চলতি বছর ডিসেম্বরে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সরকারের কাছে আরও একবছর সময় চেয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একটি সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণ এবং চতুর্থ সংশোধনীতে যুক্ত হাতিরঝিলের পানি পরিষ্কার রাখার প্রকল্পের কাজ এখনো শুরু না হওয়াসহ আরও কিছু কাজ বাকি রয়েছে, যেগুলো নির্ধারিত সময়ে শেষ হবে না।
তবে আগের বারের মতোই এবারও প্রকল্প বাস্তবায়নের ব্যয় বাড়ছে না বলে জানিয়েছে রাজউক।
হাতিরঝিল সমন্বিত উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক মো. জামাল আকতার ভূঁইয়া জানান, পরিকল্পনা কমিশনের কাছে প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব এর মধ্যেই গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “সময় বাড়ানোর প্রস্তাব আমরা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। তারা প্লানিং কমিশনে পাঠাবে।”
রাজউকের এই প্রস্তাব পাওয়ার কথা স্বীকার করে গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী মোশাররফ হোসেন বলেন, “এটা পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
“জমি অধিগ্রহণসহ কয়েকটি কাজের জন্য সময় বেশি লেগেছে। নির্ধারিত সময়ে শেষ করতে না পারায় মেয়াদ বাড়বে।”
প্রকল্প পরিচালক জামাল আকতার বলেন, জমি অধিগ্রহণ না হওয়ায় তেজগাঁওয়ের বউবাজারের কাছে হাতিরঝিল-তেজগাঁও সংযোগ সড়কের কাজ শুরু করা যায়নি।
মেরুল বাড্ডায় হাতিরঝিলের নর্থ ইউলুপের কাজ এখন পর্যন্ত ২৫ শতাংশ শেষ হয়েছে বলে তিনি জানান।
পাশাপাশি হাতিরঝিলের নিকেতন অংশে হাতিরঝিল ব্যবস্থাপনা ভবনের নির্মাণকাজও এখনও শেষ হয়নি।
জামাল বলেন, “প্রাথমিক পরিকল্পনায় ভবনটি তিনতলা পর্যন্ত তৈরির কথা থাকলেও পরে ১০ তলা পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। এর ফলে ভবন নির্মাণের সময়ও বেড়ে গেছে।”
ভবনটির ৮ম তলা পর্যন্ত গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য রাখা হবে। উপরের দুটি তলায় কনভেনশন সেন্টার এবং হাতিরঝিল ব্যবস্থাপনা কার্যালয় স্থাপন করা হবে।
প্রকল্প পরিচালক বলেন, “ওটার ভিত্তির কাজ শেষ। এখন ফাইল ক্যাপের কাজ চলছে।”
এছাড়া হাতিরঝিলের পানি পরিষ্কার রাখতে চতুর্থবার মেয়াদ বাড়ানোর সময় যুক্ত ‘সেপারেশন অব স্যুয়ার লাইন ফ্রম স্টর্ম ওয়াটার লাইন’ প্রকল্পের কাজও শুরু হয়নি।
এবিষয়ে হাতিরঝিল প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মেজর কাজী শাকিল হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “হাতিরঝিল প্রকল্পের চতুর্থ রিভিশনে এটা ইনক্লুড করা হয়েছে। বর্ষা মৌসুম যাওয়ার পর এর কাজ শুরু হবে।”
২০০৭ সালে হাতিরঝিল সমন্বিত উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। শুরুতে প্রকল্পটির ব্যয় একহাজার ৪৭৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকা ধরা হয়; কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১০ সালের জুনে।
প্রথম দফা সংশোধনীতে এক বছর সময় বাড়ানোর সঙ্গে ব্যয়ও বাড়ে ৮ কোটি টাকা।
দ্বিতীয় দফায় প্রকল্পের মেয়াদ আরো দেড় বছর বাড়ানো হয়। তখন ব্যয় আরও ৪৯০ কোটি টাকা বেড়ে হয় মোট একহাজার ৯৭১ কোটি টাকায় দাঁড়ায়।
এর পর তৃতীয় দফায় আরও ২৬৫ কোটি টাকা যোগ করে মোট ২ হাজার ২৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৫ সালের জুন মাসে প্রকল্প শেষ করার লক্ষ্য ধরা হয়।
সর্বশেষ ২০১৫ সালে চতুর্থবারের মতো প্রকল্পের মেয়াদ দেড় বছর মেয়াদ বাড়লেও ব্যয় বাড়ানো হয়নি।