‘এটা আসলে কোনো মামলাই না। এ রকম মামলা বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক নেতাদের ঘায়েল করার জন্য করা হয়ে থাকে। এখানেও তা-ই হয়েছে। এতে আমাদের নেত্রীর কোনো ক্ষতি হবে না; বরং তাঁর জনপ্রিয়তা বাড়বে। তিনিই হবেন বাংলাদেশের আগামী প্রধানমন্ত্রী।’ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পক্ষে আজ মঙ্গলবার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সময় এ কথা বলেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ।
বকশীবাজারে বিশেষ জজ আদালত-৫-এ মামলার দশম দিনের মতো যুক্তিতর্কের ওপর শুনানি চলছে। এখন মধ্যাহ্ন বিরতি শুরু হয়েছে। এরপর আবার শুনানি শুরু হবে।
খালেদা জিয়া আজ আদালতে উপস্থিত হন বেলা ১১টা ৩৫ মিনিটে। তিনি আসার পাঁচ মিনিট পর কার্যক্রম শুরু করেন বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক আখতারুজ্জামান।
যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সময় ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ আরও বলেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশনের অধীনে মামলাটি করা হয়েছে। তবে এই মামলার প্রক্রিয়া, অনুসন্ধান ও তদন্তকাজে দুর্নীতি দমন কমিশনের আইন যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয়নি। তাই এ মামলা চলারই কথা না।’ আদালতের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এই সব বিবেচনায় আপনি খালেদা জিয়াকে নিঃশর্ত খালাস দেবেন বলে আশা করি।’
খালেদার ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতির আবেদন নামঞ্জুর
মওদুদ আহমেদ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করার পর আসামিপক্ষের আরেক আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া খালেদা জিয়াকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন জানান। তিনি আদালতকে বলেন, ব্যক্তিগত এবং পারিবারিক অসুবিধার কারণে খালেদা জিয়া আগামী দুদিন তাঁর ব্যক্তিগত উপস্থিতি থেকে অব্যাহতি চান। তিনি খালেদা জিয়ার স্থায়ী জামিনও প্রার্থনা করেন। তিনি বলেন, এর আগে আদালত খালেদা জিয়ার অস্থায়ী জামিন মঞ্জুর করেছিলেন। সে স্থলে স্থায়ী জামিনের আদেশ দেওয়া হোক।
ওই সময় এর বিরোধিতা করেন রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল। এর আগে খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে মামলার কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে না মর্মে হাইকোর্ট থেকে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা একটি আদেশ আনেন। সেই আদেশ উল্লেখ করে মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, এই মামলার সমস্ত কার্যক্রম খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে পরিচালনার জন্য হাইকোর্ট আদেশ দিয়েছেন। সে ক্ষেত্রে তাঁকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপক্ষের আপত্তি আছে।
এই শুনানির পরিপ্রেক্ষিতে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি এবং স্থায়ী জামিনের আবেদন আদালত নামঞ্জুর করে দেন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়া, তাঁর বড় ছেলে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ মোট ছয়জন আসামি।