আইপিএল স্পট-ফিক্সিংয়ে জড়িত রায়না-জাদেজা: মোদি

SHARE

ipl rainaভারতের রাজনীতি তোলপাড় করে ভারতীয় ক্রিকেটেও হানা দিলেন ললিত মোদি। বা বলা ভালো, মোদির একটি ই-মেল। যা এ দিন সোশ্যাল মিডিয়ায় ফাঁস হয়ে গিয়ে রীতিমতো ঝড় তুলে দিল ক্রিকেট মহলে।

ফাঁস হওয়া সেই ই-মেল করা হয়েছিল আইসিসি সিইও ডেভ রিচার্ডসনকে। দু’বছর আগে। প্রেরকের জায়গায় রয়েছে ললিত মোদির নাম। যেখানে তিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারকে ২০১৩-র আইপিএল কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে ফেলা হয়। এদের মধ্যে দু’জন ভারতীয়- সুরেশ রায়না ও রবীন্দ্র জাডেজা। তৃতীয় জন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ডোয়েন ব্র্যাভো।

বিতর্কিত ই-মেলে রিচার্ডসনকে মোদি লিখেছিলেন, ‘‘এই মাত্র কিছু তথ্য পেলাম, যা আপনাকে জানাতে চাই। প্রয়োজন মনে করলে আপনি এই তথ্য এসিএসইউ-কে জানাতে পারেন।’’ এর পরই তিন ক্রিকেটারের নাম করে মোদি লেখেন, ‘‘সুরেশ রায়না, রবীন্দ্র জাডেজা ও ডোয়েন ব্র্যাভো এই তিন জন রিয়াল এস্টেট টাইকুন এইচডিআইএল-এর বাবা দিওয়ানের খুব ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। ইনি বেশ বড় মাপের জুয়াড়ি এবং বুক মেকারও। আমি তাকে আইপিএলের কোনো টিমের জন্য বিড করতে দিইনি। ইনি গুরু এবং রাজ কুন্দ্রারও ঘনিষ্ঠ বন্ধু।’’

তিন ক্রিকেটারকে বিশাল অঙ্কের উপহার দিয়েছেন ওই ব্যক্তি বলে দাবি করে মোদি আইসিসি কর্তাকে লেখেন, ‘‘নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে জানতে পেরেছি লোকটা রায়নাকে দিল্লির বসন্ত বিহার ও নয়ডায় ফ্ল্যাট এবং জাডেজাকে বান্দ্রায় সমুদ্রমুখী একটি ফ্ল্যাট দিয়েছে।’’

ডোয়েন ব্র্যাভোকে মোটা অঙ্কের নগদ উপহার দেওয়া হয়েছিল বলে ওই ই-মেলে দাবি করা হয়েছে। প্রত্যেক ক্রিকেটারের জন্য বাবা দিওয়ান প্রায় কুড়ি কোটি টাকা খরচ করেন বলে ই-মেলে মোদি দাবি করেন। মেল শেষ করেন এভাবে, ‘‘আশা করি এগুলো সত্যি নয়। তবে সত্যি হলে ধরতে হবে আরও অনেকে এতে জড়িত। বাবাকে কড়া নজরে রাখা দরকার। প্রতি ম্যাচে লোকটা নাকি ১০ থেকে ২০ মিলিয়ন ডলার বেট করে।’’

এই ই-মেলটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে জনৈক শ্যাম স্বামীর টুইট মারফত। তিনি মেলটি তুলে ধরে মোদির কাছে জানতে চান, ‘‘এটা নিয়ে আপনি কী বলবেন ললিত মোদি? আইসিসি-র জবাব কী ছিল? সেই টুইটের উত্তরে মোদি এই ই-মেলের লিঙ্ক পোস্ট করে জবাব দেন, ‘‘আমাকে কেন জিজ্ঞাসা করছেন? আইসিসি, বিসিসিআই, আইপিএল-কে জিজ্ঞাসা করুন। এটা খুব গোপনীয় একটা মেল। আপনার এটা টুইট করা উচিত নয়।’’

নিজেকে ক্রিকেটপ্রেমী হিসেবে ঘোষণা করা এই ব্যক্তির টুইটার হ্যান্ডলে অবশ্য আর কোনো টুইট পাওয়া যায়নি। একটি মাত্র টুইট তিনি করেছেন, যেখানে মোদির ই-মেলের কথা বলা হয়েছে। টুইটারেই অন্য এক ব্যক্তি মোদিকে সরাসরি প্রশ্ন করেন, ‘‘আপনার ই-মেল অন্য কেউ কী ভাবে ফাঁস করে দিল?’’ তার জবাবে মোদি বলেন, ‘‘নিশ্চয়ই আইসিসি এই ই-মেল ফাঁস করেছে।’’

মোদির এই টুইটের পর ভারতীয় ক্রিকেট মহলে ঝড় উঠলেও কোনো মহল থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তিন অভিযুক্ত ক্রিকেটারই চেন্নাই সুপার কিংসের। ভারতীয় বোর্ডও কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। এখন দেখার, চাঞ্চল্যকর ই-মেল ফাঁস হওয়ার পর বোর্ড কী ভাবে ব্যাপারটা সামলায়। অভিযুক্ত ক্রিকেটারদের বিরুদ্ধে আদৌ কোনো পদক্ষেপ করা হয় কি না।