বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বিতাড়িত স্বৈরাচার প্রতিহত করার পাশাপাশি মৌলবাদী শক্তির উত্থান যাতে না ঘটতে পারে, সেজন্য কবি-সাহিত্যিকদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, দেশের একমাত্র মালিক প্রত্যেক নাগরিক। নাগরিকদের বাকস্বাধীনতা রক্ষা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দরকার। মানুষের বাকস্বাধীনতার জন্য কবিরা অতীতে যেরকম ভূমিকা রেখেছিলেন ভবিষ্যতেও সেরকম ভূমিকা রাখবেন বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।
বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর কবিতায় মানুষকে উজ্জীবিত করেছিলেন। রবীন্দ্রনাথও কবিতায় মানবতার গান গেয়েছেন। একটি ফুলকে বাঁচাব বলে যুদ্ধ করি, জাতির পতাকা খামচে ধরেছে আজ পুরোনো শকুন ইত্যাদি কবিতা ও গানে আমাদের কবি-সাহিত্যিকরা দেশের ক্রান্তিলগ্নে এগিয়ে এসেছেন। ‘প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ’ উচ্চারণের মধ্য দিয়ে শিল্পী ও কবিদের দেশাত্মবোধের কথা জাতি চিরদিন মনে রাখবে।
গতকাল বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম মিলনায়তনে বিএনপি মিডিয়া সেল ও জাতীয় কবিতা পরিষদ আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তারেক রহমান এসব কথা বলেন। জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি মোহন রায়হানের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ ও ভাইস প্রেসিডেন্ট নূরুল ইসলাম মনি। বক্তব্য দেন কবিতা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রেজাউদ্দিন স্টালিন, মতিন বৈরাগি, কবি এ বি এম সোহেল রশিদ, কবি অনামিকা হক লিলি, শ্যামল জাকারিয়া, আমাদের সময় সম্পাদক আবু সাঈদ, কবি শাহীন চৌধুরী প্রমুখ।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, বিগত স্বৈরাচার সরকার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কণ্ঠরোধ করতে নানা রকম ষড়যন্ত্র করেছিল।
গণমাধ্যমে তারেক রহমানের বক্তব্য প্রকাশ, প্রচার ও ছবি ছাপানোর ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। কিন্তু মানুষের ভালোবাসা স্বৈরাচারের ব্যারিকেড দিয়ে যে আটকে রাখা যায় না সেটা বারবার প্রমাণ করেছে এ দেশের সাধারণ মানুষ। স্বৈরাচারের সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে জনগণ ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতন ঘটিয়ে দুঃশাসনের অবসান ঘটিয়েছে। আর স্বৈরাচারের পতন ঘটানোর ক্ষেত্রে রাজপথের যোদ্ধাদের পাশাপাশি কবি-সাহিত্যিকদের অবদান ছিল প্রশংসনীয়।
রেজাউদ্দিন স্টালিন বলেন, ‘স্বৈরাচারের লেজুড়বৃত্তি না করাতে বিগত ১৭ বছর আমাদের রেডিও টিভি থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল এবং ফ্যাসিবাদের বিপক্ষে কথা বলাতে অনেককে জেলের ঘানিও টানতে হয়েছে।
’
আবু সাঈদ খান বলেন, ‘স্বৈরাচার আমাদের কণ্ঠরোধ করে রেখেছিল। আপনারা ক্ষমতায় এলে আমরা যেন আপনাদের কাজের গঠনমূলক সমালোচনা করতে পারি সেটাই আপনার কাছে আমার চাওয়া। সেই সঙ্গে বাকস্বাধীনতা প্রতিষ্ঠারও দাবি জানাই।’
বিএনপির মিডিয়া সেলের ডা. মওদুদ আলমগীর পাভেল বলেন, বিএনপি সব সময় গণতন্ত্রের চর্চা করে আসছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কার্টুন আঁকার পরে সেই কার্টুনিস্টকে তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন। বিএনপির শাসনামলে গণমাধ্যমে প্রতিদিনই কার্টুন ও সংবাদে বিএনপির সমালোচনা করা হতো। কিন্তু ওই সময় বিএনপি কোনো গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেনি। বিএনপি গণমানুষের দল হিসেবে অতীতের মতো ভবিষ্যতেও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করবে।