বাংলাদেশে ফিরেন নি ৪৫টি বায়িং হাউজের সিইও

SHARE

germanবাংলাদেশের গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলায় নিহতদের মধ্যে অন্তত ৯ জন ছিলেন পোশাক ব্যবসার সাথে জড়িত। তারা প্রত্যেকেই বায়িং হাউজনির্ভর প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত ছিলেন। জঙ্গি হামলার পর বায়িং হাউজগুলো তাদের ব্যবসায় ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছে। এমন পটভূমিতে প্রায় ৭’শ বায়িং হাউজের প্রতিনিধিত্বকারী বাংলাদেশে গার্মেন্টস এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরতে শনিবার (১৬ জুলাই) ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
গুলশান হামলা বায়িং হাউজের কর্মকা-ে কেমন প্রভাব ফেলছে ? বিবিসি বাংলার এমন প্রশ্নের উত্তরে বাংলাদেশের গার্মেন্টস এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট কাজী ইফতেখার হোসেন বলেন, যারা বিদেশী ব্যবসায়ী আছেন, গুলশান ঘটনার পর তারা এখন বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনা নিরাপদ মনে করছেন না। সবচেয়ে বড় সমস্যা দেখা দিয়েছে যে, এতোদিন আমরা ওটাম এবং উইন্টারের ব্যবসা করেছি কিন্ত শীতের পোশাকের জন্য বায়াররা জুলাই থেকে আগষ্টের মধ্যে আসা যাওয়া করেন এবং তারা অর্ডার প্লেস করার ব্যবস্থা করেন। কিন্তু গুলশানের ঘটনাটি এই সময়ের মধ্যেই ঘটেছে। এখন তারা যদি ১৫/২০ দিন থেকে এক মাসের মধ্যে না আসে তাহলে এই ব্যবসাটা পিঁছিয়ে যাবে। যেহেতু এই ব্যবসা সময়নির্ভর তাই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তারা না এলে বোঝা যাবে বিকল্প হিসেবে অন্যত্র অর্ডার প্লেসের চিন্তা ভাবনা করছে।’
আর্ডার প্লেসমেন্ট না করার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে কি? অথবা সম্ভাব্য কেউ, যাদের অর্ডারের জন্য আসার কথা তাদের মধ্যে কেউ কি পরিকল্পনা বাতিল করেছেন?
তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, অনেক ক্রেতাই আমাদের জানিয়েছেন যে তারা আপাতত পর্যবেক্ষণ করছেন। যদি পরিস্থিতি শান্ত হয়, তাহলে আসবেন। সমস্যা হচ্ছে, ইউরোপীয় এবং ব্রিটিশ পার্লামেন্টে গত দুই দিন এই বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এই আলোচনাটি গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। বিশেষ করে ইটালির একটি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে যে, যদি কোন ব্যবসায়ী বাংলাদেশে যেতে চায় তবে সে তার নিজ দায়িত্বে যেতে পারে, সরকার সেখানে কোন দায়-দায়িত্ব গ্রহণ করবে না। এই অবস্থায় কোন ব্যবসায়ী বাংলাদেশের আসরা উদ্যোগ নেবে সেটা আমরা মনে করতে পারছি না।’
বায়িং হাউজগুলোতে যেসব বিদেশীরা মালিক হিসেবে, কর্মকর্তা হিসেবে বা প্রতিনিধি হিসেবে আছেন তাদের সাথে তো আপনাদের প্রতিনিয়ত কথাবার্তা হচ্ছে, এই পেক্ষাপটে তারা বিষয়টি কিভাবে দেখছেন?
এ প্রশ্নের জাবাবে কাজী ইফতেখার হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশে অনেকগুলো বিদেশী কর্পোরেট হাউজ আছে। সেই হাউজগুলোর যারা বড় অফিসার তারা ঈদের ছুটিতে বাইরে গেছেন। হলি আর্টিজান হামলার পরে তারা কেউ এখনো ফিরে আসেনি। এখন দেখা যাচ্ছে প্রায় ৪৫টি প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ( সিইও ) বাংলাদেশে ফিরে আসেননি। আমি নিজেই একটি প্রতিষ্ঠানকে রিপ্রেজেন্ট করি। সেই প্রতিষ্ঠানে যারা বড় কর্মকর্তা আছেন তারা কথা দিয়েছেন আগামী ১৮ তারিখে ফিরবেন। যদি না ফেরেন তাহলে আমরা মনে করব তারা আরও কিছুদিন পর্যবেক্ষণ করবে। এই বাস্তবতায় যদি তারা আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে না ফিরে আসেন তাহলে আমরা বাণিজ্যিকভাবে বিশেষকরে শীতকালীন ব্যবসায ক্ষতিগ্রস্ত হবো।’
এমন পরিস্থিতিতে আপনারা যে সংবাদ সম্মেলন করতে যাচ্ছেন সেখানে আলোচনার বিষয় কী থাকবে?
‘প্রেস কনফারেন্সে তুলে ধরতে যাচ্ছি যে, ব্রেক্সিটের মতো সাধারণ ঘটনার কারণে ভোডাফোন কোম্পানী লন্ডন থেকে শিফট করতে যাচ্ছে। এইচএসবিসি তার ১ হাজার কর্মচারী কমাতে যাচ্ছে। সন্ত্রাস নয়, সাধারণ একটি পরিস্থিতিতেই যদি এই অবস্থা হয় তবে আমাদের দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে একজন বায়ার কিভাবে আসবে? মানুষ মাত্রই জীবনকে ভালোবাসে। তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে যদি সরকার যথাযথ পদক্ষেপ না নেয় তহলে সেটি বাইং হাউজ ব্যবসার জন্য একটি ক্ষতিকর দিক হবে।