শ্রমজীবী মানুষ এখনো দুঃখ-কষ্টে জীবন যাপন করছে : তারেক রহমান

SHARE

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, গত বছর গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্রদের সঙ্গে শ্রমিকদের আত্মদানের মাধ্যমে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতন হয়। এখন শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার বাস্তবায়নের জন্য কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকার কথা না। তথাপিও শ্রমিকরা অবহেলিত ও অধিকার বঞ্চিত। দেশে উৎকৃষ্ট গণতন্ত্রের সমাজভূমি নির্মিত হলেই শ্রমজীবী মানুষের মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠা পাবে।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও মূল্যস্ফীতির চাপে শ্রমজীবী মানুষ এখনো দুঃখ-কষ্টে জীবন যাপন করছে।

১ মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস (মহান মে দিবস) উপলক্ষে আজ বুধবার (৩০ এপ্রিল) দেওয়া এক বার্তায় এসব কথা বলেন তারেক রহমান।

শ্রমজীবী মানুষদের সালাম ও শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, দেশে-বিদেশে কর্মরত সব শ্রমজীবী মানুষ, যারা নিজের জীবন বাজি রেখে জীবিকার জন্য, পরিবারের জন্য, সমাজের সর্বোপরি দেশের উন্নয়নের জন্য কর্মে নিয়োজিত আছেন তাদের সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও সংগ্রামী সালাম। ১৮৮৬ সালের মে মাসে ৮ ঘণ্টা কর্মদিবসসহ শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার আদায় করতে গিয়ে আমেরিকার শিকাগো শহরে ‘হে মার্কেটে’ জীবনদানকারী এবং এই আন্দোলনের জন্য ফাঁসিকাষ্ঠে আত্মদানকারী প্রতিবাদী শ্রমিকদের স্মৃতির প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, এই দিবস আন্তর্জাতিক শ্রমিক আন্দোলনের উদযাপন দিবস। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শ্রমজীবী মানুষ এবং শ্রমিক সংগঠনসমূহ রাজপথে সংগঠিতভাবে মিছিল ও শোভাযাত্রার মাধ্যমে দিবসটি পালন করে। সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান (বীর-উত্তম) ছিলেন একজন যথার্থ শ্রমিক। তিনি নিজেকে সব সময় একজন শ্রমিক হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করতেন।
শ্রমিকদের দুটো হাতকে তিনি উন্নয়নের চাবিকাঠি বলতেন। এ দেশের শ্রমিকের কল্যাণে তিনি যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন।

তিনি বলেন, এ দেশে শ্রম আইন সংস্কার ও আধুনিকীকরণ, বেতন ও মজুরি কমিশন গঠন, গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ, বাস্তবায়ন ও তাদের বোনাস প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ, শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন গঠন, গার্মেন্টস শ্রমিকদের সন্তানদের চিকিৎসা ও তাদের লেখাপড়ার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশের শ্রমিক সমাজের ভাগ্যোন্নয়নে যথাযথ কর্মসূচি গ্রহণ করেছিল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন। আমাদের দেশে সবচেয়ে বেশি শ্রমিক রয়েছে পোশাকশিল্পে। এই শিল্পে শহীদ জিয়ার অবদান অবিস্মরণীয়।
পোশাক শ্রমিকদের কল্যাণে দেশ আজ ক্রমবর্ধমান অগ্রগতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। আগামীতেও বিএনপি ক্ষমতাসীন হলে খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণ ও অগ্রগতি অব্যাহত থাকার দৃঢ় প্রত্যয় ঘোষণা করছি।

দুঃশাসনের প্রকোপে শ্রমিক শ্রেণি সবচেয়ে নিপীড়িত ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত বছর গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্রদের সঙ্গে শ্রমিকদের আত্মদানের মাধ্যমে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতন হয়। এখন শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার বাস্তবায়নের জন্য কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকার কথা নয়। তথাপিও শ্রমিকরা অবহেলিত ও অধিকার বঞ্চিত। দেশে উৎকৃষ্ট গণতন্ত্রের সমাজভূমি নির্মিত হলেই শ্রমজীবী মানুষের মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠা পাবে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও মূল্যস্ফীতির চাপে শ্রমজীবী মানুষ এখনো দুঃখ-কষ্টে জীবন যাপন করছে।

তারেক রহমান আরো বলেন, শুধু বাংলাদেশেই নয়, দুনিয়াজুড়ে শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং শোষণ মুক্তির সংগ্রাম বেগবান করার লক্ষ্যে মহান মে দিবসে শপথ নিতে হবে। আমি মহান মে দিবসের সব কর্মসূচির সার্বিক সফলতা এবং তাদের উত্তরোত্তর সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করি। আল্লাহ হাফেজ, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।