পিলখানা হত্যা মামলা, রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল খারিজ

SHARE

পিলখানা হত্যা মামলায় ৫৮৯ আসামির সাজা বৃদ্ধি চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা তিনটি আবেদন খারিজ করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা তিনটি লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) খারিজ করে দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।

পিলখানা হত্যা মামলায় ১৫২ আসামির ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও সাজার রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের আপিল-জেল আপিল ও ৬৯ জনকে খালাসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিলের ওপর গত ১৩ এপ্রিল হাইকোর্টের তিন সদস্যের বিশেষ বেঞ্চে শুনানি শেষ হয়। সেদিন আদালত মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখেন। শুনানির শেষ পর্যায়ে এসে রাষ্ট্রপক্ষের করা নতুন তিনটি আপিলও সেদিন নাকচ করে দেন আদালত। ওই আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ গত ১৬ মে পৃথক তিনটি লিভ টু আপিল করে, যা চেম্বার বিচারপতির আদালত হয়ে আজ আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য ওঠে।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজল। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজল প্রথম আলোকে বলেন, বিচারিক আদালতের রায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া ১৫৮ জনের সর্বোচ্চ সাজা চেয়ে একটি, বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড পাওয়া ২৩৭ আসামির সর্বোচ্চ সাজা চেয়ে আরেকটি এবং খালাস পাওয়া ১৯৪ জনের বিরুদ্ধে অপর আপিলটি করা হয়। ৫৮৯ আসামির সাজা বৃদ্ধি চেয়ে করা আপিল তিনটি হাইকোর্ট খারিজ করে দেন। এর বিরুদ্ধে তিনটি লিভ টু আপিল করা হয়। আপিল বিভাগ তিনটি লিভ টু আপিল খারিজ করে দিয়েছেন।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বিডিআর সদর দপ্তরে পিলখানা ট্র্যাজেডিতে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন প্রাণ হারান। ওই বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি লালবাগ থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। পরে মামলা দুটি নিউমার্কেট থানায় স্থানান্তরিত হয়। বিচার হয় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারসংলগ্ন আলিয়া মাদ্রাসা মাঠসংলগ্ন অস্থায়ী এজলাসে। বিচার শেষে ঢাকা মহানগর তৃতীয় বিশেষ আদালত ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর রায় ঘোষণা করেন। রায়ে বিডিআরের সাবেক ডিএডি তৌহিদসহ ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টু (প্রয়াত) ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা তোরাব আলীসহ ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ২৭৭ জনকে খালাস দেওয়া হয়। রায়ের পর ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) হাইকোর্টে আসে। দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আসামিরা ১১৯টি আপিল ও ১৩৩টি জেল আপিল করে। এর মধ্যে ৬৯ জনকে খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ একটি আপিল করে।

দেশের ইতিহাসে আসামির সংখ্যার দিক থেকে সবচেয়ে বড় এই মামলা (হত্যা) ২০১৫ সালের ১৮ জানুয়ারি হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়। ৩৭০তম দিনে ১৩ এপ্রিল শুনানি শেষ হয়।