কোনো না কোনো গোষ্ঠী দেশকে আনস্টেবল করতে চাইছে : রুমিন ফারহানা

SHARE

বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেছেন, বাংলাদেশে গত ৫ দিনে তিনটি জায়গায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হয়েছে। একটা হচ্ছে মিরপুরে ফ্যাক্টরিতে। সেখানে ১৬ জন মারা গেছে। তারপরে চট্টগ্রামে ইপিজেডে।
আর আজকে (শনিবার) যেটা হলো বিমানবন্দরের কার্গোতে। এই তিনটি জায়গাই বাংলাদেশের অর্থনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তো কেউ না কেউ চাইছে, কোনো না কোনো গোষ্ঠী চাইছে, বাংলাদেশকে আনস্টেবল করে দিতে এবং নির্বাচনটিকে সামনে রেখে বাংলাদেশ দীর্ঘ দীর্ঘ ১৭ বছর পর একটা নির্বাচনের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে। এই নির্বাচনটা ঘিরে নানা রকম ষড়যন্ত্র আছে।
আমি কোনো দলের কারো রেফারেন্স দেব না। কারণ বিএনপির রেফারেন্স দিলে আমি বিএনপি করি। এনসিপি রেফারেন্স দেব না। আমি জামায়াতের রেফারেন্সও দেব না।
আমাদের প্রধান উপদেষ্টার রেফারেন্স শোনেন। তিনি প্রায়ই বলেন এবং তার সঙ্গে যারা কাজ করেন, তাদেরকে আমরা বলতে শুনি, নির্বাচনটিকে ঘিরে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র আছে এবং এই যে একটার পর একটা নাশকতা, মাত্র ৫ দিনের ব্যবধানে বাংলাদেশের অর্থনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত এবং আরো প্রিসাইসলি বলতে গেলে বাংলাদেশের পোশাক শিল্প যেটার উপরে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি বৈদেশিক মুদ্রা আয় নির্ভর করে, রেমিট্যান্সের পরেই মানে প্রবাসীদের আয়ের পরেই সেই জায়গাটিতে আঘাত করা।

শনিবার (১৮ অক্টোবর) দেশের এক বেসরকারি টিভি চ্যানেলের টকশোতে এসব কথা বলেন তিনি।

রুমিন ফারহানা বলেন, জুলাই সনদ সইয়ের দিন যেটা হয়েছে, সেটাও খুবই দুঃখজনক। এতে সরকারের অবহেলা ছিল, গভীর অবহেলা ছিল, অব্যবস্থাপনা ছিল, সমন্বয়হীনতা ছিল।
সরকারের মধ্যে দায়িত্ব-জ্ঞানহীনতা ছিল। চার-পাঁচটা মূল পলিটিক্যাল পার্টিকে সামনে রেখে আরো অন্যান্য বেশ অনেকগুলো পলিটিক্যাল পার্টি সেখানে অংশ নিয়েছে। সম্ভবত ২৫টা রাজনৈতিক দল অংশ নিয়েছে এবং দুজন দুজন করে ৫০টা সই সম্ভবত হয়েছে, আরো বেশি। এতগুলো সই হতে পারল। এতগুলো পলিটিক্যাল পার্টি সেখানে গেল। তাদের আবার একেকটা দল তাদের পছন্দের লোকজনকেও সেখানে পাঠিয়েছে। কিন্তু যারা সরাসরি ওই সময় মাঠে ছিল তাদের কাউকে কি নেওয়ার সুযোগ ছিল না?

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ যেটা বলেছেন, সেই বিষয়টা মানে সেই বাক্যটা এই যে ফ্যাসিবাদের দোসর যেটা আসলে আমরা এনসিপির কাছ থেকে অনেক সময় শুনি যে যাকে-তাকে, যেকোনো জায়গায় ফ্যাসিবাদের দোসর ঢুকিয়ে দেওয়া, সালাউদ্দিন আহমেদের বক্তব্যটাকে আপনি কি আসলে সেন্সিবল মনে করেন কি না? সেনসিটিভ মনে করেন কি না? এমন প্রশ্নে রুমিন ফারহানা বলেন, বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করবার জন্যে যেই যেই পক্ষগুলো সত্যিকার অর্থেই কাজ করছে আওয়ামী লীগ ডেফিনেটলি তাদের মধ্যে এক নাম্বারে থাকবে। কেন থাকবে? কারণ আওয়ামী লীগের জন্য এটা প্রমাণ করা এখন একটা চ্যালেঞ্জ যে তাদের চলে যাওয়ার পরে বাংলাদেশের অবস্থা অনেক বেশি খারাপ হচ্ছে। তাদের জন্য এটা প্রমাণ করা বিশ্বকে দেখানো একটা অনেক বড় চ্যালেঞ্জের বিষয় যে আওয়ামী লীগের সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এরকম হয়নি। আওয়ামী লীগের সময় বড় কোনো অনুষ্ঠান আয়োজনকে সামনে রেখে এরকম ভাঙচুর, মারপিট, পুলিশের টিয়ারশেল নিক্ষেপ, সোয়াট বাহিনীকে ডেপ্লয় করা, আর্মি নিয়ে আসা- এগুলো কখনো হয়নি। এখন হচ্ছে। তাই এই যে বাংলাদেশ একটা ফেইল স্টেটের দিকে যাচ্ছে, বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বলতে কিছু নাই, বাংলাদেশে মবোক্রেসি কায়েম হয়েছে- এটা তো এখন যদি সত্যিকার অর্থেই কেউ দেখানোর চেষ্টা করে সেটা আওয়ামী লীগ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতে যদি নির্বাচন না হয়, সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে আওয়ামী লীগ। এই নির্বাচনটাকে যদি পিছিয়ে দেওয়া যায় বা অনির্দিষ্ট সময়ের দিকে ঠেলে দেওয়া যায়, ড. মুহাম্মদ ইউনূস ফেব্রুয়ারির পর থাকবেন না। উনি স্পষ্টই বলেছেন যে উনি চলে যাবেন ফেব্রুয়ারির পর। তাহলে থার্ড কোনো পক্ষ আসবে, তৃতীয় কোনো গ্রুপ আসবে- সেই গ্রুপটা আবার কত বছর থাকবে, বা কীভাবে বাংলাদেশকে কোন পথে নিতে চাইবে- এটা আমরা এখনো জানি না। কিন্তু যতই সময় যাবে, এটুকু আমরা সবাই বুঝি, আওয়ামী লীগ কিন্তু সময় পাবে। তার দল গোছানোর, তার ভোটার গোছানোর, তার নতুনভাবে আবার বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক হওয়ার জন্য সময় পাবে। এই সময়টা তারা নিতে চাইবে। এটা খুব স্বাভাবিক।