তারের বেড়া কেটে আনা হচ্ছে গরু

SHARE

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন সীমান্ত পথে বাংলাদেশি গরু ব্যবসায়ীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গরু আনছে ভারত থেকে। এমনকি কাঁটাতারের বেড়া কেটে আনা হচ্ছে গরু।

বাংলাদেশ সরকার গরুপ্রতি ৫০০ টাকা ভ্যাট নিয়ে সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে গরু নিয়ে আসার বৈধতা দিলেও ভারত সরকারের রয়েছে গরুর পাচার রোধে কঠোর নীতি। অর্থাৎ সীমান্তে বাংলাদেশি গরু ব্যবসায়ী দেখলেই গুলি চালানোর নির্দেশ রয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফর। এরপরও সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিনই আসছে গরু। তবে পরিমাণে এবার একটু কম আসছে বলে জানালেন গরু ব্যবসায়ীরা।image_97429_0

বর্তমানে চুয়াডাঙ্গার বেনীপুর, মেদেনীপুর, কুসুমপুর, মুন্সিপুর ও ঠাকুরপুর সীমান্ত দিয়ে রাতে-দিনে শত শত  গরু ঢুকছে বাংলাদেশে। বেশিরভাগ রাতেই আসছে এসব গরু। এরপর সকালে জড়ো করা হচ্ছে সীমান্তবর্তী এলাকায়। নির্দিষ্ট জায়গাই বসে এসব গরুর হাট। বেলা ১১ টা থেকে ১২ টার মধ্যে বেচা-কেনা শেষ হয়ে যায়।

এসব হাটে গরু কিনতে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ব্যবসায়ীরা আসেন প্রতিদিন। তবে এখন গরু আসছে কম। ফলে সীমান্তে ভারতীয় গরুর দামও একটু বেশি বলে জানালেন ব্যবসায়ীরা।

এসব ব্যবসায়ীরা আরো জানান, গরু ভারত থেকে উপযুক্ত দাম দিয়েই কিনে আনতে হচ্ছে। তাদের দাবি, ভারত থেকে এসব গরু না এলে দেশের বাজারে গরু আর গরুর গোশতের দামও অনেক চড়া হতো।

সীমান্তে গরু আনতে যাওয়া ব্যবসায়ীরা জানালেন, বিএসএফ দেখলেই গুলি চালায়। ফলে তারা এখন গরু আনতে ভারতের অভ্যন্তরে যান না। সীমান্তের জিরো পয়েন্ট অপেক্ষা করেন। ভারতীয়রা কাঁটাতারের বেড়া কেটে বিশেষ ব্যবস্থায় গরু পৌঁছে দিয়ে যান তাদের কাছে।

এসব গরু প্রতি ৫০০ টাকা হারে ভ্যাট নিয়ে সিল করে তিন দিনের বৈধতা দিচ্ছে বাংলাদেশের কাস্টমস ও বিজিবি। এ বৈধতার মেয়াদ আরো বাড়ানো দাবি বাংলাদেশি গরু ব্যবসায়ীদের।

এদিকে ভারত থেকে সীমান্ত পথে গরু আসায় কোরবানির বাজারে এবার দেশীয় গরুর খামারিরা গরুর দাম কম পাবেন। এতে তারা লোকসানে পড়তে পারেন বলে ধারণা করছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. কোহিনুর ইসলাম ।

ভারতে গরু আনতে যাওয়া বাংলাদেশিরা  প্রতিনিয়ত  ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ’র হাতে প্রাণ হারাচ্ছে। অনেকেই আবার আটক হয়ে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।

সীমান্ত পেরিয়ে এই গরু আনার প্রক্রিয়া ও বিএসএফর হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে বিজিবির নির্দেশনা নিয়ে চুয়াডাঙ্গা-৬ ব্যাটালিয়নের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর আনোয়ার জাহিদ জানান, সীমান্ত পেরিয়ে যেসব গরু ভারত থেকে নিয়ে আসে বাংলাদেশিরা, সেগুলো জব্দ দেখিয়ে কাস্টমসের ভ্যাট আইনে গরু প্রতি ৫০০ টাকা হারে রাজস্ব নিয়ে বৈধতা দেয়া হয়। আর সীমান্তে অবৈধভাবে প্রবেশের ব্যাপারে বিজিবি কড়াকড়ি তো আছেই। এ ক্ষেত্রে গরু ব্যবসায়ীরা ভারতের অভ্যন্তরে কোনোভাবেই যেতে পারবে না। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থেকেই তাদের গরু আনতে হবে।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলার সীমান্ত দিয়ে গরু আনতে গিয়ে গত দুই বছরে ছয়জন গরু ব্যবসায়ী বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়েছেন। আহত হয়ে পালিয়ে এসেছেন অন্তত ২০ জন। এছাড়া ২৫ জন বাংলাদেশি বিএসএফের হাতে আটক হয়ে ভারতের কারাগারে রয়েছেন।