লিভারপুলে এক জীবন্ত কিংবদন্তি হয়ে উঠেছেন মোহাম্মদ সালাহ। ২০২৪-২৫ মৌসুমে নিজের ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স দিয়ে দলকে এনে দিয়েছেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা।
৩২ বছর বয়সী এই মিসরীয় ফরোয়ার্ড চলতি মৌসুমে এ পর্যন্ত ২৮টি গোল করেছেন এবং সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন ১৮টি গোল—মোট ৪৬টি গোলে অবদান তার। যা এক মৌসুমে (৩৮ ম্যাচের ফরম্যাটে) প্রিমিয়ার লিগের নতুন রেকর্ড।
লিগ শেষ হতে আরো ৪ ম্যাচ থাকায় অ্যান্ড্রু কোল ও অ্যালান শিয়েরারের সর্বোচ্চ ৪৭ গোলে অবদানের রেকর্ডও যে ভাঙতে চলেছে, তা বলাই যায়।
১৮৫টি প্রিমিয়ার লিগ গোল করে সালাহ এখন পঞ্চম সর্বোচ্চ গোলদাতা। বিদেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে তিনিই এখন সবার ওপরে, ছাড়িয়ে গেছেন সার্জিও আগুয়েরোকে (১৮৪)। শীর্ষ দশে আছেন অ্যাসিস্টের তালিকায়ও।
রবিবার টটেনহ্যামের বিপক্ষে ৫-১ গোলের জয়ে লিভারপুল স্পর্শ করেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ২০টি লিগ শিরোপার রেকর্ড। আর সেই জয়ের পেছনে বড় ভূমিকা ছিল সালাহর, যিনি শুধু এই মৌসুমেই নন—গত আট বছর ধরে অ্যানফিল্ডের রাজা হয়ে আছেন এই মিসরীয়।
২০১৭ সালে রোমা থেকে ৩৪ মিলিয়ন পাউন্ডে আসা সেই ‘অবহেলিত’ সালাহ আজ লিভারপুলের কিংবদন্তি। চেলসিতে ব্যর্থ হওয়ার পর ফিওরেন্টিনা ও রোমায় নিজেকে প্রমাণ করে অ্যানফিল্ডে আসেন সালাহ।
মজার বিষয়, সে সময় ক্লপের প্রথম পছন্দ না হয়েও ক্লাবের স্কাউটিং টিমের জেদে দলে জায়গা পান সালাহ। সেই সিদ্ধান্ত যে কতটা সঠিক ছিল, সেটা প্রথম মৌসুমেই বুঝিয়ে দেন সালাহ। ৪৪ গোল করে দলকে নিয়ে যান চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে। এরপর শুরু হয় ট্রফির মিছিল—চ্যাম্পিয়নস লিগ, প্রিমিয়ার লিগ, এফএ কাপ, লিগ কাপসহ আরো অনেক অর্জনে সামনে থেকে ছিলেন তিনি।
২০১৯ সালে টাইম ম্যাগাজিন সালাহকে বিশ্বের ১০০ জন প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় স্থান দেয়।
তারা সালাহকে বর্ণনা করে—‘মিসরীয়, মুসলিম ও স্কাউসারদের কাছে একজন আইকনিক চরিত্র।’
ক্রীড়াক্ষেত্র ছাড়াও সমাজ সচেতনতায় ভূমিকা রেখেছেন সালাহ। নারী অধিকারের পক্ষে কথা বলা হোক কিংবা গাজার জন্য মানবিক সহায়তার আবেদন—সালাহ সব সময় ছিলেন সংবেদনশীল ও সাহসী কণ্ঠ।
তবে সালাহর সবচেয়ে বড় শক্তি ফুটবল মাঠেই। বয়স বাড়লেও তিনি এখনো বিশ্বের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়। এবং লিভারপুলের ইতিহাসে, তিনি ইতিমধ্যে জায়গা করে নিয়েছেন কিংবদন্তিদের কাতারে।