স্বল্পোন্নত দেশগুলোর এখনো দুষ্ট চক্রের ফাঁদের মধ্যে রয়েছে বলে মনে করছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডি। একারণ হিসেবে মানবসম্পদ উন্নয়ন, আর্থিক অবকাঠামো উন্নয়নের দূর্বলতা দায়ি করছে সংস্থাটি। একই সঙ্গে আগামী ১ দশকের বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হতে পারবে না বলে সিপিডি জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার স্বল্পোন্নত দেশের উপর জাতিসংঘের বাণিজ্য সংস্থা ইউনাইটেড ন্যাশনস কনফারেন্স অন ট্রেড ডেভেলপমেন্টের( আঙ্কটাড) এলডিসিএস রিপোর্ট -২০১৪ এ এ তথ্য তুলে ধরা হয়। রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আঙ্কটাড’র হয়ে বাংলাদেশে সিপিডি রিপোর্টটি প্রকাশ করেছে।
রিপোর্ট পর্যালোচনা করে বাংলাদেশের অবস্থান সর্ম্পকে সিপিডির সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, স্বল্পোন্নতের তালিকা থেকে বের হতে প্রথমে ৬ বছরের জন্য সে দেশকে মূল্যায়ন করা হয়। কারণ দেশটির যে অগ্রগতি, তা কতোটা স্থায়ী না ভঙ্গুর পর্যবেক্ষণ করা হয়। তারপরই সে দেশটি স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হয়ে আসতে পারে। ২০১৫ সালে যে দেশগুলোকে এভাবে মূল্যায়নের তালিকায় রাখা হয়েছে সেখানে বাংলাদেশের নাম নেই। অর্থাৎ ২০২১ সালের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হওয়ার সম্ভাবণা নেই। এক দশকেও হবে কিনা সংশয় প্রকাশ করেন তিনি।
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরো বলেন, বাংলাদেশ অনেক ক্ষেত্রে উল্লেখ্যযোগ্য অগ্রগতি হলেও কিছু ক্ষেত্রে আশঙ্কা দেখছি। ২০২১ সালের আগেই মধ্যম আয়ের দেশে আসা সম্ভব। কারণ শুধুমাত্র জাতীয় আয় বৃদ্ধি পেলেই মধ্য আয়ের দেশে পৌঁছা সম্ভব। কিন্তু স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হতে পারবে না। আসতে হলে মানবসম্পদ ও অবকাঠামো উন্নয়ন করতে হবে।
তিনি বলেন, রপ্তানীর ক্ষেত্রে একটি পণ্যে নির্ভর হয়ে পড়ছে, এটা অবকাঠামোকে দূর্বলতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। অন্য যেসব সম্ভাবনাময় খাত রয়েছে সেগুলোতে অবকাঠামো সহায়তা দিতে হবে। উৎপাদন খাত আরো সহায়তা দিতে হবে।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ সামাজিক সূচকে এগুলোও কর্মসংস্থান ও আয় সৃষ্টির ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে। মাথা পিছু আয় বাড়লেও দেশজ আয়ে কৃষির আয় কমেছে।
এসময় সিপিডির নিবার্হী পরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, রিসার্চ পেলো তোফিকুল ইসলাম খান, অতিরিক্ত গবেষক গোলাম মোয়াজ্জেম উপস্থিত ছিলেন।
স্বল্প উন্নত ৪৮ টি দেশের উপর এ প্রতিবেদন পরিচালিত হয়েছে এবং একযোগে প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবদেন মতে, স্বল্পোন্নত দেশগুলোর মধ্যে রুয়ান্ডা, কম্বোডিয়া এবং বাংলাদেশ সহস্রাব্দ উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সবচেয়ে এগিয়ে আছে । এরমধ্যে প্রথম তিনটি দেশের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ।
২০১৫ পরবর্তী যে উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা আসতে যাচ্ছে তাতে অর্থনৈতিক ও মানবসম্পদ উন্নয়ন খাতকে জোর দেয়ার তাগিদ দিয়েছে সিপিডি।