সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা লতিফ সিদ্দিকীকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে।
আজ শনিবার বিকেল সাড়ে ৩ টার দিকে একটি প্রিজন ভ্যানে করে তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এরপর তাকে কার্ডিওলজি বিভাগে পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে এক অনুষ্ঠানে লতিফ সিদ্দিকী হজ, তাবলিগ জামায়াত এবং প্রধানমন্ত্রী পুত্রের সমালোচনা করে সারাদেশের মানুষের প্রতিবাদের মুখে পড়েন। তার এসব মন্তব্য নিয়ে সারা দেশে শুরু হয় তোলপাড়।
ফাঁসির দাবিতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সভা-সমাবেশ ও মানববন্ধন অব্যাহত থাকে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন।
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ায় লতিফ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে ঢাকাসহ দেশের ১৮ জেলায় ২২টি মামলা হয়। প্রত্যেকটি আদালত তার বিরুদ্ধে সমন জারি করে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু তিনি নির্ধারিত সময়ে আদালতে হাজির না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে জারি হয় গ্রেফতারি পরোয়ানা।
ওই বক্তব্যের পর গত ১২ অক্টোবর আমেরিকায় থাকাকালেই লতিফ সিদ্দিকীকে মন্ত্রিসভা থেকে অপসারণের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। ওই দিনই আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যপদ থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়। পরে তার দলের প্রাথমিক সদস্যপদও বাতিল করা হয়। এরপর তিনি আমেরিকা থেকে ভারতে আসেন। কলকাতায় কিছুদিন অবস্থানের পর নাটকীয়ভাবে ২৩ নভেম্বর রাত ৮টা ২১ মিনিটে তিনি এয়ার ইন্ডিয়ার একটি ফ্লাইটে ঢাকায় আসেন। হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পর ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে ভিআইপি লাউঞ্জ দোলনচাঁপায় প্রায় এক ঘণ্টা বসিয়ে রাখেন। এ সময় সরকারের উচ্চপর্যায়ে যোগাযোগ করা হয় বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে। কিন্তু কোনো নির্দেশনা না থাকায় গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা তাকে আটক না করে বের হয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেন।
এরপর ২৫ নভেম্বর তিনি ধানমন্ডি থানায় আত্মসমার্পণ করেন। থানা থেকে তাকে আদালতে প্রেরণ করা হলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। তিনি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারেই ছিলেন। সেখান থেকে শনিবার তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (বিএসএমএমইউ) ভর্তি করা হয়।