তখন তো আর এখনকার মতো ফিল্টার ছিল না। বাড়ির বয়স্ক মানুষটিকে দেখা যেত, পানিতে এক টুকরো ফিটকিরি ফেলে নিশ্চিন্ত হতেন। পানি পরিস্রুত হয়ে, নোংরা থিতিয়ে পড়ত নীচে। বা, দাড়ি কাটতে গিয়ে ব্লেডে গালটা আচমকা কেটে গেলে, স্যাভলন বা কোনো আফটারসেভের খোঁজ পড়ত না। হাতের কাছে থাকা ফিটকিরির ডেলা গালে ঘষে নিতেন। ব্যস, রক্ত বন্ধ। এমন প্রচুর গুণ কিন্তু রয়েছে ফিটকিরির।
সর্বঘটের কাঁঠালি কলা: তা আপনি বলতেই পারেন। আগে তো বাড়ির মেয়েরা রূপচর্চা করতেও ফিটকিরি ব্যবহার করতেন। তার কারণ, বলিরেখা পড়তে দেয় না। তা ছাড়া, যেহেতু অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, তাই দাঁতের রোগেও কিন্তু ফিটকিরি ভালো কাজ দেয়।
আঙুলে হাজা: অতিরিক্ত পানি ঘাঁটার কারণে হাতে হাজা হলে, বা, পায়ের পাতা ফুললে, নিশ্চিন্তে ফিটকিরি ব্যবহার করতে পারেন। এক টুকরো ফিটকিরি পানিতে ফেলে, পানিটা ভালো করে গরম করে নিন। ঠান্ডা হয়ে গেলে, পা চুবিয়ে রাখুন। আরাম পাবেন।
হঠাৎ রক্ত: দাড়ি কাটতে গিয়ে গালটা কেটে গেলে, সেলুনে এখনও ফিটকিরি ঘষে দেয়। যদি, গাল কাটাই নয়, যেকোনো আঘাতে রক্তপাত হলে, সেখানে ফিটকিরি চূর্ণ করে দিয়ে দিন। কিছুক্ষণের মধ্যেই রক্ত বেরোনো বন্ধ হবে।
টনসিলে আরাম: ঠান্ডা লেগে গলায় ব্যথা হলে বা গ্ল্যান্ড ফুললে, গরম পানিতে এক চিমটে নুন ও ফিটকিরি চূর্ণ মিশিয়ে, দিনে কয়েকবার গার্গেল করুন। স্বস্তি পাবেন।
ব্রন-ফুসকুড়ি: মুখে ব্রন-ফুসকুড়ি হচ্ছে? মুখ ড্রাই হয়ে, চামড়া কুঁচকে যাচ্ছে? চিন্তা করবেন না। ভালো করে মুখ ধুয়ে নিয়ে, সারা মুখে অনেকক্ষণ ধরে ফিটকিরি ঘষুন। বা ফিটকিরি চূর্ণ পানিতে গুলে, মুখে মাখুন। শুকিয়ে গেলে, কিছুক্ষণ পর মুখটা ধুয়ে ফেলুন। এভাবে কিছু দিন করলে, মুখে ঊজ্জ্বলতা ফিরবে। ব্রন-ফুসকুড়ির হাত থেকেও মুক্তি পাবেন।
দাঁতে যন্ত্রণা: দাঁতের যন্ত্রণায় ভুগেছেন? বা, মুখ দিয়ে দুর্গন্ধ বেরোচ্ছে? সব মাজনে চেষ্টা করেও, মুখের গন্ধ যাচ্ছে না? তাই কী করবেন, বুঝে উঠতে পারছেন না? আপনাকে এই সমস্যার হাত থেকে মুক্তি দিতে পারে ফিটকিরি। গরম পানিতে ফিটকিরি গুলে নিয়ে, কুলকুচি করুন। আপনি দাঁতের যন্ত্রণার হাত থেকে নিশ্চিতভাবেই মুক্তি পাবেন। মুখের দুর্গন্ধ নিয়ে লজ্জায় পড়তে হবে না
ঘেমে গোসল: গরমে ঘাম তো হবেই। কিন্তু, যারা খুব বেশই ঘামেন, পরনের জামা চুপচুপে হয়ে ভিজে যায়, তাদের এই বিরক্তিকর অবস্থার হাত থেকে স্বস্তি দিতে পারে এক টুকরো ফিটকিরি। গোসলের সময় এক টুকরো ফিটকিরি পানিতে ভালো করে মিশিয়ে, গায়ে ঢেলে দিন। কিছু দিন এভাবেই গোসল করুন। স্বস্তি মিলবে।