দলীয় পরিকল্পনা অনুসারেই গোল করেননি গোল মেসিন

SHARE

messi2নেইমার বার্সেলোনায় যোগ দেওয়ার পর থেকে নিজেকে অনেকটাই বদলে ফেলেছেন মেসি। এখন তিনি শুধু গোল করেন না, সতীর্থকে দিয়েও গোল করান। কিন্তু আর্জেন্টিনার জার্সিতে বুধবার যা করলেন, তাতে কোনোকালের মেসির সঙ্গে এই মেসিকে মেলানো যাচ্ছে না।

স্কোর লাইনে আর্জেন্টিনার ছয় গোল। অথচ একটিতেও লিওনেল মেসির নাম থাকবে না! বিশ্বাস করাই কঠিন। কিন্তু অবিশ্বাস্য হলেও এটাই সত্যি যে এই ম্যাচেও গোল পাননি টুর্নামেন্টে মাত্র একবার প্রতিপক্ষের জালে বল পাঠানো আর্জেন্টিনার অধিনায়ক। তাতে অবশ্য খুদে জাদুকরের কৃতিত্ব এতটুকু ম্লান হয়ে যায়নি। দলের ছয় গোলের তিনটিতেই প্রত্যক্ষ অবদান রেখেছেন বার্সেলোনার ফরোয়ার্ড। আরেকটি গোলে রয়েছে তাঁর পরোক্ষ অবদান। এ ছাড়া পুরো ম্যাচে দুরন্ত কিছু পাশ বাড়িয়ে নেপথ্য নায়ক হয়ে উঠেছেন তিনি। মূলত মেসির মায়াবী ছোঁয়ায় তৃপ্তির জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে আলবিসেলেস্তেরা। তর্কহীন ভাবে ফের ম্যান অব দ্য ম্যাচ মেসি। আনন্দের অবসরে বেদনা বা বিষাদের কোনো সুযোগ নেই। নেই আগের মতো ম্যাচের সেরার পুরস্কার প্রত্যাখ্যানের বিতর্কও।

আসলে সবই যে মেসিদের পক্ষেই ঘটলো। আগের ম্যাচে পরকিল্পনা কাজে দেয়নি। বুধবার হয়েছে সবকিছুই গড়াল হিসেবমাফিক। পরিসংখ্যান বলছে অন্যকে দিয়ে গোল করালেও নিজে ঠিকই দুই একটা করে আসেন মেসি। সেই তিনিই কিনা সেমিফাইনালে একটা গোলও করলেন না! সবকটি করালেন রোহো, পাস্তোরে, ডি মারিয়া, হিগুয়েনদের দিয়ে। বোঝা গেল, আর্জেন্টিনার পরিকল্পনা এমনটাই ছিল। আগের ম্যাচগুলিতে মেসিকে দিয়ে গোল করানোর চেষ্টা কাজে আসেনি। প্রতিপক্ষ মেসির দিকে বাড়তি নজর রেখে খেলেছে। সেমিফাইনালেও মেসিকে ঠেকাতে প্যারাগুয়ে মিডফিল্ডে পাঁচ জনকে নামিয়ে ভিড় বাড়িয়েছিল। মেসির পিছনে ছিল একজন। আর সাপোর্টে দু’জন। মেসি তাই এদিন আর গোল করায় নজর দেননি। বরং সতীর্থদের সামনে জায়গা ফাঁকা করে দিতে ডিপ-মিডফিল্ডে নেমে আসেন চারবারের ফিফা বর্ষসেরা মহাতারকা। অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবে দলের আক্রমণভাগকে লোপ্পা সন্দেশের মতো বল সাজিয়ে গিয়েছেন একের পর এক, যা কাজে লাগাতে ভুল করেননি ডি মারিয়ারা।

নিজে গোলবঞ্চিত হলেও ম্যাচ শেষে ঠিকই নিঃস্বার্থ ফুটবলের প্রতিদান পেয়ে গেছেন মেসি। নির্বাচিত হয়েছেন ম্যাচের সেরা। আর্জেন্টিনার কোচ জেরার্দো মার্টিনো বলছিলেন, ‘আমি মনে করি, খুশি হওয়ার জন্য মেসির মতো সৃজনশীল ফুটবলারের গোল স্কোরার হওয়ার প্রয়োজন নেই।’ আর্জেন্টিনা দলে মেসির আসল ভূমিকা প্লে মেকারের। সেমিফাইনালে এই দায়িত্বটা দারুণভাবে পালন করেন বার্সার মহাতারকা। উচ্ছ্বসিত মার্টিনোর যুক্তি, ‘মেসি যদি পাস বাড়ায় এবং সেটা গোলে পরিণত হয়, তাহলে কোনো সমস্যা নেই। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, সে সবসময় ম্যাচের চাহিদা অনুযায়ী সাড়া দেয়। ওকে দেখে আমার উদ্বিগ্ন মনে হয় না। ওর খেলায় আমি সত্যিই মুগ্ধ। এমনকি মেসি নিজেও দারুণ খুশি ওর পারফরম্যান্সে। গোল না পাওয়া নিয়ে ওর কোনো সমস্যাই নেই।’ মেসির পাশাপাশি জেভিয়ার পাস্তোরেরও ভূয়সী প্রশংসা করেন আর্জেন্টিনা কোচ।