জাতীয় সংসদে ২০১৪-১৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উথাপন করছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫০ হাজার ৫০৬ কোটি টাকা। এটি ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনপরবর্তী বর্তমান সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম বাজেট।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী ৩টা ৩৭ মিনিটে বাজেট উত্থাপন শুরু করেছেন। ২০১৪-১৫ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত এ বাজেট দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বাজেট ।
দেশের ৪৪তম এ বাজেট অধিবেশনে সভাপতিত্ব করছেন স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরী ।
গতবারের ন্যায় এবারো উচ্চভিলাষী বাজেট ঘোষণা করছেন অর্থমন্ত্রী। প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি রাখা হয়েছে ৬৭ হাজার ৫৫২ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৫ শতাংশ, প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৭.৩ শতাংশ।
সূত্র জানায়, ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ, বেসরকারি খাতের আস্থা, প্রযুক্তি খাত, সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ (এফডিআই), পদ্মা সেতু প্রকল্প, শিক্ষার মান বাড়ানো, মেট্রোরেল প্রকল্প, বুড়িগঙ্গা নদী দূষণমুক্ত করা, ডিজিটাল ভূমি জরিপ ব্যবস্থা, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীতসহ অন্তত ৩০টি খাততে গুরুত্ব দিয়ে আগামী বাজেট প্রণয়ন করা হয়েচে।
জানা গেছে, প্রস্তাবিত বাজেটে দশ জেলার নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ কর সুবিধা প্রদান করা হয়েছে। জেলা গুলো হলো- রাজশাহী, খুলনা, সিলেট ও রংপুর জেলার সিটি কর্পোরেশন বহির্ভূত এলাকা এবং রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি। তবে ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রাম জেলার ক্ষেত্রেও এটা প্রযোজ্য হবে।
এ জেলাসমূহের নতুন উদ্যোক্তারা বাণিজ্যিকভাবে পণ্য উৎপাদনের প্রথম ১০ বছর পর্যন্ত বিশেষ কর সুবিধা পাবেন। এর মধ্যে প্রথম ২ বছর শতভাগ কর অবকাশ সুবিধা দেওয়া হবে। পরবর্তীতে তৃতীয় বছরে ৭০ শতাংশ, চতুর্থ বছরে ৫৫ শতাংশ, পঞ্চম বছরে ৪০ শতাংশ, ষষ্ঠ বছরে ২৫ শতাংশ এবং সপ্তম থেকে দশম বছর পর্যন্ত ২০ শতাংশ হারে কর অবকাশ সুবিধা পাবেন উদ্যোক্তারা।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বাজেটের সংক্ষিপ্তসার, বার্ষিক আর্থিক বিবৃতি, সম্পূরক আর্থিক বিবৃতি, মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি, ডিজিটাল বাংলাদেশের পথে অগ্রযাত্রা: হালচিত্র ২০১৪, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত উন্নয়ন: সাফল্যের অগ্রযাত্রা, রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা: উন্নয়নের পথে অভিযাত্রা, বাংলাদেশে দারিদ্র্য ও অসমতা: উত্তরণের পথে যাত্রা, পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন ও বিকাশ, জেলাভিত্তিক বাজেট বরাদ্দ ২০১৪-১৫ (সিলেট, খুলনা, চট্টগ্রাম, টাঙ্গাইল, বরিশাল, রাজশাহী ও রংপুর জেলা), জেন্ডার বাজেট প্রতিবেদন, সংযুক্ত তহবিল প্রাপ্তি, অর্থনৈতিক সমীক্ষা, মঞ্জুরি ও বরাদ্দের দাবিসমূহ (অনুন্নয়ন ও উন্নয়ন), মঞ্জুরি ও বরাদ্দের দাবিসমূহ (উন্নয়ন) এবং মধ্যমেয়াদি বাজেট কাঠামো উত্থাপন করছেন ।
অন্যদিকে ২০১৪-১৫ অর্থবছরের প্রস্তাাবিত বাজেটে রিকন্ডিশন গাড়ির দাম কমছে। এ জন্য বাজেটে সিসি স্লাব পুনর্বিন্যাসসহ সম্পূরক শুল্কহার কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে গাড়ির দাম ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
বাজেটে ১৫০০ সিসি পর্যন্ত মোটরগাড়ির সম্পূরক শুল্কহার নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৫ শতাংশ। ১৫০১ থেকে ২০০০ সিসি পর্যন্ত ১০০ শতাংশ, ২০০১ থেকে ২৭৫০ সিসি পর্যন্ত ২০০ শতাংশ, ২৭৫১ সিসি থেকে ৪০০০ সিসি পর্যন্ত ৩৫০ শতাংশ ও ৪০০০ সিসির ঊর্ধ্বে গাড়ির জন্য ৫০০ শতাংশ সম্পূরক শুল্কহার ধার্য করা হয়েছে।
চলতি ২০১৩-১৪ অর্থবছরের বাজেটে রিকন্ডিশন গাড়ির ক্ষেত্রে ছয় স্তরবিশিষ্ট সিসি স্লাব ছিল। ১৫০১ থেকে ১৭৫০ সিসি পর্যন্ত ১০০ শতাংশ, ১৭৫১ থেকে ২০০০ সিসি পর্যন্ত ১৫০ শতাংশ, ২০০১ সিসি থেকে ২৭৫০ সিসি পর্যন্ত ৩৫০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক নির্ধারিত ছিল।