বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নির্বাচনের দিন পিছিয়ে আগামী ২৬ আগস্ট ধার্য করে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে সংশোধিত ভোটার তালিকা ৩০ জুলাই প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে ১৩ আগস্ট আইনজীবীদের সনদ প্রদানকারী এই প্রতিষ্ঠানের নির্বাচনের দিন ধার্য ছিল। সংশোধিত ভোটার তালিকা প্রস্তুত না হওয়ায় বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের সময়ের আবেদনের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার নির্বাচন পেছানোর এ আদেশ দেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগ।
এর আগে ভোটার তালিকা সংশোধন করে প্রস্তুতের জন্য আরও সময় প্রয়োজন উল্লেখ করে মঙ্গলবার (০৭ জুলাই) আবেদন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
ভোটার তালিকা পর্যালোচনা করে ১২ জুলাইয়ের মধ্যে তা প্রকাশ এবং ১৩ আগস্ট নির্বাচনের জন্য তারিখ ধার্য করে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগ গত ২৮ মে রায় দেন।
রায়ে বলা হয়, বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যানকে (অ্যাটর্নি জেনারেল) আহবায়ক ও কাউন্সিলের সচিবকে ভোটার তালিকা পর্যালোচনা করে ১২ জুলাইয়ের মধ্যে তা প্রকাশ করতে হবে। আর ভোট হবে ১৩ আগস্ট।
গত ২৫ মার্চ বার কাউন্সিল নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছিল, যাতে ভোটের দিন রাখা হয়েছিল ২০ মে। এরপর ৯ এপ্রিল ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়, যাতে ভোটার সংখ্যা দেখানো হয় ৪৮ হাজার ৪৬৫ জন।
ওই তালিকায় ‘অস্পষ্টতা ও একই নাম একাধিকবার’ থাকার কথা জানিয়ে কাউন্সিলের পাঁচ নির্বাচিত সদস্য এবং ১০১ জন আইনজীবী আলাদাভাবে বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও সচিবকে চিঠি দেন। চিঠিতে তারা তালিকা ঠিক করতে বলেন।
এরপর ১২ মে জরুরি সভা করে ভোটের তারিখ পিছিয়ে ২৭ মে নির্ধারণ করা হয়।
এরপর সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ গত ১৭ মে এ নির্বাচনের তফসিল, ভোটার তালিকা এবং ২০০৩ সালের সংশোধিত বার কাউন্সিল আইনের ৩ নম্বর ধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে দু’টি রিট আবেদন করেন। ২১ মে হাইকোর্ট রুলসহ নির্বাচন তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন।
এরপর হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল দায়ের করে বার কাউন্সিল কর্তৃপক্ষ।
বার কাউন্সিল নির্বাচনে মোট ১৪ জন সদস্য নির্বাচিত হবেন। এর মধ্যে সারা দেশে সনদপ্রাপ্ত আইনজীবীদের ভোটে সাধারণ আসনে সাতজন এবং দেশের সাতটি অঞ্চলের স্থানীয় আইনজীবী সমিতির সদস্যদের মধ্য থেকে একজন করে আরও সাতজন নির্বাচিত করা হবে।
এই ১৪ জন সদস্যের ভোটে নির্বাচিত হবেন বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান। আর অ্যাটর্নি জেনারেল রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা হিসেবে পদাধিকার বলে কাউন্সিলের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন।
এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ থেকে সাধারণ আসনে ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, আবদুল বাসেত মজুমদার, ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, আবদুল মতিন খসরু, পরিমল চন্দ্র গুহ, জেড আই খান পান্না ও শ ম রেজাউল করিম প্রার্থী হয়েছেন।
অপরদিকে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেল থেকে সাধারণ আসনে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেন, কাউন্সিলের বর্তমান এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান এ জে মোহাম্মদ আলী, এনরোলমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ফাইন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ মিয়া, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, মো. বোরহান উদ্দিন ও মহসিন মিয়া প্রতিন্দ্বন্দ্বিতা করছেন।