মুজাহিদের সঙ্গে সাক্ষাতে আইনজীবীরা

SHARE

muzahidমুক্তিযুদ্ধকালে বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আলবদর বাহিনীর অন্যতম নেতা আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের সঙ্গে কারাগারে সাক্ষাৎ করতে গেছেন তাঁর আইনজীবীরা।

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মুজাহিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে শনিবার বেলা ১১টার পর তার পাঁচ আইনজীবী ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে যান।

মুজাহিদের আইনজীবী শিশির মনির সকাল নয়টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, দেশের সর্বোচ্চ আদালতে মুজাহিদের ফাঁসির সাজা বহাল থাকার পর করণীয় নিয়ে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেলের সঙ্গে তারা আলোচনা করতে যাচ্ছেন।

মুজাহিদের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়া আইনজীবী দলে শিশির মনির ছাড়া রয়েছেন মশিউল আলম, কামাল উদ্দিন, নজিবুর রহমান ও মতিউর রহমান আকন্দ।

স্বাধীনতার ৪৪ বছর পর বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে মুজাহিদের ফাঁসির সাজা সম্প্রতি বহাল রেখে রায় দিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। গত মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ওই রায় দেন। এই রায়ে নিশ্চিত হয়েছে, মুজাহিদ যুদ্ধাপরাধী এবং বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের দায়ে তার সর্বোচ্চ সাজাই প্রাপ্য।

বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের সমাজকল্যাণমন্ত্রী মুজাহিদকে ২০১৩ সালের ১৭ জুলাই বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে সর্বোচ্চ সাজা দিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। ‘বাংলাদেশে কোনো যুদ্ধাপরাধী নেই, অতীতেও ছিল না’—এই দম্ভোক্তি করা মুজাহিদ নিজেই যুদ্ধাপরাধী প্রমাণিত হন সেদিন। খালাস চেয়ে ট্রাইব্যুনালের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছিলেন তিনি। কিন্তু বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের দায়ে আপিলেও তার সর্বোচ্চ সাজা বহাল থাকে।

এর আগে আপিল বিভাগ মানবতাবিরোধী অপরাধের তিনটি মামলার রায় দিয়েছেন। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ইতিমধ্যে জামায়াতের দুই সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। আর জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী আমৃত্যু কারাদণ্ড ভোগ করছেন।

চূড়ান্ত রায়েও মুজাহিদের ফাঁসি বহাল থাকায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। তবে আসামিপক্ষ দাবি করেছে, তারা ন্যায়বিচার পায়নি। রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি পেলে তারা রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করবে।

নিয়ম অনুসারে, পূর্ণাঙ্গ রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করতে পারবেন মুজাহিদ। এতেও যদি দণ্ড বহাল থাকে, তাহলে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার সুযোগ পাবেন তিনি। সব ধরনের আইনি প্রক্রিয়া শেষ হলে সাজা কবে ও কীভাবে কার্যকর হবে, তা ঠিক করবে সরকার।