদের উচ্চশিক্ষার কথা বলছে, কিন্তু অন্য দিকে রূপশ্রীর টাকা দিয়ে বিয়ের জন্য তাদের উৎসাহিত করছে।

আকাশ বলে ওঠেন, হ্যাঁ, সরকারের এমন কিছু পদক্ষেপ করা উচিত, যাতে ছেলে এবং মেয়ে উভয়ই লাভবান হতে পারে।

ইতিহাসের আলমগীর মোল্লা বলেন, আসলে বাঙালি মেয়েরা শুধু এসএসসি পরীক্ষা নিয়ে পড়ে থাকেন। ইউপিএসসি, ডব্লিউবিসিএসের মতো পরীক্ষা নিয়ে ভাবা যায় না? আমাদেরকেই ঠিক করতে হবে, আমরা কাকে ভোট দেব। আমরা যদি সঠিক মানুষকে নির্বাচন করতে পারি, তাহলে এলাকার উন্নয়নও ঠিকঠিক হবে।

দর্শনের ছাত্রী করিমা খাতুন বলেন, ইন্টারভিউ দেওয়ার পর অনেকের কাছেই চাকরির জন্য টাকা চাওয়া হয়। টাকা দিতে না পারলে চাকরি হয় না। তাহলে এত কষ্ট করে পড়াশোনা করে কী লাভ? সরকারের এ ধরনের দুর্নীতি বন্ধ করা উচিত।

ইংরেজির রেজাউল মোল্লা বলেন, কেন্দ্র যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, বছরে দুই কোটি চাকরি দেবে তার কী হলো? প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনা প্রকল্পে কিছু রাস্তাঘাট ও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পে সাধারণ মানুষ ঘর ছাড়া আর কোনোভাবে উপকৃত হয়নি। নোট বাতিলের ফলে বহু সাধারণ মানুষ সমস্যায় পড়েছে। বলা হয়েছিল কালো টাকা দেশে ফিরিয়ে এনে প্রত্যেকের অ্যাকাউন্টে ১৫ লাখ করে টাকা দেওয়া হবে। কোথায় কী?

আয়েশা খাতুন বলে ওঠেন, এমন অনেক সরকারি প্রকল্প আছে, যার সুবিধা গরিব মানুষ পায় না। যাদের ঘর-শৌচালয় আছে তাদের আবার ঘর-শৌচালয় হচ্ছে। সরকারি প্রকল্পের সুযোগ যাতে গরিব মানুষ পান, তা সরকারের সুনিশ্চিত করা উচিত।