সাত খুনের অধিকতর তদন্ত করা যাবে : হাইকোর্ট

SHARE

784নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ঘটনায় অধিকতর তদন্ত চেয়ে নিহত কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটির করা আবেদনের নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, তদন্ত কর্মকর্তা চাইলে অধিকতর তদন্ত করতে পারবে এবং ষড়যন্ত্রের একটি ধারাও যোগ করতে পারবে। সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আমির হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আবদুল বাসেত মজুমদার। তার  সঙ্গে ছিলেন মন্টু ঘোষ। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মনিরুজ্জামান কবির।

শুনানি চলাকালে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে নারাজি আবেদনের পর ম্যাজিস্ট্রেট বিউটির বক্তব্যের ওপরে যে বিষয়ে পরীক্ষা করেছেন তার আদেশ চেয়েছিলেন হাইকোর্ট। আবেদনকারী পক্ষ গত ১০ ডিসেম্বর ওই আদেশটি আদালতে দাখিল করা হয়।

গত ০১ ডিসেম্বর শুনানির এক পর্যায়ে বেঞ্চের সিনিয়র বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম বলেন, নারায়ণগঞ্জের সাত খুন হত্যা মামলার অভিযোগপত্রে মারাত্মক ত্রুটি আছে। তবে অধিকতর তদন্তের নামে শতভাগ অর্জন করতে গিয়ে যারা কারাগারে রয়েছেন তারা আবার কোনো সুবিধা না নিয়ে নেন। কারণ, দেশের মানুষ তাকিয়ে আছেন, মামলাটির সুষ্ঠু বিচার হোক। নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ঘটনায় নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটির করা মামলায় অধিকতর তদন্তের নির্দেশনার রিট আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আদেশের জন্য আজ  ১৪ ডিসেম্বর দিন ধার্য ছিল। তার আগে গত ৬ ডিসেম্বর উক্ত আবেদনের শুনানি করে আদেশের জন্য ৯ ডিসেম্বর দিন ঠিক করেছিলেন।

গত ২৯ নভেম্বর রিটের ওপার শুনানি শুরু হয়। তার আগে গত ১ ডিসম্বর এই রিটেরে ওপর দ্বিতীয় দিনের শুনানি করেন আইনজীবীরা। গত ২৮ এপ্রিল র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়া হয়।পরে নজরুল ইসলামের স্ত্রী অভিযোগপত্র নিয়ে আপত্তি তুলে তার বিষয়ে বিচারিক আদালতে একটি নারাজি আবেদন করেন। গত ৯ নভেম্বর বিচারিক আদালত উক্ত নারাজি আবেদন খারিজ করে দেন। বিচারিক আদালতের ওই আদেশের বিরুদ্ধে এবং মামলাটির আরও অধিকতর তদন্ত চেয়ে এই ‘ক্রিমিনাল রিভিশন`আবেদন করা হয়েছে।

পরে আইনজীবী মন্টু ঘোষ সাংবাদিকদের বলেন, নজরুল ইসলামের স্ত্রী বিউটির করা মামলায় ৩৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশীট দেয়া হয়েছে। যেখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বাদ পড়ে গেছে। আমরা বিচারিক আদালতে এ বিষয়ে আবেদনে করলে আমাদের আবেদন খারিজ করে দেয়া হয়। তাই গত সোমবার হাইকোর্টে আমরা এ চাঞ্চল্যকর মামলার আবেদনটি দায়ের করি।

গত বছরের ২৭ এপ্রিল দুপুরে কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে অপহরণ করা হয়। ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ছয়জনের এবং ১ মে অপরজনের লাশ পাওয়া যায়। নিহত অপর পাঁচজন হলেন নজরুলের বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন, গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম, চন্দন সরকারের গাড়িচালক মো. ইব্রাহীম। এ ঘটনায় নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম ফতুল্লা মডেল থানায় নূর হোসেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন মিয়া, হাসমত আলী, আমিনুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন ও ইকবাল হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ ছাড়া চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল একই ঘটনায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে একই থানায় আরেকটি মামলা করেন।