সিলেটে ধুলোজমা স্মৃতি হাতড়ালেন আমিনুল

SHARE

সিলেট জেলা স্টেডিয়াম পরিদর্শনে এসে গাড়ি থেকে নেমেই স্মৃতিকাতর হলেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল। জিমনেশিয়াম, ইনডোর, মাঠ যেদিকে পা রাখছেন স্মৃতিগুলো যে ভেসে উঠছে তার দু-চোখে। গণমাধ্যমের সঙ্গেও আলাপকালে সেই স্মৃতিচারণাই করলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি। সভাপতির আড়ালে থাকা ক্রিকেটার আমিনুল উঁকি দিয়ে উঠছিলেন নানা ছুতোয়।

স্টেডিয়াম পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমকে আমিনুল বললেন, ‘যদিও আজ অফিশিয়াল ভিজিটে এসেছি। কিন্তু এই মাঠের সঙ্গে আমার সম্পর্ক অনেক পুরনো। আমি এখানে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ খেলেছি। প্রচুর ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেছি।
আগে তো সিলেট ক্রিকেট গ্রাউন্ড বলতে আমরা এই স্টেডিয়ামই জানতাম।’

বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টে ছিলেন আমিনুল। ১৪৫ রানের ইনিংস খেলে প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটার হিসেবে সেঞ্চুরির ইতিহাস গড়েন তিনি। এ রকম অনেক প্রথমের নায়ক বুলবুল খেলোয়াড়ি ক্যারিয়ারের ইতি টেনে পরে কোচিং পেশায় যুক্ত হন।

ক্রিকেটের পাশাপাশি ফুটবলেও বেশ দক্ষ ছিলেন আমিনুল। বলা ভালো ক্রিকেটার হিসেবে খ্যাতি পাওয়ার আগে ফুটবলারই ছিলেন তিনি। পুরনো পরিসংখ্যান ঘেঁটে ও তৎকালীন সময়ে সিলেটের ক্রীড়াঙ্গনের অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আশির দশকের শেষভাগ থেকে নব্বইয়ের দশকের প্রথমভাগে সিলেটের ফুটবল লিগে খেলতে আসেন। তখন মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে মিডফিল্ডার আমিনুল তিন মৌসুম লিগ মাতিয়েছেন।

১৯৯২ সালে ক্রিকেটার হিসেবে মোহামেডানের হয়ে সিলেটের প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগে খেলতে আসেন আমিনুল। টানা পাঁচ মৌসুম সিলেটের লিগে নিয়মিত ছিলেন তিনি। এর মধ্যে একবার অনির্বাণ ক্রীড়া চক্রে খেললেও বাকি চার মৌসুম তিনি খেলেছেন মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে।

আমিনুল সিলেট জেলা ক্রিকেট দলে খেলেছেন জাতীয় দলের সাবেক অলরাউন্ডার গোলাম ফারুক চৌধুরী সুরুর অধিনায়কত্বে। জাতীয় লিগে সিলেটের হয়ে যেমন সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন, তেমনি একবার চ্যাম্পিয়ন ও একবার রানার্সআপ হওয়ার অভিজ্ঞতাও রয়েছে তার। ১৯৯৩-৯৪ মৌসুমে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয় সিলেট জেলা দল। তার আগের বছর হয় রানার্সআপ।

তাই সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে পা দিয়েই হয়তো আমিনুলের মনে পড়ে গেল তারুণ্যের সেই দিনগুলোর কথা। ঘুরে ফিরে বারবার তাই করলেন স্মৃতিচারণা। খেরোখাতা থেকে টুকরো টুকরো স্মৃতি খুঁজে বের আনলেন। জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভায় বসেও ঘুরে ফিরে এলো তাঁর সিলেট পর্ব। হেসে হেসে বললেন, ‘সিলেটে এত খেলেছি যে অনেকে মনে করত আমার বাড়ি বোধ হয় সিলেটে।’

স্মৃতিময় সিলেট স্টেডিয়াম, ইনডোর সুবিধার বেহাল দশা দেখে আমিনুলের চোখেমুখে ফুটে উঠল হতাশা। জেলা ক্রীড়া সংস্থার পক্ষ থেকে স্টেডিয়ামের উন্নয়নে একটা প্রস্তাবনা যখন তার হাতে তুলে দেওয়া হলো তখন তিনি বললেন, ‘যে প্রস্তাবনা এবং মাঠের বর্তমান অবস্থা দেখলাম চেষ্টা করব যত দ্রুত সময়ে সম্ভব এই মাঠকে খেলার এবং অনুশীলনের উপযোগী করার। পাশাপাশি ইনডোরের যে বিশাল কাঠামো দেখলাম সবগুলো আমরা পর্যায়ক্রমে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করব।’