আফগানিস্তানের খোস্ত অঞ্চলে মধ্যরাতের এক বিমান হামলার পর দুই প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সীমান্তে আবারও উত্তেজনা বেড়েছে।
কাবুল জানায়, ওই হামলায় এক নারীসহ মোট ১০ জন সাধারণ মানুষ মারা গেছেন, যাদের মধ্যে ৯ জনই শিশু। হামলার জন্য ইসলামাবাদকে দায়ী করলেও পাকিস্তান সব অভিযোগ নাকচ করেছে।
দীর্ঘদিন ধরেই দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি নাজুক অবস্থায় টিকে আছে। সাম্প্রতিক হামলার পর দুপক্ষ একে অপরকে আলোচনায় অচলাবস্থার জন্য দায়ী করছে, যা পরিস্থিতিকে আরও কঠিন করে তুলেছে।
তালেবান সরকারের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ জানিয়েছেন, খোস্তের গুরবুজ জেলায় সোমবার গভীর রাতে বোমা হামলা চালানো হয়। তার দাবি, পাকিস্তানি বাহিনী এক পরিবারের বাড়িতে বোমা নিক্ষেপ করে শিশুদের মৃত্যু ঘটিয়েছে। তালেবান আরও অভিযোগ করছে—কুনার ও পাকতিকা প্রদেশেও সমপর্যায় সীমান্তবাহিনী হামলা চালিয়েছে, যাতে কয়েকজন আহত হয়েছেন।
এর মাত্র এক দিন আগে পেশোয়ারে পাকিস্তানের ফেডারেল কনস্ট্যাবুলারি বাহিনীর সদর দপ্তরে আত্মঘাতী হামলা হয়। পাকিস্তানি গণমাধ্যম বলছে, হামলাকারীরা আফগান নাগরিক। টিটিপির সংশ্লিষ্ট একটি গোষ্ঠী এই হামলার দায় নিয়ে প্রকাশ্যে বিবৃতি দিয়েছে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট এটিকে “বিদেশি মদদপুষ্ট উগ্রপন্থীদের” কাজ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
পাকিস্তান দাবি করছে, দেশটিতে সাম্প্রতিক বেশ কয়েকটি হামলা আফগান ভূখণ্ডের নির্দেশনায় পরিচালিত হয়েছে।
২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতায় ফেরার পর থেকেই দুই দেশের সম্পর্ক ক্রমাগত অবনতির দিকে। গত বছর সীমান্তে সংঘর্ষে বহু প্রাণহানি হওয়ায় পরিস্থিতি আরও সংকটময় হয়। তুরস্ক ও কাতারের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি হলেও স্থায়ী সমঝোতা হয়নি। মূল বিরোধের জায়গা—পাকিস্তানের দাবি, টিটিপি যোদ্ধারা আফগানিস্তানের অভ্যন্তর থেকে হামলা চালাচ্ছে; অন্যদিকে তালেবান বলছে, পাকিস্তান নিজেই আফগানবিরোধী কিছু গোষ্ঠীকে প্রশ্রয় দেয়।
নিজেদের ভূখণ্ডে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তান। সাম্প্রতিক এক বিবৃতিতে দেশটির সেনাবাহিনী জানিয়েছে—খাইবার পাখতুনখোয়ার বান্নু জেলায় চালানো এক অভিযানে ২২ জন টিটিপি সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে।




