অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জ্বালানি ও রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান জানিয়েছেন, লোভ হলেও বিভিন্ন পক্ষ থেকে পাওয়া মূল্যবান উপহার তিনি ফিরিয়ে দিয়েছেন। ভারতীয় একটি কোম্পানির পক্ষ থেকে পাওয়া একটি আইপ্যাড ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি। আর শ্রীলঙ্কায় উপহার হিসেবে পাওয়া দামি একটি ঘড়ি রাষ্ট্রীয় তোষাখানায় জমা দিয়েছেন।
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে সামাজিক যোগযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে নিজের ব্যক্তিগত এ বিষয়টি তুলে ধরেন উপদেষ্টা।
পোস্টে তিনি লেখেন, কিছুদিন আগে শ্রীলঙ্কায় এক মন্ত্রীপর্যায়ের বৈঠকে গেলে সেখানকার বিদ্যুৎমন্ত্রীর উপস্থিতিতে আয়োজকদের পক্ষ থেকে আমাকে একটি উপহার প্রদান করা হয়। হোটেলে ফিরে গিফট বক্স খুলে দেখি একটি দামি ব্র্যান্ডের হাতঘড়ি। ঘড়িটি আমি হাতে পরি, পছন্দ হয়, লোভ হয়। দেশে ফিরে এসে, মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে চিঠি লিখে ঘড়িটি তোষাখানায় জমা দেওয়ার জন্য পাঠাই।
তিনি আরো লেখেন, গত পরশু ভারতীয় এক বিদ্যুৎ কোম্পানির প্রধান (আদানি নয়) আমার সঙ্গে দেখা করেন, আমাদের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যানকে সঙ্গে নিয়ে। দীর্ঘদিনের পাওনা বকেয়া পরিশোধ করায় কৃতজ্ঞতা জানাতে এসেছেন। ফেরার সময় বলেন, সামান্য উপহার নিয়ে এসেছি। আমি তাকে বলি উপহার গ্রহণের ক্ষেত্রে একটা নির্ধারিত মূল্যসীমা আছে।
উপহারটি খুলে দেখি একটি আইপ্যাড। বাসার আইপ্যাডটি পুরনো হয়ে গেছে, তাই লোভ হয়। আইপ্যাডটি তাকে ফিরিয়ে দিই। পাশে সোফায় বসে আমার কাণ্ড দেখে অন্য একজন উপদেষ্টা মিটিমিটি হাসছেন।
তবে কোনো উপহারই গ্রহণ করি না এমন নয় উল্লেখ করে উপদেষ্টা লেখেন, বিদেশি মন্ত্রী, রাষ্ট্রদূতরা দেখা করার সময় সুভেনির, বই নিয়ে আসেন।
অবাণিজ্যিক পণ্য বা মূল্যসীমার মধ্যে কোনো খাবার, যেমন- চকলেট, সেগুলো গ্রহণ করি। বিনিময়ে তাদের নিজের লেখা বই উপহার দিই। ভাগ্যিস কয়েকটা বই লিখেছিলাম!
ফাওজুল কবির আরো লেখেন, আমার মনে হয়েছে, প্রলোভনের ঊর্ধ্বে ওঠাই জনপ্রতিনিধিদের প্রধান কাজ। এটা করতে পারলেই অন্য সব কাজ সহজ হয়ে যায়। আশা করি আসন্ন নির্বাচনে জনগণ নির্লোভ জনপ্রতিনিধিদের নির্বাচিত করবেন।