নিজ জন্মস্থান কুষ্টিয়াতেও ছবিটি রিলিজ দিতে পারিনি: বুলবুল বিশ্বাস

SHARE
বিনোদন ডেস্ক:   ছিলাম ডাক্তার। সেখান থেকে শুধু আমাদের দেশের চলচ্চিত্রকে ভালোবাসি বলেই চলচ্চিত্র বানাতে এসেছি। এমনকি স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন কোর্স ছাড়তেও দ্বিধা করিনি।
চাইলে আমি পারতাম তথাকথিত অবাণিজ্যিক ধারার সিনেমা (যাকে বলেন আপনারা আর্ট ফিল্ম) বানাতে। কিন্তু আমি তা করিনি। শুধুমাত্র আমাদের দেশের বর্তমান চলচ্চিত্রের করুণ অবস্থার কথা ভেবে, চিন্তা করেছি একটা পারিবারিক আবহের বাণিজ্যিক ছবি, যা আমরা আশিরর দশকে দেখতাম, তেমনি ছবি বানাব। যাতে আমার দেশের অন্তত একটা সিনেমা হলের বন্ধ হয়ে যাওয়া আটকাতে পারি। সেই লক্ষ্যে আমি আমার নিশ্চিত ক্যারিয়ার, পরিবার ছেড়ে খুবই মানবেতর জীবনযাপন করে অনেক পরিশ্রম করে আকাশচুম্বী সীমাবদ্ধতার মধ্যে ‘রাজনীতি’ ছবিটি বানিয়েছি।
আশা ছিল এই ঈদে ছবিটা রিলিজ দিয়ে আমার প্রযোজকের সাথে সাথে আমিও আমার দুঃসময়ের দিন ঘুচাব। কিন্তু জীবনে কখনো ভাবি নাই, ছবি মুক্তির সময়ে কলকাতার জিতের ছবি, বাবা যাদবের ছবির কারণে আমি বাংলাদেশের নির্মাতা হয়ে বাংলাদেশের হল পাব না! আমি আমার নিজ জন্মস্থান কুষ্টিয়াতেও ছবিটি রিলিজ দিতে পারিনি।
আজ যদি নিজ দেশের আমার কোনো ভাইয়ের কারণে আমার ছবি হল না পেত, আমার দুঃখ থাকত না। আজ যদি কোয়ালিটির বিচারে কোনো হল না পেতাম, তবুও আমার কোনো দুঃখ থাকত না। ছবি রিলিজের সময় আমাকে স্রেফ হাত পা বেধে পানিতে ফেলে দিয়েছে এই তথাকথিত যৌথ প্রযোজনা, কিছু সরকারি নিয়ম, আর প্রায় সবগুলো হল একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে জিম্মির সিস্টেম।
খুব কষ্ট করে আমাকে বলতে হয়েছে, আমরা কি আসলে এমন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম? যে দেশে একজন স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতা তার ছবি দর্শকের কাছে পৌঁছাতে পারছে না। আমরা কি আসলেই স্বাধীন? জানি না বাংলা চলচ্চিত্রের ভবিষ্যৎ কী? বাংলাদেশের বা বাঙালী জাতির ভবিষ্যৎ কী? তবে সামনে ঘোর অমানিশার অন্ধকার।
যাই হোক হাতে পায়ে ধরে সামান্য যে কয়টা হল আমি ম্যানেজ করতে পেরেছি, সেখানে আপনারা ছবিটি দেখে বিনোদিত হবেন আশা করি। এই প্রথম শাকিব-অপুর কোন ছবি (বিগ বাজেট ও বিগ কাস্টিং) যোগ্যতা থাকা সত্বেও এত কম হলে রিলিজ হয়েছে শুধুমাত্র ভিন দেশি আগ্রাসনে।
অনেকে আমাদের বলেছে এ অবস্থায় ‘রাজনীতি’ মুক্তি না দেওয়ার জন্য। আমরা বলেছি, না অন্তত দর্শকদের সাথে প্রতারণা করব না, কথা দিয়েছি ঈদের সালামী দেব ‘রাজনীতি’ দিয়ে। কথা রাখব। ইনশাআল্লাহ আমাদের দর্শক তাদের ভালোবাসা দিয়ে আমাদের শ্রম এবং তাদের প্রতি আমাদের এই ভালোবাসার মর্যাদা রাখবে। ঈদ মোবারক। জয় হবেই বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের।
প্রসঙ্গত, শাকিব খান, অপু বিশ্বাস, আনিসুর রহমান মিলন অভিনীত রাজনীতি সারাদেশে মাত্র ৪০ টি সিনেমা হলে মুক্তি পেয়েছে।