জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে থাইল্যান্ড ছাড়লো সৌদি তরুণী

SHARE

অবশেষে জাতিসংঘের শারণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর’র তত্ত্বাবধানে থাইল্যান্ড ছেড়েছে সৌদি আরবের ১৮ বছর বয়সী সেই তরুণী। থাইল্যান্ডের একজন সরকারি কর্মকর্তা আজ (সোমবার) একথা জানিয়েছেন।
থাইল্যাণ্ডের রাজধানী ব্যাংককের সুবর্ণভূমি বিমানবন্দরে পৌঁছে সে দেশটির সরকারের কাছে জোরালোভাবে আশ্রয় চেয়েছিল রাহাফ মোহাম্মাদ আল-কুন নামের এ তরুণী। থাই অভিবাসন বিভাগের প্রধান সুরাচাতে হাকপার্ন জানান, “সৌদি তরুণীকে থাকার অনুমতি দেয়া হয়েছিল। তবে এখন সে ইউএনএইচসিআর’র তত্ত্বাবধানে রয়েছে। সে ইউএনএইচসিআর’র সঙ্গে বিমানবন্দর ছেড়ে গেছে।”
এর আগে, থাই অভিবাসন বিভাগের কর্মকর্তা প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছিলেন যে, তাকে জোরপূর্বক দেশে ফেরত পাঠানো হবে না। সুবর্ণভূমি বিমানবন্দরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছিলেন, “যদি সে দেশে ফিরতে না চায় তাহলে আমরা তাকে জোর করব না।” সে সময়ই তিনি জানিয়েছিলেন, জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে।
রাহাফ কুয়েত থেকে থাইল্যান্ড হয়ে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার চেষ্টা করছিল। রাহাফ জানিয়েছে, সে পরিবার থেকে পালানোর চেষ্টা করছে।
ফিরতি টিকিট নেই উল্লেখ করে কুয়েতে ফেরত পাঠানোর জন্য থাই কর্তৃপক্ষ সুবর্ণভূমি বিমানবন্দরের ট্রানজিট এলাকায় একটি হোটেলের কক্ষে রাখে রাহাফকে। তবে ফেরত পাঠানোর জন্য রাহাফকে হোটেল কক্ষ থেকে আনতে গিয়ে বিপত্তিতে পড়ে থাই কর্তৃপক্ষ। ওই তরুণী দেশে ফিরতে অস্বীকৃতি জানিয়ে নিজেকে হোটেল কক্ষে আটকে রাখে। একটি ছবিতে দেখা গেছে, হোটেল কক্ষের দরজার সামনে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে বিছানার ম্যাট, টেবিল, চেয়ার দিয়ে রেখেছেন রাহাফ। আর তাকে কুয়েতের ফিরতি ফ্লাইটে তুলে দেয়ার জন্য দরজার বাইরে কর্মকর্তারা অপেক্ষা করছেন।
সপ্তাহজুড়ে রাহাফ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার ছবি পোস্ট করে সবার নজর কাড়ে। সে বলেছে, তার অস্ট্রেলিয়ার ভিসা রয়েছে। কিন্তু সুবর্ণভূমি বিমানবন্দরে তার পাসপোর্ট একজন সৌদি কূটনীতিক কেড়ে নিয়ে গেছেন।
এদিকে সৌদি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওই তরুণীর পাসপোর্ট থাকলেও ফিরতি টিকিট না থাকায় তাকে আটক করা হয়েছে। রাহাফ বলেছে, সে ভয় পাচ্ছে যে, তাকে জোর করে সৌদি আরবে ফেরত পাঠানো হবে এবং তার পরিবার তাকে হত্যা করবে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক উপপরিচালক মাইকেল পেজ এক বিবৃতিতে বলেছেন, পরিবার থেকে পালিয়ে বেড়ানো সৌদি নারীকে ফেরত পাঠানো হলে স্বজনদের হাতে সে ভয়াবহ সহিংসতার শিকার হতে পারে। তার স্বাধীনতা খর্ব হতে পারে।
ব্যাংককে সৌদি দূতাবাস এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল, ওই তরুণীকে বিমানবন্দরে আটক করা হয়েছে, ‘কারণ তার ফিরতি টিকিট নেই’ এবং তাকে আজ কুয়েতে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা নেয়া হয়। কুয়েতে তার পরিবারের বেশির ভাগ সদস্য বসবাস করে।