পাকিস্তানের বিপক্ষে ২০২ রান তাড়া করতে নেমে যেখানে জাত ব্যাটাররা ব্যর্থ, সেখানে ৩১ বলে ৫০ রানের দারুণ এক ইনিংস খেললেন পেসার তানজিম হাসান সাকিব। তার মতে, লাহোরের পিচে দুইশ রান তাড়া করা কঠিন কিছু নয়। ব্যাটাররা দায়িত্ব নিয়ে ব্যাট করলেই এ লক্ষ্য সহজেই তাড়া করা সম্ভব।
লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে শুক্রবার (৩০ মে) সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ২০২ রান তাড়া করতে নেমে ৫৭ রানের ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। তাতে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ খোয়ালো লাল সবুজরা। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতেও ২০২ রান তাড়া করতে নেমে ৩৭ রানে হেরেছিল লিটন দাসের দল।
দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে তানজিদ হাসান তামিমের ১৯ বলে ৩৩ আর মেহেদী হাসান মিরাজের ১৭ বলে ২৩ রানের ইনিংস ছাড়া কোনো ব্যাটারই দুই অঙ্কের ঘরে প্রবেশ করতে পারেননি। অথচ দলের পেসার তানজিম হাসান সাকিব দশ নম্বরে ব্যাট করতে নেমেও ৩১ বলে ৫ ছক্কা ও ১ চারের মারে ৫০ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন। জাত ব্যাটাররা ব্যর্থ হলেও একজন পেসার হয়েও তিনি দেখিয়েছেন কীভাবে লাহোরের পিচে ব্যাট করতে হয়।
ম্যাচশেষে সংবাদ সম্মেলনে হাজির হয়ে এ পেসার জানিয়েছেন, এ পিচে দুইশ রান খুব সহজেই চেজ করা সম্ভব। শুধু দরকার ব্যাটারদের দায়িত্ববান হওয়া। হারের কারণ হিসেবে তিনি দায়ী করেছেন ব্যাক টু ব্যাক উইকেট বিলিয়ে দেওয়াকে।
তানজিম সাকিব বলেন, ‘আপনি যদি উইকেট দেখেন, এটা যে উইকেট, এখানে দুইশ খুব সহজে চেজ করা সম্ভব। আমরা পিএসএলেও দেখেছি, দুইশ চেজ করার মতো। ব্যাটসম্যানরা যদি দায়িত্ববান ব্যাটিং করে তাহলে এ উইকেটে দুইশ রান চেজ করা সম্ভব। আমাদের জুটি গড়ার দিকে মনোযোগ দিতে হবে। আমরা ম্যাচ হারতেছি ব্যাক টু ব্যাক উইকেট যাওয়ার কারণে। এ জায়গায়টাই আমাদের মূল কনসার্ন (চিন্তার বিষয়)। আমাদের রান অটো চলে আসে। কিন্তু যখন ব্যাক টু ব্যাক উইকেট যায়, তখনই আমরা ম্যাচ থেকে বের হয়ে চলে আসছি।’
সাকিব যখন ক্রিজে আসেন ততক্ষণে ৭ উইকেট হারিয়ে ৭৭ রান বাংলাদেশের। অর্থাৎ দুইশ তাড়া করার ম্যাচটি তখনই হাত থেকে ফসকে গিয়েছিল। কিন্তু তারপরও মিরাজ তাকে নিয়ে ম্যাচ বের করে আনার আশা দেখিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পরিকল্পনা কাজে আসেনি। মিরাজ সাজঘরে ফিরলেন আর হাসান মাহমুদকে নিয়ে একাই লড়লেন সাকিব। দশম ওভারের শেষ বলে ব্যাট করতে নেমে ১৯তম ওভারের শেষ বল পর্যন্ত ব্যাট করে আউট হন এ পেসার।
ব্যাট করার সময় পরিকল্পনা কী ছিল জানতে চাইলে তানজিম সাকিব বলেন, “আমি যখন উইকেটে গিয়েছি, তখন মিরাজ ভাই ব্যাটিং করছিল। আমার একটাই লক্ষ্য ছিল উনাকে সমর্থন দেব। উনি যতক্ষণ মাঠে থাকবে আমার ফোকাস ছিল স্ট্রাইক রোটেট করব। মিরাজ ভাই আমাকে বলেছিলেন, ‘তুই থাক, তুই সাপোর্ট দিলে আমরা ম্যাচ বের করে আনতে পারব’। দুঃখজনকভাবে আমরা আগেই অনেকগুলো উইকেট হারিয়ে ফেলছি। দুইশ চেজ করতে হলে আমাদের ব্যাটারদের দায়িত্ব নিতে হবে অবশ্যই। আমরা উপর থেকে যদি আরেকটু দায়িত্ববান ব্যাটিং করি তাহলে দুইশ চেজ করা সম্ভব।’
সিরিজ হারলেও সাকিব আশাবাদী তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে ঘুরে দাঁড়াবে দল। সতীর্থদের নিয়ে আত্মবিশ্বাসী তিনি।
এ পেসার বলেন, ‘আমাদের খেলোয়াড়রা ঘরোয়া এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রুভেন। তারা একটু হয়তো ছন্দের বাইরে আছে। কিন্তু আমি আমার টিমমেটদের প্রতি অনেক বেশি আত্মবিশ্বাস রাখি। আমি আশা রাখছি তারা পরবর্তী ম্যাচে কামব্যাক করবে।’
রোববার (১ জুন) রাত ৯টায় গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি।