কওমি মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্সের সমমান দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করছে সরকার। বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক উচ্চশিক্ষা বিভাগ এ প্রজ্ঞাপন জারি করে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, দাওরায়ে হাদিস ডিগ্রি ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবি বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রির সমান মর্যাদা পাবে।
এতে বলা হয়, দাওরায়ে হাদিস বিষয়ে পরীক্ষা গ্রহণকারী দেশের কওমি বোর্ডগুলোর ঐক্যমতের ভিত্তিতে সনদ বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করা হয়েছে।
১৭ সদস্যের এই কমিটির চেয়ারম্যান হবেন দারুল উলুম হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া (বেফাক) সভাপতি আল্লামা শাহ আহমদ শফী। কো চেয়ারম্যান হবেন বেফাকের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা আশরাফ আলী। এছাড়া কমিটিতে বেফাক থেকে ৫জন, গোপালগঞ্জের গওহর ডাঙ্গার বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার ২জন। ইত্তেহাদুল মাদারিসিল কওমিয়া চট্টগ্রামের ২জন। সিলেটের আযাদ দ্বীনি এদারায়ে তা’লীম থেকে ২ জন, তানজিমুল মাদারিসিল কওমিয়া উত্তরবঙ্গের ২জন, জাতীয় দ্বীনি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড বাংলাদেশ থেকে ২ জন। এসব বোর্ডের সভাপতি ও মহাসচিবরা সদস্য হিসেবে পদাধিকার বলে থাকবেন। তবে বোর্ড চাইলে তাদের মনোনীত প্রতিনিধিদেরও দিতে পারবে। এছাড়া চেয়ারম্যান সর্বোচ্চ ১৫জন সদস্য কো-অপ্ট করতে পারবেন।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, দাওরায়ে হাদিসের ডিগ্রির মান বাস্তবায়নে নিয়োজিত কমিটি দলীয় রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকবেন না। এই কমিটির তিনটি কার্যপরিধি ঠিক করে দেয়া হয়েছে। এই কমিটি যেসব মাদ্রাসাকে নিবন্ধন দেবে কেবল তারাই দাওরায়ে হাদিস ডিগ্রির সমমান পাবে।
এখন থেকে সারা দেশে দাওরায়ে হাদিসের পরীক্ষা একই প্রশ্নপত্রে নেয়া হবে। সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের মত পরীক্ষার উত্তরপত্রও একসঙ্গে মূল্যায়ন ও ফল প্রকাশ করা হবে। ‘কওমি মাদ্রাসা দাওরায়ে হাদিসের সনদের মান বাস্তবায়ন কমিটি’ এই কাজ পরিচালনা করবে। এই কমিটি কোর্স কারিকুলামও নির্ধারণ করবে।
বর্তমানে সারা দেশে দাওরায় হাদিসের অন্তত ৬টি শিক্ষা বোর্ড আছে। ওই বোর্ডগুলো আলাদাভাবে পরীক্ষা নিয়ে দাওরায় হাদিস ডিগ্রির সনদ দিয়ে থাকে।
গত ১১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে কওমীপন্থী আলেমদের সঙ্গে বৈঠক করেন। আল্লামা শাহ আহমদ শফীর নেতৃত্বে আলেমরা ওই বৈঠকে যোগ দেন। ওইদিনই প্রধানমন্ত্রী দাওরায়ে হাদিস ডিগ্রিকে মাস্টার্স ডিগ্রির সমমান দেয়ার ঘোষণা দেন। সে অনুযায়ী শিক্ষা মন্ত্রণালয় এই প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বলে একজন কর্মকর্তা জানান।
তিনি আরো বলেন, বাস্তবায়ন কমিটির এই রূপরেখা গত ২৮ মার্চ শিক্ষামন্ত্রণালয়ের এক দ্বিপাক্ষিক সভায় চূড়ান্ত হয়। ওই সভায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাসহ কওমিপন্থী কয়েকজন শীর্ষ আলেম যোগ দেন।