ইসরায়েলে যাচ্ছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

SHARE

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ইসরায়েলে যাচ্ছেন। গত সপ্তাহে কাতারে ইসরায়েলি হামলাকে কেন্দ্র করে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষিতে তিনি দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করবেন।

রাজধানী দোহায় হামাস নেতাদের ওপর নজিরবিহীন হামলার জন্য ইসরায়েলকে ট্রাম্পের সমালোচনার পর রবিবার শুরু হওয়া রুবিওর সফরটি হচ্ছে।ইসরায়েলে রওনা হওয়ার আগে রুবিও সাংবাদিকদের বলেন, যদিও ট্রাম্প এই হামলায় ‘খুশি নন’, তবে এটি ‘আমাদের ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কের প্রকৃতি পরিবর্তন করবে না।

তিনি জানিয়েছেন, এই হামলার প্রভাব নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল আলোচনা করবে, বিশেষ করে গাজায় যুদ্ধের জন্য একটি যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টার ব্যাপারে।

তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট চান এটি শেষ হোক। আর শেষ হওয়া মানে ৪৮ জন জিম্মিকে একবারে মুক্তি দেওয়া। হামাসের আর কোনো হুমকি নয়, এরপর আমরা পরবর্তী ধাপে যেতে পারব।
সেটি হলো, কীভাবে গাজা পুনর্নির্মাণ করবেন? কীভাবে নিরাপত্তা দেবেন? কীভাবে নিশ্চিত করবেন হামাস আর কখনও ফিরে আসবে না?—এটাই প্রেসিডেন্টের অগ্রাধিকার। আর এই সফরের অংশ হিসেবে আমাদের আলোচনা করতে হবে গত সপ্তাহে কাতারে ঘটে যাওয়া ঘটনার প্রভাব কী হতে পারে।’

রুবিও বলেন, এখনও নির্ধারণ হয়নি কে এই প্রক্রিয়া পরিচালনা করবে, কে অর্থায়ন করবে এবং কে দায়িত্বে থাকবে।

ইসরায়েলের হামলা যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অ-ন্যাটো মিত্র দেশ কাতারে গাজা যুদ্ধ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবিত নতুন যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করতে একত্রিত হওয়া হামাস নেতাদের লক্ষ্যবস্তু করেছিল।
নেতারা বেঁচে গেলেও ছয়জন নিহত হন, যার মধ্যে একজন কাতারি নিরাপত্তা কর্মকর্তা ছিলেন।

মার্কিন কর্মকর্তারা এটিকে একতরফা উত্তেজনা বৃদ্ধি হিসেবে বর্ণনা করেছেন, যা যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরায়েলের কোনো স্বার্থেই ছিল না।

এই হামলা আরব রাষ্ট্রগুলোর ব্যাপক নিন্দা ডেকে আনে এবং কাতারের মধ্যস্থতায় চলমান যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় আলোচনাকে ভেস্তে দেয়।

ওয়াশিংটন ডিসি থেকে আল জাজিরার রোজিল্যান্ড জর্ডান জানান, যুক্তরাষ্ট্র ও কাতার শান্তি প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছে। তিনি বলেন, ‘তবে শনিবার রাতে নেতানিয়াহু সামাজিক মাধ্যমে বলেছেন, ইসরায়েলের দৃষ্টিতে হামাস নেতৃত্বকে কাতার থেকে উৎখাত করতে হবে, কারণ ইসরায়েলের মতে হামাস শান্তিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ নয়।
সুতরাং কীভাবে এগোনো হবে সে বিষয়ে আলোচনা হবে, বিশেষ করে যখন ট্রাম্প বলেছেন তিনি গাজায় যুদ্ধের সমাপ্তি দেখতে চান।’

অন্যদিকে হামাস বারবার বলেছে, তারা ইসরায়েল থেকে নেওয়া সব বন্দি মুক্ত করতে এবং গাজার নিয়ন্ত্রণ একটি অন্তর্বর্তী ফিলিস্তিনি প্রশাসনের হাতে ছেড়ে দিতে প্রস্তুত, বিনিময়ে যুদ্ধের অবসান ও ইসরায়েলের সম্পূর্ণ প্রত্যাহার চায়।

এদিকে নেতানিয়াহু গাজার জনসংখ্যা বহিষ্কারের ডাক দিয়েছেন এবং বৃহস্পতিবার তিনি দখলকৃত পশ্চিম তীরে বসতি সম্প্রসারণ পরিকল্পনা এগিয়ে নিতে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন, যা ভবিষ্যতে একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের সম্ভাবনাকে কার্যত অসম্ভব করে তুলবে।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ শুক্রবার দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের পুনরুজ্জীবন সমর্থন করে ভোট দেয়, যা ইসরায়েলের বিরোধিতার প্রকাশ্য অমান্য।

ইসরায়েলের মিত্র ফ্রান্স, যুক্তরাজ্যসহ আরো কয়েকটি পশ্চিমা দেশ গাজা যুদ্ধ ও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের আচরণে তাদের বিরক্তি প্রকাশ হিসেবে এ মাসে জাতিসংঘের এক বৈঠকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে চলেছে।