পবিত্র লাইলাতুল মেরাজ সোমবার

SHARE

২৪অাওয়ার রিপোর্ট :  সোমবারের সূর্যাস্ত যে রাত নিয়ে আসবে তা এক অসামান্য মহাপূণ্যে ঘেরা পবিত্র রজনী। এ রজনী মহাপবিত্র মহিমান্বিত লাইলাতুল মেরাজ।
প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর নবুওয়াত লাভের একাদশ বর্ষের রজব মাসের ২৭ তারিখ রাতে মহান আল্লাহর বিশেষ মেহমান হিসেবে আরশে আজিমে আরোহণ করেন। তখন তিনি আল্লাহর দিদার লাভ করেন। অবলোকন করেন সৃষ্টি জগতের সবকিছুর অপার রহস্য।

রাসূল (সা.) উম্মতের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের হুকুম নিয়ে আসেন, যে নামাজ মু’মিনের মেরাজস্বরূপ। এমন নানা কারণে এ রাত অতি পবিত্র ও মহান আল্লাহর অফুরন্ত রহমত-বরকতে সমৃদ্ধ। মুসলিম জাহানের কাছে এ রাতের তাত্পর্য অপরিসীম। রাসূল (সা.)-এর জীবনের সবচেয়ে আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনা মেরাজ।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, রোজা রাখা, নফল নামাজ আদায়ের মধ্য দিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা শবে মেরাজ পালন করেন।

৬২০ খ্রিস্টাব্দের পবিত্র এ রাতে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) মহান আল্লাহ তায়ালার খাস রহমতে প্রথমে মক্কা মুকাররমার কাবা শরিফ থেকে জেরুজালেমে অবস্থিত বায়তুল মোকাদ্দেস বা মসজিদুল আকসায় গমন করেন।

এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআন শরিফের সূরা বনী ইসরাইলের শুরুতেই বলা হয়েছে, ‘পরম পবিত্র ও মহিমাময় সত্ত্বা তিনি, যিনি স্বীয় বান্দাকে রাতের বেলায় মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত ভ্রমণ করালেন, যার চতুর্দিকে আমার রহমত ঘিরে রেখেছেন যেন আমি কুদরতের কিছু নিদর্শন দেখিয়ে দেই।’

মেরাজের ঘটনায় বলা হয়েছে, মসজিদুল আকসায় রাসূল (সা.) জামাতে ইমামতি করে ঊর্ধ্বলোকে গমন করেন। প্রতিটি আসমানে হযরত আদম (আ.) ও বিশিষ্ট নবীদের সঙ্গে বিশ্ব নবীর (সা.) সালাম ও কুশলাদি বিনিময় হয়।

তারপর তিনি সিদরাতুল মুনতাহায় উপনীত হন। এ পর্যন্ত হযরত জিবরাইল (আ.) তার সফর সঙ্গী ছিলেন। সেখান থেকে তিনি একা রফরফ নামক বিশেষ বাহনে সত্তর হাজার নূরের পর্দা পেরিয়ে আরশে আজিমে মহান আল্লাহ তায়ালার দিদার লাভ করেন এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের হুকুম নিয়ে দুনিয়ায় প্রত্যাবর্তন করেন। মেরাজকালে মহানবী (সা.) সৃষ্টি জগতের সব কিছুর রহস্য অবলোকন করেন।

পবিত্র ধর্ম ইসলামে মেরাজের বিশেষ গুরুত্ব আছে। কেননা, এ মেরাজের মাধ্যমেই ইসলাম ধর্মের পঞ্চ স্তম্ভের দ্বিতীয়টি বা নামাজ মুসলমানদের জন্য অত্যাবশ্যক বা ফরজ হয়।

মেরাজের ঘটনা ইসলামে যথেষ্ট অর্থবহ হলেও এ উপলক্ষে বিশেষ রাত পালনের নিয়মকে এবং আমাদের দেশে যেভাবে যে নিয়মে লাইলাতুল মেরাজ বলে পালন করা হয় সেভাবে রাত পালনের নিয়মের কোনো প্রমাণ কোথাও পাওয়া যায়নি। তাই ইসলামী চিন্তাবিদরা লাইলাতুল মেরাজকে এভাবে পালনের অনুমতি দেন না, গ্রহণও করেন না। কেননা ঠিক কত তারিখে মেরাজ ঘটেছিল তার কোনো নির্ধারিত বিবরণ পাওয়া যায় না। এ ব্যাপারে সাহাবাদের মধ্যেই মতভেদ ছিল। শুধু এতটুকু সঠিক করে বলা যায়, নবুয়তের দশম থেকে ত্রয়োদশ বছরের মধ্যে কোনো এক রাতে ঘটেছে মেরাজের ঘটনা।

এ ঘটনা সত্য ঘটনা। মেরাজ শেষে ফিরে রাসূল (সা.) যখন এ সম্পর্কে বলেন তখন সবার আগে তা ‘আমি বিশ্বাস করি’ বলে হযরত আবু বকর (রা.) সত্যায়ন করেন। এ কারণে তিনি সেদিন ‘সিদ্দিক’ উপাধি লাভ করেন। মেরাজের এই ঘটনা তখন অবশ্য কাফিররা বিশ্বাস করেনি। তবে আজকে চাঁদে গমন থেকে নানাভাবে এর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি মিলছে বলে আলেম সমাজ মনে করেন।