দীর্ঘ তিন দশক পর বিতর্কিত টিপাইমুখ নিয়ে সক্রিয় হলো মোদি সরকার। দিল্লির মসনদে বসেই মোদি সরকার আটকে থাকা বিভিন্ন প্রকল্পের সমাধান সূত্র বের করতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে। এরই সূত্র ধরে টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণে নয়া দিল্লি আটঘাঁট বেঁধে মাঠে নামছে।
বুধবার আসামের প্রভাবশালী দৈনিক যুগশঙ্খ এ খবর দিয়েছে।
পত্রিকাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, টিপাইমুখ বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিষয়টিও নতুন করে গুরুত্ব পাচ্ছে বলে বলে সরকারি সূত্রে জানা গেছে। গত প্রায় দু’দশক ধরে বাংলাদেশের আপত্তির জন্য টিপাইমুখ প্রকল্পের কাজকর্ম স্থগিত হয়ে পড়ে।
যুগশঙ্খের প্রতিবেদনে বলা হয়, মোদি সরকার ক্ষমতায় এসেই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ইতিমধ্যেই যোগাযোগ স্থাপন করেছে। গত সপ্তাহে ভারতের তরফ থেকে এই প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে ঢাকার কাছে বার্তা পাঠানো হয়েছিল।
এরই সূত্র ধরে বাংলাদেশের ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিং গোটা বিষয়টি নতুনভাবে খতিয়ে দেখছে। টিপাইমুখ নিয়ে দিল্লির বার্তার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকারও এই নদী বাঁধের সমাধান সূত্র বের করতে ইতিমধ্যেই সমীক্ষার কাজে হাত দিয়েছে। এর আগে অবশ্য বাংলাদেশের এক প্রতিনিধি দল টিপাইমুখ পরিদর্শন করে গেছে।
পত্রিকাটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করে, এতদিন পর্য়ন্ত বাংলাদেশ সরকার টিপাইমুখ বাঁধ হলে সুরমা ও কুশিয়ারার বর্তমান পানি প্রবাহে কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে কি-না, তা নিয়ে চিন্তিত ছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতেই এবার বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞরা ভারতের মনিপুরে অবস্থিত টিপাইমুখের আগে ও পরে বিস্তীর্ণ নদীপথে সমীক্ষা চালান।
যুগশঙ্খের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাঁধের নিরাপত্তা, জলাশয়ের আকার, কত ঘনমিটার পানি কত সময়ের মধ্যে ছেড়ে দেয়া হবে ইত্যাদি বিষয়গুলো বাংলাদেশের স্বার্থ অটুট রাখতে পারবে কি-না, মূলত সেই দিকগুলিই তারা যাচাই করে দেখবেন।
মাসখানেক সমীক্ষা চালানো পর বাংলাদেশ সরকার টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে ঢাকা।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালে ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর টিপাইমুখ বাঁধ আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ১৫০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন টিপাইমুখ জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মীয়মাণ বাঁধের দৈর্ঘ্য হবে ৩৯০ মিটার এবং তার উচ্চতা হবে ১৬২.৮ মিটার।
প্রকল্পটি নির্মিত হলে পরিবেশের ওপর কী ধরনের প্রভাব পড়বে সেই নিয়েও সমীক্ষা চালাবে ভারত সরকার। প্রথমিকভাবে টিপাইমুখ প্রকল্পটি বিদ্যুতের পাশাপাশি বন্যা নিয়ন্ত্রণের বিষয়টিও যুক্ত ছিল। কিন্তু পরবরর্তীকালে এটি শুধু বিদ্যুৎ প্রকল্প হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে ভারত সরকার।