সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়ে প্রোটিয়াদের উড়িয়ে দিলো ইংল্যান্ড

SHARE

দক্ষিণ আফ্রিকার চলমান সফরেই ওয়ানডে ইতিহাসে সর্বোচ্চ ব্যবধানে (৩৪২ রান) জয়ের রেকর্ড গড়েছিল ইংল্যান্ড। যদিও তার আগেই স্বাগতিকরা দুটি ম্যাচ হেরে সিরিজ হাতছাড়া করে ২-১ ব্যবধানে। প্রোটিয়ারা এরপর টি-টোয়েন্টি সিরিজেও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয় দিয়ে শুরু করে। তবে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ইংলিশরা কেবল সেই শোধ–ই তোলেনি, দুটি পূর্ণ সদস্য দেশের লড়াইয়ে সর্বোচ্চ ৩০৪ রানের পুঁজিও গড়েছে।
এর আগে আইসিসির দুটি পূর্ণ সদস্য দেশের টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ ২৯৭ রান করেছিল ভারত (প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ)। গতকাল (শুক্রবার) ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্রাফোর্ডে সেই রেকর্ড ভাঙলো ইংলিশরা। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে যা সবমিলিয়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে জিম্বাবুয়ে গাম্বিয়ার বিপক্ষে ৩৪৪ এবং নেপাল ৩১৪ রান করেছিল মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে। এর আগে ফরম্যাটটিতে ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ রান ছিল ২৬৭।

এদিকে, ৩০৫ রানের লক্ষ্য দেওয়ার পর দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১৫৮ রানে গুটিয়ে নিজেদের ইতিহাসে ফরম্যাটটিতে সর্বোচ্চ ১৪৬ রানের ব্যবধানে জিতল ইংল্যান্ড। রেকর্ডময় ম্যাচটিতে স্বাগতিকদের পক্ষে সর্বোচ্চ ১৪১ রানের ইনিংস খেলেছেন ওপেনার ফিল সল্ট। এ ছাড়া বাটলার-ব্রুকদের ঝড়ে ২০ ওভারে তাদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২ উইকেটে ৩০৪ রান। লক্ষ্য তাড়ায় আর্চার-কারানদের সামনে বেশিক্ষণ টিকতে পারেনি প্রোটিয়ারা। ছোট কয়েকটি ক্যামিও ইনিংসের পর ১৬.১ ওভারেই তারা ১৫৮ রানে অলআউট হয়ে যায়।

টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই রীতিমতো ঝড় তুলেছে ইংলিশ ব্যাটাররা। সল্ট ও জস বাটলার মিলে ওপেনিং জুটিতেই ৭.৫ ওভারে ১২৬ রান করেন। ইংল্যান্ড নিজেদের স্কোরবোর্ডে একশ রান তোলে মাত্র ৫.৫ ওভারে। যা আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয় দ্রুততম। বর্ন ফরচুইনের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে তাণ্ডব চালিয়েছেন বাটলার। ৩০ বলে তিনি ৮টি চার ও ৭ ছক্কায় ৮৩ রান করেন। এর আগে ফিফটি পূর্ণ করেন মাত্র ১৮ বলে, যা ইংলিশ ব্যাটারদের মধ্যে তৃতীয় দ্রুততম। এর আগে মঈন আলি ১৬ ও লিয়াম লিভিংস্টোনের ১৭ বলে ফিফটি করার রেকর্ড রয়েছে।

বাটলারের বিদায়েও গতি কমেনি ইংল্যান্ডের স্কোরবোর্ডে। তাদের বিপক্ষে প্রোটিয়া বোলারদের মধ্যে সর্বনিম্ন ১০.২০ গড়ে রান দিয়েছেন কেনা মাফাখা। বোঝাই যাচ্ছে– কতটা ঝড় বয়ে গেছে তাদের ওপর। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে সল্ট ও জ্যাকব বেথেল মিলে আরও ৯৫ রান যোগ করেছেন। এরপর সল্ট-হ্যারি ব্রুকের জুটিতেও আসে ৮৩ রান। মাঝে বেথেল আউট হয়েছেন ১৪ বলে দুটি করে চার-ছক্কায় ২৬ রান করে। অপরাজিত ছিলেন অপর দুই ব্যাটার। ২১ বলে ৫ চার ও এক ছক্কায় ৪১ রান করেন ব্রুক।

ইংলিশদের পক্ষে সল্টের সর্বোচ্চ ১৪১ রান কেবল এই ম্যাচেরই নয়, টি-টোয়েন্টিতে তাদের হয়ে সর্বোচ্চ ইনিংসের রেকর্ডও। এর আগে তিনি দ্রুততম ইংলিশ ব্যাটার হিসেবে ৩৯ বলে ম্যাজিক ফিগার (১০০) পূর্ণ করেন। টি-টোয়েন্টিতে এটি সল্টের চতুর্থ সেঞ্চুরি। যা যৌথভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ডানহাতি এই ওপেনার ৬০ বলের পুরো ইনিংসটি সাজান ১৫ চার ও ৮ ছক্কায়। বিপরীতে প্রোটিয়াদের পক্ষে ২টি উইকেটই নিয়েছেন ফরচুইন।

লক্ষ্য তাড়ায় নেমে ঝোড়ো শুরু পেলেও দলীয় ৫০ রানের পর আর উইকেটের মিছিল থামাতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। ওপেনার এইডেন মার্করামের ব্যাটেই এসেছে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৪১ রান (২০ বলে ২ চার ও ৪ ছক্কা)। এ ছাড়া ফরচুইন ১৬ বলে ৩২, ডোনোভান পেরেইরা ১১ বলে ২৩, ত্রিস্টান স্টাবস ২৫ বলে ২৩ ও রায়ান রিকেলটন ১০ বলে ২০ করেছেন। বিপরীতে ইংলিশদের পক্ষে আর্চার সর্বোচ্চ ৩ উইকেট এবং স্যাম কারান, লিয়াম ডসন ও উইল জ্যাকস শিকার করেন ২টি করে উইকেট।