ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের যেসব মৃতদেহ ফেরত দিয়েছে তার মধ্যে ১২০টি নিয়ে মানবাধিকার সংস্থা ও চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, এসব মৃতদেহে ‘নির্যাতনের স্পষ্ট প্রমাণ’ এবং এমনকি অনেক মৃতদেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
গাজার সরকারি গণমাধ্যম কার্যালয় জানিয়েছে, প্রাথমিক পরীক্ষায় দেখা গেছে, ফেরত পাওয়া বেশির ভাগ মৃতদেহে পদ্ধতিগত নির্যাতন, মাঠে গুলি করে হত্যা এবং গাড়িচাপা দিয়ে পিষে ফেলার চিহ্ন পাওয়া গেছে। খবর মিডল ইস্ট আইয়ের।
এই দেহগুলো তিন ধাপে ফেরত দেওয়া হয়— মঙ্গলবার ৪৫টি, বুধবার আরো ৪৫টি এবং বৃহস্পতিবার ৩০টি।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মুনির আল-বুরশ এক্সে লিখেছেন, মৃতদেহগুলো পশুর মতো বাঁধা ছিল। চোখ বাঁধা এবং তাতে ভয়াবহ নির্যাতন ও দগ্ধতার চিহ্ন রয়েছে। এসব বিষয় গোপনে সংঘটিত অপরাধগুলোর প্রকৃত মাত্রা প্রকাশ করে।
তিনি আরো বলেন, তারা স্বাভাবিকভাবে মারা যাননি। হাত-পা বাঁধার পর তাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তাঁদের দেহ মাটিতে কবর দেওয়া হয়নি, বরং ইসরায়েলি বাহিনী তাদের মৃতদেহ রেফ্রিজারেটরে মাসের পর মাস ধরে রেখেছিল। অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া কিছু গ্রাফিক ছবি ও ভিডিওতে দেখা গেছে, দড়ি দিয়ে বাঁধা ও চোখে কাপড় বাঁধা অবস্থায় পচে যাওয়া দেহ, যেগুলোতে শারীরিক নির্যাতনের সুস্পষ্ট চিহ্ন রয়েছে।
কিছু ভিডিওতে দেখা যায়, ফিলিস্তিনিরা স্ক্রিনে মৃতদেহগুলোর ছবি দেখে প্রিয়জনদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছেন।
ইউরো-মেড হিউম্যান রাইটস মনিটর জানিয়েছে, ফেরত পাওয়া মৃতদেহগুলোর অনেকের গলায় দড়ির দাগ, হাত-পায়ে প্লাস্টিকের বাঁধন, চোখ বাঁধা, কাছ থেকে গুলির ক্ষত এবং ট্যাংকচাপায় পিষে যাওয়ার চিহ্ন রয়েছে।
তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি সামরিক, সরকারি ও গণমাধ্যমের ভাষণে ফিলিস্তিনিদের অমানবিক করে তোলা হয়েছে। তাদের নির্মূলযোগ্য জনগোষ্ঠী হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। সংস্থাটি আরো বলেছে, এই মনোভাব মাঠ পর্যায়ে এমন সহিংস আচরণের রূপ নিয়েছে।