সুস্থতা-অসুস্থতা, সুখ-দুঃখ, আনন্দ-ব্যথা সবই আল্লাহর তরফ থেকে হয়ে থাকে। মানুষ অসুস্থ হলে দুঃখ বা ব্যথা পেলে অনেক বিরক্তি প্রকাশ করে। গাল-মন্দ করে এমনকি আল্লাহর ওপর অসন্তুষ্ট হয়। যা একেবারেই ঠিক নয়। অসুস্থ ব্যক্তির করণীয় বিষয়ে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশনামূলক বাণী রয়েছে। তুলে ধরা হলো-
ক. অসুস্থ ব্যক্তির কর্তব্য হলো- আল্লাহর ফয়সালার ওপর সন্তুষ্ট থাকা এবং সাধ্য মোতাবেক ধৈর্য ধারণ করা। স্বীয় প্রভুর প্রতি ভাল ধারণা পোষণ করা। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘মুমিনের জন্য আশ্চর্যের বিষয় হলো- যদি তাকে আদেশ দেয়া হয় সব কর্মই তার কল্যাণকর হয়, আর এটা মুমিনের বৈশিষ্ট্য। তার প্রতি যদি কৃতজ্ঞতাপূর্ণ সুখ-শান্তি আসে, তাহলে সেটা তার জন্য কল্যাণকরই হয়। আর তার প্রতি যদি ধৈর্য ধারণের মতো বিপদ আসে সেটাও তার কল্যাণকর হয়। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী অবশ্যই তোমাদের কেউ মৃত্যুবরণ করলে তখন সে আল্লাহর ওপর ভালো ধারণা রাখে। অর্থাৎ সুখ-দুঃখ
খ. অসুস্থ ব্যক্তির উচিত নিজ কর্মকাণ্ডের জন্য আল্লাহর ভয় এবং রহমত কামনা করা। হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত যে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মৃত্যু শয্যায় শায়িত এক যুবকের নিকট গেলেন, তিনি তাকে বললেন কেমন অনুভব করছ? যুবকটি বলল, আল্লাহর শপথ, হে আল্লাহর রাসুল! আমি আল্লাহর নিকট কামনা করি এবং আমার গুনাহের জন্য ভয় করি। অতপর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, কোনো বান্দার অন্তরে এ স্থানে কেবল দু`টি বস্তু একত্রিত হয়, আল্লাহ তাকে তা দান করেন যা সে কামনা করে এবং নিরাপত্তা দেন যা থেকে সে ভয় করে।
গ. অসুস্থ ব্যক্তির অসুখ যখন খুব বেশি বৃদ্ধি পায় তখন তার মৃত্যু কামনা করা জায়েজ বা বৈধ নয়। যদি একান্ত জরুরি হয়ে পড়ে তখন যেন সে এ বলে আল্লাহর কাছে দোয়া করে-
اَللَّهُمَّ أَحْيِنِي مَا كَانَتِ الْحَيَاةُ خَيْرًا لِيْ – وَ تَوَفَّنِيْ اِذَا كَانَتِ الْوَ فَاةُ خَيْرًا
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা আহইনি মা কানাতিল হায়াতু খাইরান লি, ওয়া তাওয়াফফানি ইজা কানাতিল ওয়াফাতু খাইরান।
অর্থ : হে আল্লাহ! আমার জীবন যতক্ষণ পর্যন্ত কল্যাণকর হয় ততক্ষণ পর্যন্ত আমাকে জীবিত রাখ এবং যখন আমার মৃত্যুর জন্য কল্যাণকর হয় তখন তুমি আমাকে মৃত্যু দান কর।
সুতরাং অসুস্থ হয়ে অধৈর্য হওয়ার কোনো যুক্তিকতা নেই। অসুস্থ অবস্থায় বেশি বেশি আল্লাহর জিকির ও তাওবা ইস্তেগফার করার চেষ্টা করা। উপরোল্লিখিত নিয়মে আল্লাহ সাহায্য কামনা করা। আল্লাহ তাআলা সমগ্র মুসলিম উম্মাহকে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দেখানো পথে ও মতে চলার এবং অসুস্থাবস্থায় আল্লাহর সাহায্য চাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।