প্রকৌশলীদের জায়গাগুলো অন্যরা দখল করে রেখেছে

SHARE

ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্স, চট্টগ্রামের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মানজারে খোরশেদ আলম বলেছেন, প্রকৌশলীদের জায়গাগুলো অন্য লোকেরা এসে দখল করে রেখেছে। দেশের ইঞ্জিনিয়ারিং খাতে সীমাহীন বৈষম্য, দুর্নীতি চলছে। এ কারণে দেশীয় প্রকৌশলীরা তাদের যোগ্য স্থান পাচ্ছে না। ফলে আমাদের বিদেশ থেকে ইঞ্জিনিয়ার আনতে হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টায় চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক লালদিঘী ময়দানে অনুষ্ঠিত প্রকৌশলীদের বিভাগীয় মহাসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রকৌশলী মানজারে খোরশেদ আলম বলেন, আমরা চাই, প্রকৌশলীদের যে তিন দফা দাবি, তা দ্রুতই মেনে নেওয়া হোক।

চুয়েটের পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম বলেন, ‘শেষ বছর শিক্ষার্থীদের যখন জিজ্ঞেস করা হয়, তোমাদের পরবর্তী প্ল্যান কী, একটা বড় অংশ শিক্ষার্থী জানায় যে, তারা দেশ ছেড়ে চলে যাবে। যথাযথ সুবিধা না পাওয়ায় এই অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে।
অন্য কোনো সরকারি চাকরিতে এমন পদোন্নতির নিয়ম কেউ দেখতে পারবেন না। প্রকৌশল চাকরিতেই শুধু অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে পদোন্নতি দেওয়া হয়। যোগ্যদের অনেক ক্ষেত্রেই বঞ্চিত রাখা হয়।’

প্রকৌশলী অধিকার আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাকিবুল হক লিপু বলেন, ‘ডিপ্লোমাধারীরা মূলত এইচএসসি সমমান, যারা পূর্বে টেকনিশিয়ান হিসেবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করত।
কিন্তু তারা এক শক্তিশালী সিন্ডিকেট করে, ১০ম গ্রেডে ১০০% কোটা এবং ৯ম গ্রেডে ৩৩% থেকে শুরু করে ১০০% পর্যন্ত কোটা নিয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং সেক্টর দখল করে রেখেছে।’

তিনি বলেন, ‘তাদের বিসিএসে বসার জন্য ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা (স্নাতক) না থাকলেও, কোনোরকম বিসিএস পরীক্ষা না দিয়ে তারা শুধু প্রমোশনের মাধ্যমে বিসিএস ক্যাডার হয়ে যাচ্ছে। আমরা স্পষ্ট জানিয়ে দিতে চাই, কোনো সন্ত্রাসী সিন্ডিকেটের হুমকিতে আমরা এই ন্যায্যতার লড়াই থেকে পিছপা হব না। এদেশকে মেধার ভিত্তিতে এগিয়ে নিয়ে যেতে আমরা বদ্ধপরিকর।’

চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. ইফতেখার মাহমুদ বলেন, ‘আজকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়াররা তাদের মাথার ঘাম পায়ে ফেলে উত্তীর্ণ হয়ে দেখছে, তাদের জায়গা দখল করে রেখেছে ডিপ্লোমা টেকনিশিয়ানরা।
এর চাইতে লজ্জার আর কি হতে পারে? আমরা জোরালোভাবে এই দাবি জানাচ্ছি যে, প্রকৌশল খাতের সংস্কার এখনই করতে হবে, অতিসত্বর করতে হবে। নইলে আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব, ইনশাআল্লাহ।’

মহাসমাবেশে ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্স (আইইবি) চট্টগ্রামের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মানজারে খোরশেদ আলম, সহসভাপতি প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী খান আমিনুর রহমান, এইবি চট্টগ্রাম সেন্টারের সভাপতি প্রকৌশলী জানে আলম মো. সেলিম, ফোরাম অব ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড আর্কিটেক্টস চট্টগ্রাম সেন্টারের সহসভাপতি মো. মমিনুল হক এবং চুয়েটসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, শিক্ষার্থীদের পূর্বঘোষিত ৩ দফা দাবিসমূহ ছিল নবম গ্রেডে ন্যূনতম যোগ্যতা বিএসসি রেখে পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ, দশম গ্রেডকে কোটামুক্ত করে বিএসসিদের জন্য সুযোগ করে দেওয়া এবং বিএসসি ছাড়া যেন কেউ প্রকৌশলী পদবি ব্যবহার না করতে পারে তা নিশ্চিত করা।