রাতেই হত্যা করা হয় ২০ জনকে

SHARE
Bangladesh Border Guards are seen near Gulshan restaurant, after gunmen stormed a restaurant popular with expatriates in the diplomatic quarter of the Bangladeshi capital, in Dhaka, Bangladesh July 1, 2016. Courtesy of Dhaka Tribune/Mahmud Hossain Opu via REUTERS

bangladesh-attack-pari-4-1467421305
রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারি রেস্তোরাঁয় জিম্মিদের মধ্যে গতকাল শুক্রবার রাতেই ২০ জনকে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।

আজ শনিবার সেনা সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মিলিটারি অপারেশনের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাঈম আশফাক চৌধুরী এ তথ্য জানান।2

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাঈম আশফাক চৌধুরী বলেন, ‘অভিযানের মাধ্যমে তিনজন বিদেশি—যাদের মধ্যে একজন জাপানি ও দুজন শ্রীলঙ্কানসহ ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করতে সক্ষম হই। অভিযানে সাতজন সন্ত্রাসীর মধ্যে ছয়জন নিহত হয় এবং এক সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ছাড়া অভিযান শেষে তল্লাশিকালে ২০ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। যাদের সবাইকে গতরাতেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করা হয়।’

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রচলিত নিয়ম মেনেই সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হবে। তাদের পরিচয় নিশ্চিত করতে কোনো জিজ্ঞাসা থাকলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রভোস্ট মার্শালের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। তাঁর মোবাইল নম্বর-০১৭৬৯০১২৫২৪। প্রাথমিকভাবে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করা হচ্ছে।

Bangladesh Border Guards are seen near Gulshan restaurant, after gunmen stormed a restaurant popular with expatriates in the diplomatic quarter of the Bangladeshi capital, in Dhaka, Bangladesh July 1, 2016. Courtesy of  Dhaka Tribune/Mahmud Hossain Opu via REUTERS
Bangladesh Border Guards are seen near Gulshan restaurant, after gunmen stormed a restaurant popular with expatriates in the diplomatic quarter of the Bangladeshi capital, in Dhaka, Bangladesh July 1, 2016. Courtesy of Dhaka Tribune/Mahmud Hossain Opu via REUTERS

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই নাঈম আশফাক চৌধুরী ঘটনার বর্ণনা দেন। তিনি বলেন, ‘গুলশান-২ নম্বরের ৭৯ নম্বর সড়কের হলি আর্টিজান বেকারি নামের একটি রেস্তোরাঁয় দুষ্কৃতকারীরা গুলি ছুড়তে ছুড়তে ভেতরে প্রবেশ করে। রেস্তোরাঁর সবাইকে জিম্মি করে। ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরবর্তীতে পুলিশ কর্ডন করে সন্ত্রাসীদের যথেচ্ছ কর্মকাণ্ড থেকে নির্বৃত্ত করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ-র‍্যাব ও বিজিবি যে সাহসিকতা, আন্তরিকতা ও পেশাদারি প্রদর্শন করেছে, তা অনন্য।’

আইএসপিআরের সংবাদ সম্মেলনে এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘এই অভিযানকালে দুজন পুলিশ কর্মকর্তা শাহাদত বরণ করেন এবং ২০ জনের বেশি পুলিশ সদস্য আহত হন। উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীকে সরকার প্রধান কর্তৃক আদেশ প্রদান করা হয়। সে মোতাবেক বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ট’ পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয়। সেনাবাহিনী গতকাল রাত থেকেই ঘটনাস্থলে অবস্থানরত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা বাহিনীর কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে। সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ ও র‍্যাব সহযোগে সম্মিলিতভাবে অপারেশন থান্ডারবোল্ট পরিচালনা করা হয়।’ তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এয়ার কমান্ডোর নেতৃত্বে কমান্ডো অভিযান সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে শুরু হয়। ১২ থেকে ১৩ মিনিটের মধ্যেই সব সন্ত্রাসীকে নির্মূল করে ওই এলাকায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা হয়। পরবর্তীতে অপারেশনের অন্যান্য কার্যক্রম সম্পন্ন করে সকাল আটটায় অপারেশনের সব কার্য সম্পন্ন করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে প্রাথমিকভাবে সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত পিস্তল, ফোল্ডেট বাঁট একে ২২ রাইফেল, বিস্ফোরিত আইইডি, ওয়াকিটকি সেট ও অনেক ধারালো দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, অভিযানে অংশগ্রহণকারী সদস্যদের কেউ হতাহত হয়নি।160701224753-02-dhaka-military-vehicle-july-1-large-169

গতকাল রাতে অপারেশনে অংশ নেওয়া পুলিশের নিহত দুজন কর্মকর্তার রুহের মাগফিরাত কামনা করে এই সেনা কর্মকর্তা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সার্বিক কৌশলের মাধ্যমে অতি দ্রুততার সঙ্গে অভিযান সফল করার জন্য সবার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। সরকার প্রধানের সময়োচিত, সাহসী, দৃঢ় ও সঠিক দিক-নির্দেশনার জন্য এই অভিযান সফল হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে এই ঘটনার বিষয়াবলি যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আপনাদের জানানো হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন প্যারা কমান্ডার ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. এম এম ইমরুল হাসান, র‍্যাব-পুলিশ ও বিজিবির মুখপাত্ররা।