ভারি বৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ১০টি গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। বিভিন্ন শিল্পকারখানার বিষাক্ত বর্জ্য মিশে সেই পানি দূষিত হয়ে দেখা দিয়েছে পানিবাহিত নানা রোগ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে অনেক কোমলমতি শিক্ষার্থীর। বসতঘরে পানি প্রবেশ করায় অনেকে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার সরেজমিন দেখা যায়, বেড়িবাঁধের ভেতরের পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের ভারগাঁও, বাটপাড়া, কাজিপাড়া, দরগাবাড়ী, খিদিরপুরসহ প্রায় ১০ গ্রামে দেখা দিয়েছে কৃত্রিম বন্যা। তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট, ফসলি জমি ও বাড়ির উঠান। অনেকের ঘরের ভেতরে ঢুকে গেছে পানি। ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কমপক্ষে ৩০ হাজার মানুষ।
বেকার হয়ে গেছেন অনেকে। বন্ধ হয়ে গেছে অনেক ছেলে-মেয়ের স্কুল-কলেজ ও মাদরাসায় যাওয়া।
বৃষ্টির পানিতে বিভিন্ন শিল্প কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য মিশে পানি দূষিত হয়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে পানিবাহিত নানা রোগ। এমনকি কিছু কিছু এলাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট।
এতে বাড়ছে জনদুর্ভোগ। পানি নিষ্কাশনের খালগুলো বেদখল ও ভরাট হয়ে যাওয়ায় গত কয়েক বছর ধরে বৃষ্টি মৌসুম আসলেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয় বলে জানান স্থানীয়রা। দ্রুত এ সমস্যা থেকে মুক্তি চান তারা।
বাটপাড়া গ্রামের আনিছুর রহমান জানান, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুম হলেই বেড়িবাঁধের মানুষ জলাবদ্ধতায় পানিবন্দি হয়ে পড়ে। বাড়ি থেকে বের হতে না পেরে দরিদ্র পরিবারগুলো খাবার সংকটে পড়েছেন।
দরগাবাড়ি গ্রামের আলী হোসেন বলেন, আমাদের এখানে তিন ফসলি জমি রয়েছে। প্রতি বছর জলাবদ্ধতা হওয়ায় কোনো ফসল করা যাচ্ছে না। অতিরিক্ত পাম্প বসিয়ে দ্রুত পানি নিষ্কাশনের জন্য প্রশাসনের প্রতি দাবি করেন তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা রহমান বলেন, পানি নিষ্কাশনের জন্য তিনটি পাম্প রয়েছে। তার মধ্যে দুটি পাম্প অচল থাকায় দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত পাম্প বসানোর। পানিবন্দি যারা দরিদ্র তাদের মধ্যে শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।