গাজা যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে লন্ডনের একটি মর্যাদাপূর্ণ সরকারি প্রতিরক্ষা ইনস্টিটিউটে ইসরায়েলি নাগরিকদের ভর্তি নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ব্রিটিশ গণমাধ্যম সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে।
দ্য টাইমস ও টেলিগ্রাফ পত্রিকা জানিয়েছে, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত দ্য রয়াল কলেজ অব ডিফেন্স স্টাডিজ আগামী বছর থেকে ইসরায়েলি শিক্ষার্থীদের ভর্তি বন্ধ করবে।
কলেজের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যের ডিফেন্স একাডেমির অংশ এই স্নাতকোত্তর কলেজ ‘সশস্ত্র বাহিনী ও সিভিল সার্ভিসের মধ্যে কৌশলগত চিন্তাবিদ ও নেতাদের’ প্রশিক্ষণ প্রদান করে, যেখানে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট কোর্সে অংশগ্রহণের অনুমতি রয়েছে।
ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জুনে পার্লামেন্টকে নিশ্চিত করেছিলেন, কলেজটি ‘যুদ্ধবহির্ভূত একাডেমিক কোর্স’ ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর ‘পাঁচজনেরও কম’ সদস্যদের জন্য সরবরাহ করছে।
মন্ত্রণালয় তৎক্ষণাৎ এ বিষয়ে এএফপির অনুরোধে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক আমির বারাম এই সিদ্ধান্তকে ‘বৈষম্যমূলক’ ও ‘যুদ্ধরত মিত্রের প্রতি অবিশ্বাস’ হিসেবে সমালোচনা করেছেন, যিনি নিজেও ওই কলেজে অধ্যয়ন করেছেন।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বারাম ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে লেখা একটি চিঠিতে বলেছেন, ‘সত্যি বলতে, ইসরায়েলের বহিষ্কার ব্রিটিশ নিরাপত্তার স্ব-বিনাশের কাজ ছাড়া কিছু নয়।
’
এদিকে ব্রিটেন গাজায় ব্যবহৃত অস্ত্রের জন্য ইসরায়েলে অস্ত্র রপ্তানির কিছু লাইসেন্স স্থগিত করেছে। তবে ইসরায়েলের এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানগুলোর যন্ত্রাংশের মতো যুক্তরাজ্যে উৎপাদিত কিছু জিনিসকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
গত সপ্তাহে লন্ডনে অনুষ্ঠিত একটি বড় অস্ত্র মেলায় ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা হয়। কারণ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার তার সরকার ও হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধের মধ্যে দূরত্ব বজায় রাখতে চেষ্টা করছেন।
তবু ৫১টি ইসরায়েলি অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান প্রদর্শনীতে অংশ নেয়, যার মধ্যে প্রধান অস্ত্র নির্মাতা এলবিটও রয়েছে। এর জন্য প্রদর্শনীর বাইরে ফিলিস্তিনপন্থীরা বিক্ষোভ করে। লন্ডন গাজায় ইসরায়েলের প্রায় দুই বছরের সামরিক অভিযান আরো তীব্র করার সাম্প্রতিক চেষ্টাকে ‘ভুল’ হিসেবে সমালোচনা করেছে।