ম্যাখোঁ এখন ইসরায়েলের চোখে ‘ইহুদি রাষ্ট্রবিরোধী’

SHARE

গাজায় মানবিক বিপর্যয় মোকাবেলায় যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে ইউরোপীয় দেশগুলোকেইসরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে আহ্বান জানানোর পর ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর বিরুদ্ধে ‘ইহুদি রাষ্ট্রবিরোধী ক্রুসেড’ চালানোর অভিযোগ তুলেছেইসরায়েল।

শুক্রবারইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে দাবি করেছে, ‘গাজায় কোনো মানবিক অবরোধ নেই। এটি একেবারে মিথ্যা।’ তারা আরো জানায়, ‘জিহাদী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে চাপ প্রয়োগ করার বদলে ম্যাখোঁ তাদের একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র দিতে চান।
সন্দেহ নেই, ওই রাষ্ট্রের জাতীয় দিবস হবে ৭ অক্টোবর,’ যা ২০২৩ সালের হামাসের আক্রমণের দিকে ইঙ্গিত করে। হামাসের ওই আক্রমণই গাজা যুদ্ধের সূচনা ঘটিয়েছিল।

এদিকে, গত সপ্তাহেইসরায়েল দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা সরবরাহ নিষেধাজ্ঞা আংশিক শিথিল করলেও, গাজায় খাদ্য ও ওষুধের তীব্র ঘাটতির কারণে সহায়তা এখনো ধীরগতিতে প্রবাহিত হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে, ম্যাখোঁ শুক্রবার সিঙ্গাপুরে এক প্রতিরক্ষা সম্মেলনে বলেন, ‘যদি আমরা গাজাকে পরিত্যাগ করি এবংইসরায়েলের জন্য ফ্রি পাস তৈরি করি, তবে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা করলেও আমাদের বিশ্বাসযোগ্যতা ধ্বংস হয়ে যাবে।

তিনি ইউরোপীয় দেশগুলোকেইসরায়েলের বিরুদ্ধে একযোগে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান এবং প্রয়োজন হলে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টিও উত্থাপন করেন। তিনি আরো বলেন, ‘ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়া শুধু একটি নৈতিক দায়িত্ব নয়, এটি একটি রাজনৈতিক অপরিহার্যতা।’

বর্তমানে, ফ্রান্স ও সৌদি আরব জাতিসংঘে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজন করছে, যার উদ্দেশ্যইসরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্বে দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান পুনরুজ্জীবিত করা। তবে,ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকার এই সমাধানের ঘোর বিরোধী।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরো জানায়, ‘হামাস ইতোমধ্যে মাখোঁর বক্তব্যের প্রশংসা করেছে। হামাস জানে, কেন।’

ফ্রান্সের দৃষ্টি: প্যালেস্টাইনি রাষ্ট্রের স্বীকৃতি

ম্যাখোঁ এবং ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো এক যৌথ বিবৃতিতে গাজা থেকে প্যালেস্টাইনি জনগণকে জোরপূর্বক সরিয়ে নেয়ার বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তাদের লক্ষ্য একটি শর্তসাপেক্ষ প্যালেস্টাইনি রাষ্ট্রের স্বীকৃতি নিশ্চিত করা, যাতে হামাসের নিরস্ত্রীকরণ এবং ইসরায়েলের নিজেকে রক্ষা করার অধিকারকে সম্মান জানানো হয়।

গাজায় মানবিক পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে থাকলেও, কয়েক মাসের ইসরায়েলি অবরোধের পর কিছু সাহায্য প্রবাহিত হতে শুরু করেছে।
খাদ্য নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, সেখানে এক-পঞ্চমাংশ জনগণের জন্য অনাহারের শঙ্কা রয়েছে। ইসরায়েল হামাসের বিরুদ্ধে তার সামরিক অভিযানের তীব্রতা বৃদ্ধি করেছে, যার শুরু ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আক্রমণের পর।

সূত্র : এএফপি