তাইজুল ইসলামের বলে হ্যাজেলউড এলবিডাব্লিউ হতেই ৫৬ হাজার বর্গমাইল জুড়ে শুরু হয়ে গেল উৎসবের ঢেউ। বিজয়োল্লাসে মাতল বাঙালি। অবশেষে টেস্ট ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়া বধ! ১১ বছর পর বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট খেলতে এসে প্রথম ম্যাচেই পরাজয়ের স্বাদ নিল বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম শক্তি। মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে টাইগার স্পিনারদের ঘূর্ণিজাদুতে ২০ রানে কুপোকাত হলো স্টিভেন স্মিথের দল। এই ঐতিহাসিক বিজয়ে যথারীতি নেতৃত্ব দিলেন বিশ্বসেরা অল-রাউন্ডার সাকিব আল হাসান। ম্যাচসেরার পুরস্কারও উঠল তার হাতে। পুরস্কার নিতে গিয়ে বাংলায় সবাইকে অভিনন্দন জানালেন বিশ্বসেরা।
জয়ের জন্য ১৫৬ রানের টার্গেট নিয়ে চতুর্থ দিন ব্যাটিংয়ে নামে অস্ট্রেলিয়া। সতর্ক শুরুর পর যথারীতি হাত খুলে মারতে থাকেন ডেভিড ওয়ার্নার। একসময় ১৫ চার ১ ছক্কায় ১২১ বলে তিন অংকে পৌঁছান তিনি। অজি সহ অধিনায়ককে ১১২ রানে এলবিডাব্লিউ করে দিনের প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন সাকিব।
ভাঙে অধিনায়ক স্মিথের সঙ্গে তার ১৩০ রানের জুটি। সাকিবের তৃতীয় শিকার হলেন অজি ক্যাপ্টেন স্টিভেন স্মিথ। মুশফিকুর রহিমের তালুবন্দী হয়ে ফিরলেন ৩৭ রান করা অজি দলপতি।
এরপর পিটার হ্যান্ডসকম্বকে (১৫) সৌম্য সরকারের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত করেন তাইজুল ইসলাম। ২ ওভার পরেই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান ম্যাথু ওয়েডকে (৪) এলবিডাব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলে চতুর্থ শিকার ধরেন বিশ্বসেরা অল-রাউন্ডার। অজিদের সপ্তম উইকেটের পতন ঘটান তাইজুল ইসলাম। অ্যাস্টন অ্যাগারকে (২) কট অ্যান্ড বোল্ড করে দেন তিনি। ম্যাচ হেলে পড়ে বাংলাদেশের দিকে। জয়ের ক্ষণ গননা শুরু হয়ে যায়।
১৯৯ রান তুলে লাঞ্চে যায় অজিরা। লাঞ্চ থেকে ফিরেই টানা দ্বিতীয় ইনিংসে পঞ্ম উইকেট শিকার করেন বিশ্বসেরা অল-রাউন্ডার সাকিব আল হাসান। বিপজ্জনক গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে (১৪) বোল্ড করে দেন বাংলাদেশের ক্রিকেটের পোস্টার বয়। লোয়ার অর্ডাররা লেজের দাপট দেখানোর আগেই নাথান লায়নকে (১২) ছেঁটে দিলেন মেহেদী মিরাজ। দুর্দান্ত ক্যাচ নিয়ে ‘পাপমোচন’ করলেন সৌম্য সরকার। এরপরও বাহারি সব স্ট্রোক খেলে ভয় ধরিয়ে দিচ্ছিলেন প্যাট কমিন্স। হ্যাজেলউডকে এলবিডাব্লিউ করে শেষ পেরেকটি ঠুকে দিলেন তাইজুল। অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংস শেষ হলো ২৪৪ রানে। কমিন্স অপরাজিত থাকলেন ৩৩ রানে।
এর আগে বাংলাদেশের দেওয়া ২৬৫ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ২ উইকেটে ১০৯ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শেষ করেছিল অজিরা। ম্যাট রেনশকে (৫) এলবিডাব্লিউ করে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। পরের ওভারেই উসমান খাজাকে (১) তাইজুলের তালুবন্দী করান সাকিব। অজি অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ আর তার ডেপুটি ডেভিড ওয়ার্নার মিলে ম্যাচটা প্রায় বের করে ফেলেছিলেন। কিন্তু চতুর্থ দিন সকালে আবারও বল হাতে ঘূর্ণিজাদু দেখিয়ে অজিদের ধসিয়ে দেন বিশ্বসেরা সাকিব।